ডেস্ক রিপোর্ট: সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব আবদুর রাজ্জাককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে নগরীর মিরবক্সটুলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, যতই গ্রেফতার নির্যাতন হয়রানি করা হোক, যতই ষড়যন্ত্র করা হোক নির্বাচনের মাঠ ছেড়ে যাব না।
তিনি বলেন, এর আগেও এমন অনেক ঘটনার বিচার ইসি (নির্বাচন কমিশন) ও প্রশাসনের কাছে চেয়েছি, পাইনি। এবার আর কারও কাছে বিচার চাইব না। এর বিচারের ভার জনগণের ওপর দিলাম। ৩০ জুলাই জনগণই এর জবাব দেবে।
সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ বলেন, প্রচারণার কাজে বের হয়ে মিরবক্সটুলা এলাকায় গেলে এসএমপির কোতোয়ালি থানা পুলিশ রাজ্জাককে তার গাড়ি থামিয়ে তুলে নেয়।
এ ব্যাপারে এসএমপির উপ-কমিশনার (মিডিয়া) আবদুল ওয়াহাব বলেন, মামলা থাকায় হয়তো তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরিফুল হক চৌধুরীর নির্বাচনসংক্রান্ত কাজের প্রধান পরিকল্পনাকারী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাক। তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্ষুদ্রঋণ ও কুটিরশিল্পবিষয়ক সহ-সম্পাদকও।
এর আগে রাজ্জাককে গ্রেফতার করতে ২২ জুলাই তার বাসায় অভিযান চালানো হয়েছিল। তাকে না পেয়ে সেদিন তার ব্যবসায়ী ছেলে রুমান রাজ্জাককে গ্রেফতার করা হয়।
কোতোয়ালি থানার ওসি মো. মোশাররফ হোসেন রাত সাড়ে ৯টায় জানান, রাজ্জাকের বিরুদ্ধে শাহপরান থানায় ও এয়ারপোর্ট থানায় দুটি মামলা রয়েছে। তিনি ওই মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি। এ ছাড়া ওই থানায় বহু পুরাতন একটি মামলার তিনি ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি।
রাতে যুগান্তরের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে রাজ্জাকের কথা হয়। তিনি বলেন, মামলায় আমাকে ওয়ারেন্টের কথা বলা হচ্ছে। ওই মামলায় আমি জামিনে ছিলাম। শনিবারও আদালতে গিয়েছি। ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় পেশকার আমাকে বিদায় দেন। জানি না জামিন কখন বাতিল হল।
তিনি আরও বলেন, আমার ওপর যেসব মামলা ছিল, সব মামলায় আমি জামিনে রয়েছি। কিন্তু কিভাবে ও কেন পুলিশ আমাকে গ্রেফতার করল। তার দাবি নির্বাচন বানচাল করতে তাকে বিনা কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর আগে আমার ছেলেকে হয়রানি করতে বিনা কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু এভাবে গ্রেফতার করে নির্বাচনী নীলনকশা কোনোভাবেই বাস্তবায়ন করা যাবে না।
পরে সংবাদ সম্মেলনে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করা সরকার ও ইসির নৈতিক দায়িত্ব। কিন্তু গত তিন চারদিনে নেতাকর্মীদের যেভাবে গ্রেফতার-নির্যাতন করা হয়েছে তাতে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ আছে বলে মনে হয় না। তিনি বলেন, যত রকমের কৌশল আছে তারা (ক্ষমতাসীন দল ও প্রশাসন) ব্যবহার করছে।
তারা ডিএমপি (ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ) থেকে ১৩৯ জন সদস্যকে নিয়ে এসেছে। তাদের ভূমিকা কী হবে তা নিয়ে জনমনে শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
আরিফুল হক বলেন, তাদের (আওয়ামী লীগ) জনপ্রিয়তা যদি এতই থাকে তাহলে এত ভয় কেন? সাংবাদিকদের পাশ না দেয়ার সমালোচনা করে বিএনপির এ নেতা বলেন, এতেই বোঝা যায় তারা (সরকার) কী করতে চায়।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে আরিফ বলেন, যে অন্যায়ই হোক না কেন আপনারা জাতির কাছে প্রকাশ করুন। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা কলিম উদ্দিম আহমেদ মিলন, খন্দকার আবদুল মুক্তাদির, আলী আহমেদ, নাসিম হোসাইন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
২২ জুলাই থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ছয়দিনে নির্বাচনী নানা ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করা হয়।
এর মধ্যে ২২ জুলাই রাতে শাহপরান থানায় দুটি, ২৫ জুলাই রাতে পুলিশের ওপর ককটেল হামলার অভিযোগে দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি, সর্বশেষ নগরীর ৬ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মেয়র কামরানের নির্বাচনী কার্যালয়ে বোমা হামলার অভিযোগে এয়ারপোর্ট থানায় আরও একটি মামলা করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :