শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী 

প্রকাশিত : ১২ আগস্ট, ২০১৮, ১০:৫২ দুপুর
আপডেট : ১২ আগস্ট, ২০১৮, ১০:৫২ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বায়ুশক্তি দিয়ে ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব

শাহীন চৌধুরী : ক্রমেই শেষ হয়ে আসছে জ্বালানি। এজন্য সারা পৃথিবীই এখন ঝুঁকছে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে। আর এক্ষেত্রে বাংলাদেশ একেবারে বসে নেই। ভবিষ্যত চিন্তা করে নবায়ণযোগ্য জ্বালানিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রচেষ্টা এরই মধ্যে সূচনা করা হয়েছে। অতিসম্প্রতি দেশে একটি পূর্ণাঙ্গ উইন্ড ম্যাপিং-এর কাজ শেষ হয়েছে। বিষয়টি বিশ্লেষণ করে বলা হচ্ছে, বায়ুশক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে কমপক্ষে ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। দেশের ৯টি স্থানে ২৪ থেকে ৪৩ মাসের বায়ুপ্রবাহের যে তথ্য সংগ্রহ করা হয়, সেই তথ্য পর্যবেক্ষণ করে আমেরিকার ন্যাশনাল রিনিউয়েবল এনার্জি ল্যাবরেটরি (এনআরইএল) গত মে মাসে সরকারেকে এই রিপোর্ট দিয়েছে।

তাদের পর্যবেক্ষণে এনআরইএল বলেছে, বাংলাদেশের নয়টি এলাকার বাতাসের গড় গতিবেগ প্রতি সেকেন্ডে ৫ থেকে ৬ মিটার। বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য যাকে আদর্শ বলছে মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি। ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সংগ্রহ করা বায়ুপ্রবাহের তথ্য পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত ফল জানানোর দায়িত্ব ছিল এনআরইএলয়ের ওপর। গত জুন মাসে সরকারের উইন্ড ম্যাপিং প্রকল্পর মেয়াদ শেষ হয়েছে।

বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হলে একটি পূর্ণাঙ্গ ম্যাপিং দরকার ছিল। সাধারণত বায়ুর গতি সেকেন্ডে ২ দশমিক ৩ থেকে ২ দশমিক ৫ মিটার হলেই বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে বিদ্যুতের দাম বেশি পড়ে। কিন্তু ৫ থেকে ৬ মিটার বাতাসের গতিবেগ হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন অর্থনৈতিক ভাবে লাভজনক করা যাবে। যেসব আধুনিক প্রযুক্তি এসেছে তাতে এখন ৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ একটি টারবাইন দিয়েই উৎপাদন করা সম্ভব।

পৃথিবীতে যে পরিমাণ জীবাশ্ম জ্বালানি জমা রয়েছে, তা দিয়ে সর্বোচ্চ আরও ১শ’ বছর চলবে। এরপর নতুন জ্বালানিতে অভ্যস্ত হতে হবে। নতুন জ্বালানিতে যাওয়ার আগের এই ১শ’ বছর চলবে অভ্যস্ত হওয়ার প্রক্রিয়া। কী হবে সেই নতুন জ্বালানি?

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মানুষকে প্রকৃতির কাছেই ফিরে যেতে হবে। সবুজ জ্বালানি অর্থাৎ নবায়ণযোগ্য জ্বালানিই হবে আগামী দিনের ভরসা। মানুষকে পানি, সূর্য আর বায়ূর কাছ থেকে শক্তি সঞ্চয় করে চলার পথ আবিস্কার করতে হবে।

গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, বর্তমানে জ্বালানির চাহিদা ও জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বিদ্যমান গতিতে চললে ২০৫০ সাল নাগাদ তেল, ২০৬০ নাগাদ গ্যাস এবং ২০৮৮ সাল নাগাদ কয়লার মজুদ শেষ হয়ে যাবে। ফলে বাধ্য হয়েই জ্বালানির বিকল্প উৎস মানুষকে বের করতে হবে।

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিকল্প উৎস খোঁজার কাজটি হতে হবে আরও দ্রুত। কারণ নতুন মজুদ না পাওয়া গেলে ২০৩০ সালের পর গ্যাস আর থাকবে না। দেশে কয়লাখনির গভীরতা বেশি হওয়ায় অনেক খনি থেকে কয়লা পাওয়া প্রায় অসম্ভব। কোনও তেলের মজুদও দেশে নেই। ফলে বাংলাদেশ এখন আমদানি নির্ভরতার দিকে ঝুঁকে পড়েছে।

২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশের জন্য আমদানি করতে হয়েছে ৬৮ লাখ ৪১ হাজার মেট্রিকটন জ্বালানি তেল। এখন আবার এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। আগামী বছর নাগাদ দেশে অন্তত দৈনিক ১ হাজার ৫শ’ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানি করা হবে। এই আমদানির পরিমাণ দিনে দিনে আরও বাড়বে। তবে বিশ্বের মজুদ ফুরিয়ে গেলে আমদানি করাও বন্ধ হয়ে যাবে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, উন্নত বিশ্ব এখন থেকেই প্রাকৃতিক শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিকে ঝুঁকছে। জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে নবায়ণযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। ক্রমে সৌরশক্তি থেকে এবং বায়ূ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ কমে আসছে। এক্ষেত্রে নতুন উদ্ভাবন-এর মাধ্যমে আরও ব্যয় কমিয়ে আনা সম্ভবপর।
এ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, আমরা এখন এলএনজিকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছি। পাশাপাশি দেশে নতুন গ্যাস অনুসন্ধান এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়েও পর্যবেক্ষন চলছে। ২০৪১ সালের পর তখনকার বিশ্ব পরিস্থিতি অনুযায়ী আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়