প্রফেসর ড. এম শাহ্ নওয়াজ আলি : ত্রিশ লাখ শহীদের স্মরণে ত্রিশ লাখ গাছ রোপন কর্মসূচি ১৮ জুলাই উদ্যোগ উদ্বোধন হয়। মাননীয় প্র্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি তার টান নতুন নয়। দেশের তরে অকাতরে জীবন দিয়েছে তার পরিবারের প্রায় সব সদস্য। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার অগ্নি পুরুষ। শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুকন্যা। বঙ্গবন্ধু জীবনভর মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। পরের তরে নিজেকে বিলিয়ে দিতে কখনোই কার্পণ্য করেননি। মানুষের ডাকে সাড়া দিতে দুইবার ভাবেননি। জনককন্যাও তাই। রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন মানুষকে কেন্দ্র করেই, মানুষের সুখ-দুঃখকে অগ্রাধিকার দিয়ে। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে এ দেশের লাখ লাখ মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ত্রিশ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছিল। আহত হয়েছিল লাখো মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি তার শ্রদ্ধা অসীম। তাই তার প্রতিটি কর্মকান্ডেই মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মানের বিষয়টি থাকে। মুক্তিযোদ্ধারা এ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান, তাদের স্বীকৃতি ও সম্মান সব সময়ই অগ্রাধিকার দেন তিনি। মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক ভাতা, তাদের সন্তান-সন্ততিদের চাকরি, পড়ালেখায় যাতে কোনো ধরনের বিঘ্ন না ঘটে সেটা তিনি সব সময় নজরে রাখেন। এবং নিশ্চিত করার চেষ্টা করেন। এখানে তিনি কোনো আপোস করেন না। ত্রিশ লাখ শহিদদের স্মরণে ত্রিশ লাখ গাছ রোপনও তাদের অবদানকে সম্মানের সঙ্গে স্মরণ দেখানো, মুক্তিযুদ্ধের প্রতি তার কমিটমেন্টের আরেকটি নজির।
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার তিনি করেছেন। অত্যন্ত প্রভাবশালী, প্রতাপশালী একাত্তরের ঘাতকদের কেউ বিচার করতে পারবে বা করবে দেশের মানুষ বিশ্বাস করেনি। যা মানুষ বিশ্বাস করেনি, তাই করে দেখিয়েছেন জনককন্যা। কিন্তু ঘাতকদের উত্তরসূরিরা বসে নেই, এ দেশকে পিছিয়ে দিতে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। নানা সময়ে আমরা তার নমুনা দেখতে পাই। সেটা কখনো জঙ্গি রূপে, কখনো ধর্মের নামে রাজনীতির বেশে হাজির হয় আমাদের সামনে। এ জায়গাটায় আমাদের নজর দিতে হবে। আমাদের আশেপাশে ওরা ঘাঁপটি মেরে বসে আছে। সুযোগ পেলে এ দেশের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদের অশ্রদ্ধা করতে দ্বিধা করে না। এদের কোনো অপতৎপরতাই যেন সফল না হয়, সজাগ থাকতে হবে সবাইকে। জনককন্যাকে সহযোগিতা করতে হবে। পাশে থাকতে হবে। বাংলাদেশের সুন্দর ভবিষ্যৎ যেন কোনোভাবেই বিনষ্টের চেষ্টা করতে না পারে একসঙ্গে, একযোগে সবাইকে রূখে দাঁড়াতে হবে। পরিবেশ-পরিস্থিতি সম্পর্কে অবশ্যই আমাদের সচেতন থাকতে হবে। বাংলাদেশকে ভালো রাখার জন্য এর কোনো বিকল্প নেই।
লেখক : সদস্য, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন
আপনার মতামত লিখুন :