ড. আহমদ আল কবির : ব্যাংকগুলো আধুনিকায়নের পাশাপাশি বেশকিছু নতুন চ্যালেঞ্জেরও সূচনা হয়েছে। এর মধ্যে একটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, পুরনো কর্মকর্তা-কর্মচারী, যারা তথ্যপ্রযুক্তিতে তেমন একটা দক্ষ নন, তাদের সঙ্গে নতুন ও আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানে সমৃদ্ধ কর্মকর্তাদের এক ধরণের দ্বন্দ্বের সূচনা হয়েছে। অবশ্য পুরনোদের মধ্যে অনেকেই আছেন, যারা নতুন তথ্যপ্রযুক্তিকে মেনে নিয়েছেন এবং নিজেদের এরই মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ করে নিয়েছেন। তারা এ অর্জিত জ্ঞান তাদের প্রাত্যহিক কাজে ব্যবহার করার চেষ্টা করছেন। কোনো কোনো ব্যাংক এ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। আবার কোনো কোন ব্যাংক পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে। যারা আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে তাল মেলাতে পারছেন, তারা ভালো করছেন।
সক্ষমতার দিক দিয়েও ব্যাংকগুলোর মধ্যে এক ধরনের গ্যাপ তৈরি হয়েছে। এ গ্যাপ কমিয়ে আনার দিকে দৃষ্টি দেওয়ার সময় এসেছে। আরও একটি বিষয় ঘটেছে, তা হলো আগে ব্যাংকিং সেক্টরের তথ্য-উপাত্ত লুকিয়ে রাখার সুযোগ ছিল। আগে ব্যাংকের কাজের পরিধি ছোট ছিল। কিন্তু ব্যাংকগুলো চাইলেই যেকোনো তথ্য-উপাত্ত লুকিয়ে রাখতে পারত। এখন ব্যাংকের কাজের পরিধি এবং ভলিউম অনেক বেড়েছে। কিন্তু তথ্য-উপাত্ত লুকিয়ে রাখার সুযোগ নেই বললেই চলে। ব্যাংকের ঋণখেলাপি বা ক্লাসিফিকেশনের হার লুকিয়ে রাখার সুযোগ ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। এর ফলে অনিয়মগুলোও খুব সহজে উন্মোচন করা সম্ভব হচ্ছে। হলমার্ক, বিসমিল্লাহসহ সকল কেলেঙ্কারি- এগুলো কিন্তু বাইরের কেউ এসে খোঁজে বের করেনি; সংশ্লিষ্ট ব্যাংক নিজেরাই এসব অনিয়ম খোঁজে বের করছে। মনিটরিং সিস্টেমে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে বলেই বাংলাদেশ ব্যাংক বা ব্যাংকগুলোর নিজস্ব অডিটে এগুলো উন্মোচিত হয়েছে। এখন ব্যাংকিং সেক্টরের যেকোনো অনিয়ম-দুর্নীতি খুব সহজে উদ্ঘাটন করা সম্ভব। ফলে অপরাধীদের চিহ্নিত করা বেশ সহজ হয়েছে। এ অবস্থা থেকে ইতিবাচক ধারায় উত্তরণের লক্ষ্যে ব্যাংকিং সেক্টরে কিছু মৌলিক পরিবর্তন এখন সময়ের দাবি।
লেখক : সাবেক চেয়ারম্যান, রুপালী ব্যাংক
আপনার মতামত লিখুন :