শিরোনাম
◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দুঃখজনক: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল ◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন ◈ আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ৮ মে

প্রকাশিত : ১২ আগস্ট, ২০১৮, ০৫:১১ সকাল
আপডেট : ১২ আগস্ট, ২০১৮, ০৫:১১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আল জাজিরাতে দেয়া ফটোগ্রাফার শহিদুল আলমের ইন্টারভিউ

জাফর ওয়াজেদ : আল জাজিরা: এই আন্দোলন তো শুরু হয়েছে দুটো স্কুলছাত্রকে সড়ক দুর্ঘটনায় হত্যার মধ্য দিয়ে। আপনি কী মনে করেন আন্দোলন টা কেবল নিরাপদ সড়ক নিয়েই, না এরচেয়েও অনেক বড় কিছু?

শহীদুল:- অনেক বেশি বড়, সরকারের হঠকারিতা চলে আসছে অনেক অনেক সময় ধরে। এই সরকার গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতায় নেই, তবু টিকে আছে কেবল শক্তির অপব্যবহার করে। ব্যাংক ডাকাতি, মিডিয়া ব্ল্যাক আউট, ক্রসফায়ারে হত্যা, গুম, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, সর্বক্ষেত্রে ঘুষপ্রথা, শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি, এটা একটা তালিকা যার শেষ নেই। তুমি মাত্রই নিজে বললে মোবাইল নেটওয়ার্ক এর কথা। তাহলেই দেখো।

এটা সেই সমস্ত চেপে রাখা ক্ষোভের একটা সম্মিলিত বহি:প্রকাশ। এই সড়ক দুর্ঘটনা দুঃখজনক বটেই, কেবল এই জমে থাকা ফুলকি তে আগুন জ্বেলেছে। এই কিছুদিন আগেই আমাদের কোটা প্রথা নিয়ে আন্দোলন হল। কেননা, প্রথাটি এমনভাবে তৈরি করা যেন সরকারের পা চাটা কাছের লোকেরাই সরকারি চাকরি ও সুযোগ সুবিধাগুলো পায়। একটা অন্যায়সম অনুপাতের চাকরি তারাই পাচ্ছে এই ব্যবস্থায়। তাই, সাধারণ মানুষ আন্দোলন করেছে যেটা নৃশংসভাবে দমানো হয়েছে। চাপে পড়ে প্রধানমন্ত্রী এর সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েও পরে কথা ফিরিয়ে নেন। এটাও একটা কারণ, এত বিশালাকায় আন্দোলনের। তাই, সব মিলিয়েই ছাত্ররা আন্দোলনে নেমেছে। একইভাবে, সরকার পরিস্থিতি সামলাতে পারেনি এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি পেয়েও স্বাভাবিকভাবেই কেউ তা বিশ্বাস করেনি। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের সমর্থনযোগ্যতা খুইয়েছেন নিজেই। কেননা, আগেও প্রতিশ্রুতি দিয়ে না রাখার দৃষ্টান্ত তিনি দেখিয়েছেন। কিন্তু আমার মনে হয় আমাদের আজকে রাস্তায় যা হয়েছে তার দিকে ভালোমত দৃষ্টিনিপাত করা।

কেননা, আমাদের পুলিশ ফোর্স অস্ত্রসজ্জিত বেনামী বাহিনীর সহায়তা চেয়ে নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়েছে। অথচ শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে নিরাপদ সড়কের আন্দোলন করছিলো। চিন্তা করো, কী হাস্যকর! আজকে, আমি রাস্তায় স্বচক্ষে চাপাতি হাতে নিরস্ত্র ছাত্রদের ধাওয়া দিতে দেখেছি। অথচ পুলিশ কেবল তাকিয়ে দেখছিল। কিছু ক্ষেত্রে, পুলিশ সেই বাহিনীকে সহায়তাও করছিল। আজ সকালেই, টিয়ার গ্যাস দিয়ে পুলিশ নিরস্ত্র ছাত্রদের ধরার চেষ্টা করেছে। পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী লাঠি, রড ও চাপাতি নিয়ে ঘোরাঘুরি করেছে। আর পুলিশ তাদের পাশেই কেবল দাঁড়িয়ে আছে। আল জাজিরা: আপনার কী মনে হয়? আন্দোলন এখান থেকে কোথায় যাবে? কারণ দেখা যাচ্ছে এই আন্দোলন সারা দেশেই ছড়িয়েছে, কোনো ধরনের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ছাড়াই। এটা সরকারের একটা চ্যালেঞ্জও বটে। কেননা, বাংলাদেশের গহীন শেকড়েও এই আন্দোলনের বীজ দেখা যাচ্ছে।

শহীদুল: আমার মনে হয়, সরকার এই ক্ষেত্রে হিসেবে ভুল করেছে। তারা ভেবেছিলো, সবাইকে ভয় দেখাতে পারলেই হবে, দমিয়ে রাখলেই চলবে, কিন্তু আমার মনে হয় না এমন দামাল একটা দেশ কে এভাবে দমিয়ে রাখা সম্ভব। এবং অবশ্যই, সামনেই নির্বাচন আসছে। তাই, তারা যত কাছাকাছি যাবে নির্বাচনের, তত বেশি বেপরোয়া আচরণ করবে। কারণ, তারা জানে একটা সুষ্ঠু মুক্ত নির্বাচনে তারা হারবে। অথচ তাদের কোনো পালাবার পথ নেই। কেননা, তারা এতকাল ধরে নোংরা নেতৃত্ব দিয়ে আসছে যে, যদি তারা হারে, তাদেরকে সবাই ছিঁড়েখুঁড়ে ফেলবে। অর্থাৎ, তাদের টিকে থাকতেই হবে। এবং তারা ঠিক সেটাই করছে। তারা সিস্টেমের ক্ষমতা আর নিজস্ব বেপরোয়া গুন্ডাদের সহায়তায় নিজেদের কোনোমতে টিকিয়ে রেখেছে যেকোনো মূল্যে।

অনুবাদক: সিনিয়র সাংবাদিক/ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়