আসিফুজ্জামান পৃথিল, সান্দ্রা নন্দিনী: তুরষ্কের মুদ্রা সংকটের কারনে সোমবার ব্যপক দরপতন ঘটেছে বৈশ্বিক শেয়ার বাজারে। এই মুদ্রা সংকটের কারণে বিনিয়োগকারীরা অস্থিতিশীল পুঁজিবাজার ছেড়ে তুলনামূলক নিরাপদ বন্ড এবং ডলারের দিকে ঝুঁকছেন।
এমএসজিআই বৈশ্বিক পুঁজিবাজার সুচক বিশ্বের ৪৭টি দেশের পুঁজিবাজারকে অনুসরন করে। সোমবার এই সূচকটি ০.৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। গত শুক্রবার থেকে সূচকটি মোট ১.৬ শতাংশ হ্রাস পেলো। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগানের দেশটির অর্থনীতির উপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা এবং যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক তুরষ্কের উপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের প্রেক্ষিতে লিরার দর পড়তে শুরু করে। শুক্রবার তা রেকর্ড সর্বনিম্ন অবস্থানে পৌঁছায়। অবশ্য আন্তর্র্জাতিক সময় সকাল ৮টায় লিরা হারানো দরের ৭ শতাংশ আবারও ফিরে পায়।
এই বিষয়ে অর্থনীতিবীদ ফিলিপ শ বলেন ‘তুরষ্কের মুদ্রা নীতির কারণেই এই সব সমস্যার সুত্রপাত হয়েছে। এটি অন্যান্য বাজারগুলোর জন্য আশঙ্কার জন্ম দিচ্ছে।’ তিনি উদাহরণ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার রান্ড এবং ম্যাক্সিকান পেসোর কথা বলেন। দুটি মুদ্রাই সোমবার ২.৫ শতাংশ দর হারিয়েছে।
এদিকে লিরার রেকর্ড পরিমাণ দরপতনের সমাধানের মাধ্যমে বাজারকে স্থিতিশীল করার অঙ্গীকার করেছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী বেরাত আলবেরাক। তুর্কি সংবাদপত্র ‘হুরিয়েত’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এসংক্রান্ত বিস্তারিত খুব শিগগিরই প্রকাশ করা হবে।
আলবেরাক বলেন, সোমবার সকাল থেকেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এছাড়া, শেয়ারবাজার চাঙ্গা করতে যাবতীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, তুরস্ক অতিদ্রুত পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। এছাড়া, সরকারের পক্ষ থেকে লিরার দরপতনের কারণে ক্ষতির মুখেপড়া ব্যাংক ও ছোট-মাঝারি ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে প্রণোদনামূলক সহায়তা প্রদানেরও পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে বিশেষজ্ঞদের মতে, তুরস্ক একটি চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়তে যাচ্ছে, এমন আশংকাই লিরার দরপতনের মূল কারণ। বিনিয়োগকারীরা চিন্তিত কেননা, তুর্কি কোম্পানিগুলোকে ডলার ও ইউরোর বিপরীতে বিপুল পরিমাণ ঋণের চাপে পড়তে হবে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার ডলারের বিপরীতে লিরার ২০শতাংশ দরপতন ঘটে। গতবছরের তুলনায় প্রায় ৪০শতাংশ বেশি দরপতন হয়। তুরস্কের ওপর ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামে দ্বিগুণ করারোপ ধার্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণার পরপরই দেশটিতে ভয়াবহ এ দরপতনের ঘটনা ঘটলো। রয়টার্স, বিবিসি
আপনার মতামত লিখুন :