মুহাম্মদ নাঈম : ঋণ যারা নিচ্ছে তারা টের পেয়ে গেছে যে ঋণ পরিশোধ না করলেও কোন ক্ষতি নাই। কারণ, রাজনীতিতে প্রভাব খাটিয়ে তারা ঐ ঋণকে রিশিডিউল করে নিতে পারে। কাজেই ব্যাংকের পরিচালনা ব্যয়ের চেয়েও ব্যাংকের প্রধান সমস্যা ঋণ খেলাপি বলে মনে করি। বাংলাদেশের ব্যাংক নিয়ে আলাপকালে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এম এম আকাশ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ব্যবসায়িরা ঋণ নিচ্ছে আবার ব্যাংকও ঋণ দিচ্ছে এবং রিশিডিউল করে দিচ্ছে। এতে সমস্ত আউটসাইডিং লোনের প্রায় ১০ শতাংশ এখন বাংলাদেশে খেলাপি ঋণে পরিণত হচ্ছে। কিন্তু ভারতে বা নেপালে হলো ৩ থেকে ৫ শতাংশ। সুতরাং এই যে বিশাল পরিমাণ ঋণ খেলাপি এটাই আসল সমস্যা। আর পরিচালনা ব্যয় বেশি তার জন্য মুনাফা কম, সেটা অন্যের টাকায় মুনাফা করছে, নিজের টাকায় নয়। ওখানে সাধারণত স্প্রেডটা কম। ব্যাংকের মুনাফা সাধারণত নির্ভর করে ল্যান্ডিং রেট ও ডিপোজিট রেটের উপর। তাদের নিজেদের তো কোন ইনভেস্টমেন্ট নাই। তারা টাকা সংগ্রহ করছে অন্যকে একটা ডিপোজিট রেট দিয়ে। টাকাটা খাটাচ্ছে একটা উচ্চ ল্যান্ডিং রেট দিয়ে। এটা নিয়েতো বহু অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি প্রাইভেট ব্যাংকারদের এসোসিয়েশন নিজেরাই প্রশ্রিুতি দিয়েছে যে, ল্যান্ডিং রেট ও ডিপোজিট রেট হবে ওয়ান ডিজিট ৯ শতাংশ থেকে ৬ শতাংশ, সেটাতো মানছে না। এটা বাস্তবায়ন করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোন আইন প্রনয়ণ করে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ল্যান্ডিং রেট ও ডিপোজিট রেট ওয়ান ডিজিটের নিচে নামিয়ে এনে, খেলাপি ঋণের শতাংশ মোট ঋণের ১০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে হবে। এটা করা যাচ্ছে না, এটাই প্রধান সমস্যা। অসৎ ব্যবসায়ি এবং অসৎ আমলাদের একটা ঐক্য। এটা না ভাঙা পর্যন্ত ব্যাংকের এ সমস্যা ঠিক করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, যেগুলো কমার্শিয়াল ব্যাংক সেগুলোর ক্ষেত্রে দেখতে হবে মুনাফা করছে, নাকি করছে না। মুনাফাটা নির্ভর করে পলিসির উপর। কত হারে ল্যান্ডিং ও ডিপোজিট রেট দিচ্ছে তা দেখতে হবে। ব্যাংক অযৌক্তিক ব্যয়ভার বহন করার জন্য যদি ল্যান্ডিং রেট বাড়িয়ে দেয় সেটা অন্যায়। তবে ৯ ও ৬-এ নামলে তাদের মুনাফা ৩ শতাংশের বেশি হবে। এটাইতো আমরা চাচ্ছি। আমরাতো আর মুনাফা পেতে চাচ্ছি না। সুতরাং মুনাফা করছে নাকি করছে না সেটাই প্রধান ইস্যু।
আপনার মতামত লিখুন :