শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১২ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০২ দুপুর
আপডেট : ১২ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০২ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নির্বাচন সুষ্ঠু করতে আলোচনা হতে হবে সুনির্দিষ্ট : বিএনপি

ডেস্ক রিপোর্ট : আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ফেইসবুকে দেয়া বক্তব্য অমানবিক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে বিএনপির সুনির্দিষ্ট দাবি আছে। সেসব দাবিকে তো বিবেচনায় নিতে হবে।

এমনি শূন্য হাতে শূন্য টেবিলে আলোচনা হয় না। বিরোধী দল আমরা যে নীতির ওপর, আমরা যে দাবির ওপর আন্দোলন করছি নিশ্চয়ই সেটা আলোচনায় আসতে হবে। আমরা স্বচ্ছ মন নিয়ে আলোচনা চাই। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সরকারকে ‘স্বচ্ছ মন’ নিয়ে আলোচনা করতে হবে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে নির্বাচন দিতে হবে। শর্তছাড়া রাজি হলে বিএনপির সাথে আলোচনা হতে পারে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় গতকাল শনিবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। : রিজভী বলেন, জাতীয়তাবাদের প্রতীক বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দি করে রাখবেন আর নির্বাচনের কথা বলবেন সেটা কিভাবে হয়। নির্বাচনের আগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা এবং নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। কারণ এই কমিশন নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপি সব সময় অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলে আসছে। শুধু অংশগ্রহণমূলক হলেই হবে না, নির্বাচন সুষ্ঠু হতে হবে। যে নির্বাচনে ভোটাররা নির্ভয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। এসব বিষয়ে সমাধান না হলে সেই নির্বাচন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।

বিএনপিও সেই নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে না। : রিজভী বলেন, আমরা মনে করি, সজীব ওয়াজেদ জয়ের বক্তব্য আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের ওপর অকথ্য পুলিশি নির্যাতনকে উৎসাহিত করা। তার এই বক্তব্য খুবই অমানবিক। গ্রেফতারের পর পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন করা হয়েছে বলে শহিদুল ইতিমধ্যে অভিযোগ করেছেন। এ নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে; দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংগঠন ও মানবাধিকারকর্মীরা তাকে মুক্তি দেয়ার আহ্বানও জানিয়ে আসছেন। শহিদুল আলমকে নিয়ে এসব আলোচনার মধ্যে শুক্রবার নিজের ফেইসবুক পাতায় স্ট্যাটাস দেন সজীব ওয়াজেদ জয়। সেখানে লিখেছেন, শুধুমাত্র সফল ও জনপ্রিয় হওয়ার জন্যই কি আজ শহিদুল আলমকে আইনের ঊর্ধ্বে রাখার কথা বলা হচ্ছে? তাহলে কি আমিসহ সকল সফল ও জনপ্রিয় মানুষই আইনের ঊর্ধ্বে? জয়ের বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, কাটছাঁটের পরেও বাংলাদেশের সংবিধানে মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ ও বন্দি অবস্থায় শারীরিক নির্যাতন না করার যে বিধান আছে সেটিকে অগ্রাহ্য করলেন তিনি। পুলিশ হেফাজতে শারীরিক নির্যাতনের পক্ষে কথা বলে সংবিধান ও উচ্চ আদালতের রায়কে অবজ্ঞা করলেন জয় সাহেব। উচ্চ আদালতেও এই ব্যাপারে নির্দেশনা আছে। প্রশ্ন রেখে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, একদিকে শহিদুল আলমের মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন আলোকচিত্রীদের রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে। অপরদিকে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ছাত্রলীগ-যুবলীগ-শ্রমিক লীগের সশস্ত্র হামলার দৃশ্য ধারণ করতে গিয়ে হামলায় ক্ষত-বিক্ষত হয়েছেন সাংবাদিকরা। এখনো কেন সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারী চিহ্নিত ছাত্রলীগ-যুবলীগ-শ্রমিক লীগের সন্ত্রাসীরা গ্রেফতার হল না তার জবাব কি সজীব ওয়াজেদ জয় সাহেব দেবেন? শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের ওপর চিহ্নিত হামলাকারীরা আইনের ঊর্ধ্বে না নিচে বাস করেন তা জানাবেন কি তিনি? : তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই ধারা প্রয়োগ করে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে টুঁটি চেপে ধরা হয়েছে। লেখক, বুদ্ধিজীবী, কলামিস্ট, রাইটস গ্রুপ, মুক্ত চিন্তার মানুষের মাথার ওপরে ৫৭ ধারার তরবারি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এই কালো আইনের ৫৭ ধারার নির্মম প্রয়োগে ক্ষত-বিক্ষত করা হয়েছে আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে।

নির্দয় উৎপীড়নের রক্তে ভিজে গেছে তার পরিধেয় বস্ত্র। প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা দেশবাসীকে জানাবেন কি কতটুকু আইনের ঊর্ধ্বে উঠলে একজন খ্যাতিমান মানুষ পুলিশি শারীরিক নির্যাতন থেকে রেহাই পান বা পান না? : পরিবহনের নৈরাজ্য এখনো যায়নি দাবি করে রিজভী বলেন, আন্দোলন দমানোর নামে শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার ও রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন বেপরোয়া চালকদের আরও বেশি বেপরোয়া করেছে। সড়কে নৈরাজ্য ও ভোগান্তি আরও বেড়েছে। কারণ পরিবহন সেক্টরে হঠকারী ও অবিমৃশ্যকারিতার জনক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান। এখনো নির্লজ্জ দাপট তিনি দেখিয়ে যাচ্ছেন। সড়কে নৈরাজ্যের জন্য দায়ী সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়। টাকার বিনিময় লাইসেন্স দেয়া, আনফিট গাড়িকে ছাড়পত্র দেয়া, রাস্তাঘাটের ভয়াবহ দুর্দশা, রাস্তা মেরামতে লুটপাটের কাজ না হওয়া ইত্যাদি সর্বব্যাপী দুর্নীতির জন্য দায়ী সেতু মন্ত্রণালয় ও সরকার। সড়কের অবস্থাপনার জন্যে ঈদে ঘরমুখো মানুষ ছুটছে ট্রেনে। সেতুমন্ত্রী যদি সফলই হতেন তাহলে মানুষ ট্রেনের দিকে ঝুঁকছে কেন? সড়ক ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থ মন্ত্রীর নাম ওবায়দুল কাদের। পরিবহন সেক্টরের সকল দুষ্কর্মকে বৈধতা দানের ফেরিওয়ালা হচ্ছেন তিনি। : রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সরকারের মন্ত্রী, আমলা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে যৌক্তিক বলে মেনে নিয়ে এখন তাদের ওপর চালানো হচ্ছে বর্বরোচিত নিষ্ঠুর জুলুম। সরকার প্রধান এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেছেন তাদের আন্দোলন শিক্ষণীয়।

এখন কেন গ্রেফতার করে রিমান্ডের নামে নিষ্ঠুর নির্যাতন চালানো হচ্ছে? শিক্ষার্থী ও স্বজনদের কান্নায় আদালত পাড়াসহ বাংলাদেশের আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। কচি শিশু কিশোরদের আর্তনাদে দেশে বিদেশে মানুষরা বিচলিত ও বেদনার্ত। শিক্ষার্থীদের রক্ত দেখে বিপন্ন মানবতা দীর্ঘশ্বাস ফেলছে। ঢাকাসহ অন্যান্য শহড়ে শত শত মিথ্যা মামলা দায়ের করে শিক্ষার্থীদের আতঙ্কের মাঝে রাখা হয়েছে। আন্দোলনে ভয় পেয়ে সরকারের মনে প্রতিশোধের ধিকিধিকি আগুন জ্বলছিল সেটির বহিঃপ্রকাশ দেখা গেল শিশু-কিশোরদের ওপর নামিয়ে আনা পৈশাচিক অত্যাচারে। তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বাণী ভাস্বর ও বাঙময়। শিশু-কিশোরদের বক্তব্যে ছিল না কোন অস্পষ্টতা বা দ্ব্যর্থক শব্দের প্রয়োগ। তারা উচ্চস্বরে ন্যায্য কথাই সবাইকে বলেছে। তারা বিবেক জাগানিয়া জনগণের স্বর্ণালীবাহিনী। এরা খাঁচায় পরা তোতা পাখি নয়। তারা জাতির কাছে খাঁটি সত্য উন্মোচিত করেছে। এরা আমাদের প্রেরণার উড্ডীন পতাকা। : মীরসরাইয়ে গণতান্ত্রিক শক্তিকে দমন করার জন্য তিনটি মিথ্যা ও সাজানো মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় অংখ্য নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। কয়েকশ অজ্ঞাত রাখা হয়েছে। আমি এ মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান রিজভী। : সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-দফতর সম্পাদক মো. মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, শামসুজ্জামান সুরুজ প্রমুখ। সূত্র : দিনকাল

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়