শিরোনাম
◈ জাতিসংঘে সদস্যপদ প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর নিন্দা ফিলিস্তিনের, লজ্জাজনক বলল তুরস্ক ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের

প্রকাশিত : ৩১ জুলাই, ২০১৮, ০৭:৫৮ সকাল
আপডেট : ৩১ জুলাই, ২০১৮, ০৭:৫৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জিপিএ-৫ পেয়েও অনিশ্চিত উচ্চশিক্ষা জেলেপল্লীর ইন্দ্রোজিতের

ডেস্ক রিপোর্ট : অদম্য মেধাবী ছাত্র ইন্দ্রোজিত। বাড়ি নড়াইলের প্রত্যন্ত অঞ্চল হোগলাডাঙ্গা গ্রামে। বাবা মৎস্যজীবি। মা পরের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। মৎস্যজীবি পরিবারের এই হতদরিদ্র সন্তান সদর উপজেলার বল্লারটোপ আইডিয়াল কলেজ থেকে এ বছর জিপিএ ৫ পেয়েছে। তার এই সাফল্যে জেলেপল্লী জুড়ে যেন আনন্দের শেষ নেই। কলেজের শিক্ষক ও সহপাঠীরাও ভীষণ খুশি। তবে আর্থিক অস্বচ্ছলতায় ইন্দ্রোজিতের উচ্চশিক্ষা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, নড়াইল সদর উপজেলার বাঁশগ্রাম ইউনিয়নের হোগলাডাঙ্গা গ্রামের জেলেপল্লীর বাসিন্দা গোবিন্দ বিশ্বাসের ছেলে ইন্দ্রোজিত। তিন সন্তানের মধ্যে বড় ইন্দ্রজিত। অন্য দুই সন্তানও স্কুলে লেখাপড়া করে। ইন্দ্রোজিতের বাবা বিভিন্ন হাট-বাজারে মাছ বিক্রি করেন এবং মা দীপ্তি রানী বিশ্বাস মাঝে মধ্যে অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসারের ব্যয় বহন করে।

ইন্দ্রোজিতের দাদীসহ পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৬ জন। জমিজমা বলতে বাড়ির ৬ শতক জমি ছাড়া আর কিছু নেই। একটি মাত্র টিনের ঘরে নেই জানালা। তাই ঘরে বসেই আকাশ দেখা যায়। বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে কষ্টের যেন শেষ নেই। ছোট একটি চালা দিয়ে সেখানে রান্না করা হয়। ইন্দ্রোজিতের পড়ার কক্ষে একটি খাট এবং একটি টেবিল ছাড়া আর কিছুই নেই। তার ব্যবহৃত জামা-কাপড় রাখার মতো একটি আলনাও নেই। ইন্দ্রোজিত একজন ভাল ক্রিকেট খেলোয়াড়। বিভিন্ন টুর্নামেন্টে একাধিক ট্রফি জিতলেও সেগুলি ঘরের বেড়ার সাথে মিশিয়ে রাখা হয়েছে। যা মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

ইন্দ্রোজিত জানান, এইচএসসিতে তার কলেজের থেকে সব টাকা দিয়ে দেয়া হয়েছে। বই এবং কাপড় কিনে দেয়া হয়েছে। শিক্ষকরা প্রাইভেট পড়ালেও কোন টাকা নেননি। শিক্ষককের সহযোগিতায় এইচএসসি পাশ করলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে অনার্স পড়ার স্বপ্ন পূরণ হবে কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে। উচ্চ শিক্ষার আশায় ইতিমধ্যে ধার দেনা করে কোচিং করেছেন।

ইন্দ্রোজিতের বাবা গোবিন্দ বিশ্বাস জানান, তার ছেলের এই অভাবনীয় সাফল্যে তাদের পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি মৎস্যজীবি পল্লীর সবাই খুব খুশি। তাদের মৎস্যপল্লীতে এতো ভাল ফলাফল আর কেউ করতে পারেনি। তিনি প্রতিদিন আশেপাশের হাটে গিয়ে আড়ত থেকে মাছ কিনে সেই হাতে খুচরা বিক্রি করেন। এতে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালানো খুবই কঠিন। ছেলেকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করার খুই ইচ্ছা থাকলেও তা অর্থের অভাবে সম্ভব হবে কিনা জানেন না। বিক্রি করার মতো কোন সম্পদ নেই। তাই ছেলের চিন্তায় রাতে ঘুম হয় না। তার সন্তানের পড়াশোনায় আর্থিকভাবে সহযোগিতার জন্য সমাজের বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতার আবেদন করেছেন।

বল্লারটোপ আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ মো. সাইদুর রহমান জানান, ইন্দ্রোজিতের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে তার বই কিনে দেয়া, বেতন পরিশোধসহ সার্বিক ব্যয়ভার কলেজ থেকেই বহন করা হয়েছে। তার ফলাফলে সবাই খুশি।

ইন্দ্রোজিতের ইচ্ছা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিষয়ে সম্মান শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা শেষে পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোটানো এবং দেশ ও মানবতার সেবা এগিয়ে আসা। তার এই স্বপ্নপুরণে সমাজের বিত্তবান শিক্ষানুরাগীরা এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন তিনি। সূত্র : পরিবর্তন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়