সান্দ্রা নন্দিনী: বছরের পর বছর ধরে নারী ও শিশুদের ওপর আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থায় কর্মরতদের দ্বারা যৌন নিপীড়নের ঘটনা রীতিমত ‘মহামারি’ আকার ধারণ করেছে। ভয়াবহ এ চিত্রটি ফুটে উঠেছে যুক্তরাজ্য সরকারের এক প্রতিবেদনে। মঙ্গলবার হাউজ অব কমনস ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কমিটি’র তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনটিতে যৌন নির্যাতনের ‘লোমহর্ষক’ সব গল্প বেরিয়ে এসেছে। যেখানে দেখা গেছে, সাহায্য করার নামে বহু অসহায় নারী ও শিশুদের যৌন নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে। এরমধ্যে হাইতির এক গৃহহীন বালিকার কথা লিপিবদ্ধ হয়েছে, যাকে ২০১০ সালে ১ডলার সহায়তার বিনিময়ে একটি বেসরকারি সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান অক্সফাম’র এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা দ্বারা ধর্ষিত হতে হয়েছিলো।
অক্সফাম ও সেইভ দ্য চিলড্রেনসহ বেশকয়েকটি শীর্ষ আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে এবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠার প্রেক্ষিতে প্রতিবেদনটি প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, বহুবছর ধরে চলা এধরনের ঘটনাগুলোর সমাধানে সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপই নেওয়া হয়নি।
সংবাদমাধ্যম সিএনএন’কে কমিটি প্রধান এমপি স্টিফেন টুইগ বলেন, কমপক্ষে ১৭বছরের বিশাল সময় ধরে চলা নানা ব্যর্থতার চিত্র প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। সহায়তাকারী সংস্থাগুলো তাদের সুনাম ধরে রাখতে বিভিন্ন সময়ে ঘটা ঘটনাগুলো ধামাচাপা দেওয়ারও চেষ্টা করেছে।
প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, ২০০১ সালে জাতিসংঘ-সহ অন্যান্য সহায়তাকারী সংস্থার কর্মীরা লাইবেরিয়া, ঘানা ও সিরিয়া লিয়নের শরণার্থী শিবিরে থাকা ১৩ থেকে ১৮বছরের মেয়েদের ওপর যৌন নিপীড়ন চালিয়েছে। এরফলে, অনেক মেয়ে গর্ভবতীও হয়ে পড়েন। এছাড়া, সেসময় এইডস-সহ নানান যৌনবাহিত রোগেও আক্রান্ত হয়েছেন নির্যাতিত নারীরা।
এদিকে, অক্সফাম সভাপতি ট্রাস্টিস ক্যারোলিন থমসন সিএনএন’কে জানান, ‘অক্সফামের জন্য প্রকাশিত প্রতিবেদনটি পড়া অত্যন্ত বেদনাদায়ক। হাইতির ঘটনাটি সত্য এবং আমরা সেসময় তা সমাধানে ব্যর্থ হলেও ২০১১ সাল থেকে নিজেদের উন্নয়নে কাজ করে চলেছি। তবে, নিশ্চই আমাদের আরও অনেকদূর পথ পাড়ি দিতে হবে।’ সিএনএন
আপনার মতামত লিখুন :