শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ১৪ আগস্ট, ২০১৮, ০৯:৩০ সকাল
আপডেট : ১৪ আগস্ট, ২০১৮, ০৯:৩০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আন্দোলনকারীদের হুমকি আর সরকারের কৌশল

রবিন আকরাম : দাবি মেনে নিতে সরকারকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়েছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীরা। রোববার আন্দোলনকারীদের এই হুমকির পরের দিন সোমবার (১৩ আগস্ট) কোন কোটা না রাখার সুপারিশ প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কোটা পর্যালোচনা কমিটির প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

তিনি বলেছেন, সরকারি চাকরিতে সব ধরনের কোটা তুলে দিয়ে মেধাকে প্রাধান্য দিয়ে সুপারিশ প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হচ্ছে। তবে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে রায় থাকায় এ বিষয়ে আদালাতের শরণাপন্ন হয়ে সরকার পরামর্শ চাইবে বলে জানান তিনি।

সরকারের এরকম কথা ও আন্দোলনকারীদের হুমকির বিষয়ে সিনিয়র সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে বলেছেন, কোটাকে  আদালতে নেয়া সরকারের একটা কৌশল।

তিনি বলেন,  কোটা সংস্কার আন্দোলন বেশ পুরনো। আমি খবরে শুনেছি মন্ত্রীপরিষদ সচিব বলেছেন কোনো কোটা থাকবে না। এবং মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে আদালতের শরণাপন্ন হবেন তারা।

মাহফুজ উল্লাহ বলেন, কোনো কোটা থাকবে না একথা কখনই বলেনি আন্দোলনকারীরা। যদিও অনেকেই বলেছেন প্রধানমন্ত্রী রাগ করে সংসদে বলেছিলেন কোন কোটাই থাকবে না। সেটা রাজনৈতিক বিতর্ক।

‘কিন্তু বিষয় হচ্ছে কোটা আন্দোলনকারীদের হুমকির পর সরকার একটি পদ্ধতিতে গেলেন। যদিও সেটা পুরোনো। সরকার এই বিষয়টিকে সময় ক্ষেপন করার জন্য আদালতের কাছে পাঠিয়ে দিলেন।

‘আপনি যখন আদালতের কাছে পাঠিয়ে দিবেন তখন আদালত কখন এর সিদ্ধান্ত দিবেন আপনি সেটা বলতে পারবেন না। তবে অনুমান করে বলতে পারি আদালতে যাওয়া মানে অনেকটা সময় ধরে চলতে থাকা।

কারন হিসেবে এই সিনিয়র সাংবাদিক বলেন, সম্ভবত ডিসেম্বর মাসে জাতীয় নির্বাচন। এখন কোটা সংস্কারের বিষয়টা যদি আদালতে যায় তখন সরকার কোটা সংস্কার আন্দোলকরীদের কাছে বলতে পারবে তোমরা বিক্ষিপ্ত হয়ো না, আমরা তো আদালতের কাছে গিয়েছি। কাজেই আদালতের রায় পর্যন্ত অপেক্ষা করো। এর মাধ্যমে সরকার সময় ক্ষেপণ করে নির্বাচন পর্যন্ত কোন প্রকার বিক্ষোভ বা আন্দোলন চাচ্ছে না। সে জন্যেই একাজটা করা হয়েছে।

মাহফুজ উল্লাহ বলেন, বিষয়টি যদি আদালতে চলে যায় তাহলে আপনি আর এনিয়ে কথা বলতে পারবেন না। তাহলে এইটা আবার আদালত অবমাননা হয়ে যাবে। তখন নানান রকমের প্রশ্ন সামনে চলে আসবে।

প্রসঙ্গত, ১৩আগস্ট  মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেছেন, কোটা নিয়ে সুপারিশ প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছি। আমরা মেরিটকে (মেধা) প্রাধান্য দিয়ে অলমোস্ট (প্রায়) কোটা উঠিয়ে দেয়ার সুপারিশ করব।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, তবে কোর্টের একটি রায় রয়েছে- মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা সংরক্ষণ করতে হবে। যদি খালি থাকে, তবে খালি রাখতে হবে। এটির ব্যাপারে কোর্টের মতামত চাইব, কোর্ট যদি এটিকেও উঠিয়ে দেয়, তবে কোটা থাকবে না।

‘আর কোর্ট যদি রায় না দেন, ওই অংশটুকু সংরক্ষিত রাখতে হবে। তবে ওই অংশটুকু বাদ দিয়ে বাকি সবটুকু উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। এটি হল প্রাথমিক প্রপজিশন,’ বলেন সচিব।

পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী বিষয়ে শফিউল আলম বলেন, তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছেন, তারাও (পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী) অনেক অগ্রসর হয়েছে। বর্তমানে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত; এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ।

কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশে কমিয়ে আনার দাবিতে কয়েক মাস আগে জোরাল আন্দোলন গড়ে তোলে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’, যা ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে।

আন্দোলনের এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১১ এপ্রিল সংসদে বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতিই আর রাখা হবে না। তবে পরে সংসদে তিনি বলেন, কোটা পদ্ধতি থাকবে। মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ রাখতে হাই কোর্টের রায় আছে।

এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। প্রথমে কমিটিকে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময় দেয়া হয়েছিল। পরে সময় বাড়িয়ে আরও ৯০ কর্মদিবস দেয়া হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়