শিরোনাম
◈ সয়াবিনের দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত বিএনপির ◈ কেউ যেন নিরাপত্তাহীনতায় না থাকি, আইনের শাসনে জীবনযাপন করি: ড. ইউনূস ◈ মা, স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে ঢাকা ফিরছিলেন রফিক, পথে প্রাণ গেল সবার ◈ স্থায়ী জামিন না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছি: ড. ইউনূসের আইনজীবী ◈ উপজেলার ভোটে এমপি-মন্ত্রীদের হস্তক্ষেপ না করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ : ওবায়দুল কাদের  ◈ শ্রম আইন লঙ্ঘন: ড. ইউনূসসহ ৪ জনের জামিন ২৩ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি ◈ ময়মনসিংহে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ২৬ ◈ ফরিদপুরে বাস-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত বেড়ে ১৩  ◈ ইরানের হামলার জবাব দেবে ইসরায়েল: সেনাপ্রধান

প্রকাশিত : ১৩ আগস্ট, ২০১৮, ১১:৩৪ দুপুর
আপডেট : ১৩ আগস্ট, ২০১৮, ১১:৩৪ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রৌমারীতে এলাচ চাষে সফল রেজাউল

সৌরভ কুমার ঘোষ, কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের রৌমারীতে মসলা জাতীয় ফসল এলাচ চাষ করে সফল হয়েছেন রেজাউল ইসলাম নামের এক নার্সারীর মালিক। রেজাউলের দাবী দেশের মাটিতে তিনি প্রথম ছোট এলাচ ও বড় এলাচ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। এখন নিজে এই এলাচের চাষের বিস্তৃত ঘটানোর পাশাপাশি তার নিজস্ব নার্সারীতে এলাচের চারা উৎপাদন করে তা ছড়িয়ে দিচ্ছেন পার্শ্ববর্তী কৃষক পরিবারগুলোর মাঝে।

এলাচের প্রতিটি চারা বিক্রি করছেন এক হাজার থেকে ১২শ টাকা পর্যন্ত। বিদেশ থেকে আমদানী করা এই এলাচ চাষে আগ্রহ বাড়ছে রৌমারী উপজেলাবাসীসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলার মানুষের। তবে রেজাউলের ইচ্ছা এই এলাচ চাষ দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে পারলে বিদেশ থেকে আমদানী করা এই মসলা জাতীয় ফসল আর আমদানী করতে হবে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার যাদুর চর ইউনিয়নের চুলিয়ার চর গ্রামের স্বপ্ন জয় নার্সারীর মালিক রেজাউল ইসলাম। ৮ বছর আগে ঢাকায় বিশ্ব ইজতেমায় পরিচয় এলাচ চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়া শ্রীলংকার এক বিদেশী নাগরিকের সাথে। রেজাউলের আগ্রহে পরের বছর ইজতেমায় আসার সময় এলাচের দুটি চারা ও কয়েকটি বীজ নিয়ে আসেন সেই বিদেশী নাগরীক। এরপর থেকে শুরু হয় রেজাউলের স্বপ্ন জয় এলাচ চাষ প্রকল্পের কার্যক্রম।

রেজাউল ইসলামের বাড়িতেই প্রতিষ্ঠিত স্বপ্ন জয় এলাচ চাষ প্রকল্প ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি গাছের গোড়া থেকে মাটি ফেটে ছড়া উপরে উঠে এসেছে। প্রত্যেকটি ছড়ায় পর্যন্ত কাঁচা এলাচ রয়েছে। রেজাউল জানায়, প্রতিটি ছড়া শুকানোর পর সেখান থেকে ৩৫ থেকে ৫০টি পর্যন্ত এলাচ পাওয়া যায়। তিনি জানান, এক শতক জমিতে ১০ থেকে ১৫টি চারা রোপন করে সেখান থেকে এক হাজারেরও বেশি চারা তৈরি হয়েছে। বর্তমানে তার নার্সারী ও বাড়িতে মিলে প্রায় ১ হাজার গাছে ফল এসেছে।

রেজাউলের গ্রামের বাসীন্দা আব্দুল আউয়াল জানান, রেজাউলের নার্সারী থেকে এলাচের চারা কিনে বাড়িতে রোপন করেছেন। গাছ বড় হয়েছে কিন্তু এখনও ফল আসেনি। আশা করছি আগামী বছর ফল আসলে আর বাজার থেকে এলাচ কিনে তরকারী খেতে হবে না।

রৌমারী প্রেস ক্লাবের সভাপতি সুজাউল ইসলাম সুজা জানান, কুড়িগ্রামের রৌমারীতে রেজাউল ইসলামের এলাচ চাষ এখন এ এলাকার একটি আলোচিত বিষয়। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষজন তার স্বপ্ন জয় নার্সারীতে এলাচের আবাদ দেখতে আসছেন চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা আশাবাদি দেশব্যাপী তার এলাচ চাষ ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ সফলতা পাবে।

স্বপ্ন জয় নার্সারী এলাচ চাষ প্রকল্পের মালিক রেজাউল ইসলাম জানান, নিজের আগ্রহ থেকে বিদেশী নাগরিকের কাছে এলাচের চারা ও বীজ এনে রোপন করে প্রথম তিন বছর তিনি কোন সফলতা পাননি। পরে দীর্ঘ সময় ধরে এলাচ গাছের পরিচর্যা করে গত বছর থেকে উৎপাদন শুরু হয়। এতে সারা পড়ে পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে। এখন তার উৎপাদিত এলাচ পারিবারিক চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিক্রী হচ্ছে স্থানীয় বাজারে।

এই এলাচের চাষ ছড়িয়ে দিতে তার নার্সারীতে উৎপাদিত প্রতিটি চারা বিক্রী হচ্ছে এক হাজার থেকে ১২শ টাকায়। নার্সারীর মালিক রেজাউলের এলাচ চারা এখন শোভা পায় সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ঢাকায় জাতীয় পর্যায়ের বৃক্ষ মেলায়।

রেজাউলের স্ত্রী মর্জিনা আক্তার জানান, গত বছর থেকে তাদের আর অন্যান্য মসলার সাথে ছোট এলাচ বা বড় এলাচ কিনতে হচ্ছে না। তাদের নিজের গাছে উৎপাদিত এলাচই তারা অন্যান্য মসলার সাথে তরকারীতে ব্যবহার করছেন। আর নিজেদের প্রয়োজন মেটানোর পর বাকী এলাচ বাজারে বিক্রি করছেন।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো: মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান জানান, আমি রৌমারী উপজেলার রেজাউল ইসলামের স্বপ্ন জয় এলাচ চাষ প্রকল্প সরেজমিনে ঘরে দেখেছি। সে এলাচ চাষে সফলতা দেখিয়েছে। কৃষি বিভাগ তার এলাচ চাষ সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহন করবে।

স্বপ্নজয় নার্সারীর উদ্যোক্তা রেজাউল করিম এলাচ চাষ করে যে সফলতা দেখিয়েছে তা সকলের জন্য অনুকরনীয় হতে পারে। কৃষি বিভাগের প্রয়োজনীয় সহায়তায় এ এলাচ চাষ সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়া গেলে তা মসলা চাষে বিপ্লব ঘটবে বলে মনে করছেন এখানকার মানুষজন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়