শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত

প্রকাশিত : ৩১ জুলাই, ২০১৮, ০৮:৩০ সকাল
আপডেট : ৩১ জুলাই, ২০১৮, ০৮:৩০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যার যায় সে-ই বোঝে ক্ষতিটা কেমন!

রেজানুর রহমান : রেজানুর রহমানযার যায় সে-ই বোঝে ক্ষতিটা কেমন? মাননীয় নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের একটি বক্তব্য পড়ে কথাটা কেন যেন বারবার মনের ভিতর ঘুরপাক খাচ্ছে। ২৯ জুলাই বিমানবন্দর সড়কে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অব্যাহতভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির প্রেক্ষিতে এক প্রশ্নের জবাবে নৌপরিবহন মন্ত্রী বলেছেন, যে অপরাধ করবে তাকে শাস্তি পেতেই হবে। এ নিয়ে বিরোধিতা করার কোনও সুযোগ নেই। মাননীয় মন্ত্রীর এই কথা শুনে মনটা আনন্দে ভরে গেল। কিন্তু পরক্ষণেই মন্ত্রীর অন্য একটি কথায় বিস্মিত হলাম। ভারতের মহারাষ্ট্রে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩০ জনের মৃত্যুর ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ভারতে এতো মানুষ মারা গেল; অথচ এনিয়ে কোনও হইচই নেই। অথচ বাংলাদেশে সামান্য ঘটনা ঘটলেই হইচই শুরু হয়ে যায়।
মন্ত্রীর বরাত দিয়ে বাংলা ট্রিবিউনসহ দেশের সকল পত্রিকা ও প্রচার মাধ্যমে এতদসংক্রান্ত খবরটি প্রকাশ হয়েছে। একবার নয় কয়েকবার খবরটি পড়েছি। যতবারই পড়ি ততবারই অবাক হই। মাননীয় মন্ত্রী এই কথার মাধ্যমে কি বুঝাতে চেয়েছেন? সড়ক দুর্ঘটনায় একজনের মৃত্যু তাহলে কোনও ঘটনা না? চট্টগ্রাম থেকে একটি বাসে করে আসা মেধাবী তরুণ পায়েলকে রাতের অন্ধকারে হত্যা করেছে একদল পরিবহনকর্মী। প্রচার মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তিমূলক বর্ণনা শুনে আমার এক আত্মীয়া এমন ভয় পেয়েছেন, তার সন্তানেরা বাসার বাইরে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার কথা বললেই অস্থির হয়ে যান। নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী পায়েলের হত্যাকাণ্ড দেশের পরিবহন ব্যবস্থাকে নতুন করে প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। উজ্জ্বল উচ্ছ্ল একজন তরুণ রাতের একটি বাসে উঠল। তাকে নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়াই তো ওই বাসটির কর্মীদের মূল দায়িত্ব হওয়া উচিত। অথচ তারাই তাকে হত্যা করলো। যে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা শুনে পাষাণ হৃদয়ের মানুষও ভয়ে আঁতকে উঠেছে। এ ধরনের উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা কোথায় সান্ত্বনার বাণী শোনাবেন; অথচ তা না করে যখন কেউ মৃত্যুকে সংখ্যাতত্ত্বে বিশ্লেষণ করতে চান তখনই সুস্থ মানুষের বুকের ভেতরও কষ্টের দাপাদাপি শুরু হয়।

একবার ভাবুন তো চিত্রটা। রাতের অন্ধকারে দূরপাল্লার একটি বাস ভয়াবহ যানজটে রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে আছে। এমনই অস্থির সময়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য আমাদের আদরের সন্তান পায়েল বাস থেকে নেমে পড়ে। একসময় যানজট একটু হালকা হতেই বাসটি গন্তব্যে যাওয়ার জন্য ছুটতে শুরু করে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে বাস থেকে নেমে যাওয়া একজন যাত্রী আশা করতেই পারে যে তাকে ফেলে রেখে বাসটি শেষ পর্যন্ত চলে যাবে না। কিন্তু ওই বাসটি আমাদের পায়েলকে ফেলে রেখেই ঢাকার উদ্দেশে ছুটে আসছিল। আর আমাদের পায়েল যতটা শক্তিতে পারা যায় ততটাই শক্তি প্রয়োগ করে বাসের পিছনে দৌড়ে আসছিল। এমন পরিস্থিতিতে বাসটির দাঁড়িয়ে যাওয়ার কথা। অথচ বাসটি নাকি দাঁড়ায়নি। আর তাই চলন্ত বাসে উঠতে গিয়ে মাথায়, শরীরে মারাত্মক আঘাত পায় পায়েল। তারপরই ঘটে নির্দয় নিষ্ঠুরতম সেই ঘটনা। পায়েলের মৃত্যু হয়েছে ভেবে বাসের চালকসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরাই পায়েলকে একটি ব্রিজ থেকে নদীতে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। উহ! কী নিষ্ঠুর! কী বীভৎস ঘটনা। রক্তমাংসের মানুষ কি এই ধরনের নিষ্ঠুরতম ঘটনা ঘটাতে পারে?

পরিবহন শ্রমিক কর্তৃক পায়েলের এই নির্দয় নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের পর অনেকেই ধারণা করেছিলেন এবার হয়তো পরিবহন সেক্টরে যাত্রীবান্ধব একটা উদ্যোগ শুরু হবে। সবাই একটু নড়েচড়ে বসবেন। কিন্তু কার্যত তেমন কোনো উদ্যোগই চোখে পড়লো না। বরং পায়েল হত্যাকাণ্ডের দু’দিন পরই রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের অদূরে বিমানবন্দর সড়কে চলন্ত বাসের চাপায় দুই কলেজ ছাত্রছাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বিভিন্ন দৈনিকের শিরোনাম পড়লেই বোঝা যাবে ঘটনাটা কতটা নিষ্ঠুর। প্রথম আলো লিখেছে, দুই চালকের রেষারেষি, শিক্ষার্থীদের ওপর বাস। ছবিতে কাঁদছে স্বজনেরা। কালের কণ্ঠ লিখেছে, দুই বাসের পাল্লায় এবার পিষ্ট দুই শিক্ষার্থী। এই পত্রিকার ছবিতেও কাঁদছেন স্বজনেরা। মানবজমিন লিখেছে, দুই শিক্ষার্থীকে পিষে মারলো বেপরোয়া বাস। নারকীয় এই সড়ক দুর্ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে বাংলাদেশের সড়ক ব্যবস্থায় আদৌ কি কোনও দিন শৃঙ্খলা ফিরে আসবে না? দিনের পর দিন অব্যাহতভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষের মৃত্যু হতেই থাকবে?

আবারও বলি, যার যায় সেই বোঝে তার ক্ষতিটা কেমন। এই যে প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় অসহায় মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, তাদের পরিবারগুলোর কথা ভাবুন তো একবার। একটি সড়ক দুর্ঘটনা মানেই একাধিক পরিবারের কান্না। কেউ কেউ আছেন যিনি পরিবারের প্রধান কর্মক্ষম ব্যক্তি। তার আয়েই সংসারের আর পাঁচটা মানুষের জীবন চলে। হঠাৎ শোনা গেল সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মারা গেছেন। ভাবুন একবার, ওই পরিবারটির কি হবে। কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেই লাশ সৎকার অর্থাৎ লাশ দাফনের জন্য আর্থিক সহযোগিতার কথা শোনা যায়। লাশপ্রতি ২০ হাজার অথবা ২৫ হাজার টাকা দেন হয়তো এলাকার কোনও জনপ্রতিনিধি অথবা স্থানীয় প্রশাসন। ব্যস, ওই পর্যন্ত শেষ। আর কেউ অসহায় পরিবারগুলোর খোঁজও নেন না।

ভাবতে অবাক লাগে একটি দেশে অব্যাহত গতিতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। অথচ এক্ষেত্রে প্রতিকার অথবা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের সমন্বিত কোনও উদ্যোগ নেই। বরং সড়ক দুর্ঘটনার রং পাল্টাচ্ছে। একটা ঘটনা অন্যটাকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। রাজধানীতে দুই বাসের মাঝখানে চাপা পড়ে হাত হারানো রাজিবের মৃত্যুর ঘটনা ব্যাপক আলোচিত হয়েছিল। পত্রিকায় দুই বাসের মাঝখানে থেঁতলে যাওয়া রাজিবের হাতটির ছবি দেখে অনেকে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। এর রেশ কাটতে না কাটতেই আমাদের এই রাজধানীতেই এক অসহায় তরুণের ওপর দিয়ে বাস চলে যাওয়ার নির্মম ঘটনার সাক্ষী হয়েছি আমরা। আর অতি সম্প্রতি পায়েলের নির্মম নিষ্ঠুর মৃত্যুর ঘটনা আতঙ্ক ছড়িয়েছে সারাদেশে। প্রশ্ন উঠেছে, সড়ক দুর্ঘটনাকে কি আমরা স্বাভাবিক অন্য ঘটনার মতোই ধরে নিচ্ছি? কুকুর শিয়াল অথবা অন্য কোনও পশুর বাস চাপা পড়ে মৃত্যু হলে যেমন কারও কোনও দায় থাকে না, মানুষের মৃত্যুটাও কি সেরকম? এই প্রশ্নগুলো কাকে করবো? দেশের সড়ক ব্যবস্থায় সুনির্দিষ্ট আইন আছে। কোন সড়কে কোন গতিতে গাড়ি চলবে, গাড়ি চালাতে হলে চালকের কি যোগ্যতা থাকা দরকার, যে গাড়িটি রাস্তায় চলাচল করবে তার ফিটনেস আছে কিনা, এরকম অনেক নিয়ম পালনের কথা বলা আছে সড়ক ব্যবস্থায়। কিন্তু কার্যত পরিবহন ব্যবস্থার অনেক নিয়ম-কানুনই মানা হয় না। এখানে ‘জোর যার মুল্লুক তার’। দেশের পরিবহন ব্যবস্থায় যারা জড়িত তারা বেশ ক্ষমতাধর। কাজেই অনেকেই নিয়ম-কানুনের ধার ধারেন না। নিজেরা যা করেন তাকেই নিয়ম হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। নিয়ম আছে ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চরবে না। নিয়ম আছে সরকারের নির্ধারিত সংস্থা কর্তৃক লাইসেন্সপ্রাপ্ত দক্ষ চালক দ্বারা গাড়ি চালাতে হবে। এই নিয়মও উপেক্ষিত। শুধু শহরে নয়, শহরের বাইরেও অধিক দূরত্বে গাড়ির হেলপার ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি চালাচ্ছে। এমন না যে এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ কিছুই জানেন না। তারা সবই জানেন। কিন্তু জেনেও না জানার ভান করেন। কারণ, এটাও নাকি পরিবহন ব্যবস্থার সংস্কৃতি। চাঁদা নামের এই সংস্কৃতিই নাকি পরিবহন ব্যবস্থার নির্ধারিত নিয়ম-কানুন মানতে বাধ্য করে না। তার একটা ছোট উদাহরণ তুলে ধরি। ঢাকার বাইরে বাসে করে উত্তরবঙ্গের একটি জেলা শহরে যাচ্ছি। রাস্তায় প্রচণ্ড ট্রাফিক জ্যাম। হঠাৎ আমাদের বাসের ড্রাইভার নিয়ম ভঙ্গ করে উল্টো পথে গাড়ি নিয়ে ছুটলো। একটু দূরে যেতেই একজন ট্রাফিক পুলিশ গাড়ির গতিপথ রোধ করে দাঁড়ালেন। ড্রাইভার তার সাথে হাত মিলাতেই শান্ত হয়ে গাড়ি ছেড়ে দিলেন। এভাবে একাধিকবার হয় ট্রাফিক পুলিশ অথবা দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্যান্য কর্মকর্তার সাথে হাত মিলিয়ে অবৈধ প্রক্রিয়ায় আমাদের গাড়িটি অবশেষে যানজট মুক্ত হলো। পরে শুনলাম ড্রাইভার যতবারই ট্রাফিক পুলিশ অথবা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে হাত মিলিয়েছে ততবারই ‘বকশিশ’ দিয়েছে। বকশিশ জাদুমন্ত্রে অনিয়ম নিয়মে পরিণত হয়েছে।

বলা যায় এই বকশিশ বাণিজ্যই পরিবহন সেক্টরকে অস্থির করে তুলেছে। কয়েকদিন আগে সোনারগাঁও মোড় থেকে একটি বাসে চড়ে প্রেসক্লাবের দিকে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখলাম রাস্তা ফাঁকা পেয়ে আমাদের বাসটি অন্য একটি বাসের সাথে দৌড়ের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। আমাদের বাসে যাত্রীদের অনেকে ড্রাইভারকে গাড়ি আস্তে চালানোর অনুরোধ করার পরও সে শুনলো না। বরং গাড়ির গতি আরও বাড়িয়ে দিল। বাংলামোটর মোড়ে হঠাৎ ট্রাফিক পুলিশ আমাদের গাড়িটিকে থামালো। গাড়ি থামিয়ে গাড়ির কাগজপত্র নিয়ে ড্রাইভার বাস থেকে নেমে গেল। বাসের জানালা দিয়ে দেখলাম ট্রাফিক পুলিশের সাথে ড্রাইভারের মতবিনিময় চলছে। একপর্যায়ে ড্রাইভার সাহেব প্রকাশ্যেই ট্রাফিক পুলিশের হাতে কিছু টাকা তুলে দিলো এবং বীরদর্পে গাড়িতে উঠে এসে ড্রাইভিং সিটে বসেই এমনভাবে গাড়িটি টান দিলো, আমরা যাত্রীরা ভয়ে অস্থির। যাত্রীদের কেউ একজন চিৎকার করে বলল, ওই ড্রাইভার গাড়ি আস্তে চালাও। কে শোনে কার কথা। একের পর ওভারটেক করে গাড়ি চলছে বিদ্যুৎগতিতে। আমার পাশেই বসা একজন যাত্রী বললেন, ট্রাফিককে ‘বকশিশ’ দেওয়ার পর ড্রাইভার তার ক্ষোভ থামাতে পারছে না। তাই জোরে গাড়ি চালাচ্ছে। এভাবেই কিন্তু দুর্ঘটনা ঘটে...।

পরিবহন ব্যবস্থায় ‘বকশিশ’ অর্থাৎ চাঁদা সংস্কৃতি এতটাই প্রবল যে এর বাইরে কোনও কথা নেই। কোনও আপস হয় না। সে কারণে সড়ক দুর্ঘটনার কোনও বিচার হয় না। কিন্তু এভাবে আর কতদিন? উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আমাদের দেশটা তো বদলে যাচ্ছে। সেখানে দেশের পরিবহন ব্যবস্থার চিত্র কেন বদলাবে না। একথা সত্য, যেকোনও দেশের পরিবহন ব্যবস্থাই বলে দেয় দেশটি কতটা সভ্য, কতটা উন্নত? ধরা যাক, একদল বিদেশি মানুষ ঢাকায় নেমেই প্রথমে কি খুঁজবে? নিশ্চয়ই যানবাহন। তার মানে আমাদের যানবাহন ব্যবস্থার ভালো-মন্দের ওপর ভিত্তি করেই তারা আমাদের দেশটিকে মূল্যায়ন করতে চাইবে নিশ্চয়ই। যেমন আমরাও বাইরের দেশে গেলে এমনটাই করি। সিঙ্গাপুরে প্রথম যেবার যাই, বিমানবন্দর থেকে নেমে ট্যাক্সিতে উঠেছি। হঠাৎ রাস্তায় গাড়ি থেমে গেল। জানালা দিয়ে দেখি একটি শিশুর হাত ধরে রাস্তা পার করে দিচ্ছেন একজন ট্রাফিক পুলিশ। সে জন্য যানবাহন দাঁড়িয়ে গেছে। আহারে! কী মায়া!

আমাদের পরিবহন ব্যবস্থায় এই ‘মায়া’ সৃষ্টি করা খুবই জরুরি। তাহলেই হয়তো আর সড়ক দুর্ঘটনা ঘটবে না। কিন্তু তা কি সম্ভব? প্রিয় পাঠক, আপনারা কি বলেন?

লেখক: কথাসিহিত্যক, নাট্যকার, সম্পাদক- আনন্দ আলো।
সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়