ডেস্ক রিপোর্ট : ঈদে সামর্থ্যবান ব্যক্তিরা সড়ক, রেল বা নদী পথের ভ্রমণে নানা ধরনের ভোগান্তি এড়াতে অতিরিক্তি অর্থ দিয়ে হলেও আকাশপথে যেতে আগ্রহী। আর ঘরমুখো মানুষের চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে এয়ারলাইন্সগুলো টিকেট ভাড়া দ্বিগুণ রাখে। তারপরও মানুষ বেছে নিচ্ছে আকাশপথকে।
ঈদুল আযহার এখনো ২৪ দিন বাকি থাকলেও ইতোমধ্যে এয়ারলাইন্সগুলোর ৭৫ শতাংশ টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।
এদিকে, রোজার ঈদের ন্যায় যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ সামলাতে শিডিউল ফ্লাইটের পাশাপাশি এয়ারলাইন্সগুলো অভ্যন্তরীণ রুটে অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করবে বলেও জানা গেছে।
জানা যায়, অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে দেশের চারটি এয়ারলাইন্স— বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, নভোএয়ার ও রিজেন্ট এয়ারওয়েজ।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ৭টি রুটে এয়ারলাইন্সগুলো ফ্লাইট পরিচালনা করে। সৈয়দপুর, রাজশাহী, যশোর, বরিশাল, সিলেট, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার।
এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আকাশপথ সবচেয়ে নিরাপদ ও দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা হওয়ায় যাত্রীদের আগ্রহ বাড়ছে।
ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তি কমাতেই অনেক যাত্রী কোরবানি ঈদের অনেক আগেই টিকিট সংগ্রহ করছেন। ঈদে সাধারণত সৈয়দপুর, রাজশাহী, যাশোর ও বরিশাল রুটে যাত্রীদের চাপ বেশি।
কারণ এইসব অভ্যন্তরীণ রুটে ছোট উড়োজাহাজগুলো চলাচল করে। ঈদের সময় ঘরমুখো মানুষের চাহিদার সেই তুলনায় উড়োজাহাজ সেবা কম থাকে। ফলে এয়ারলাইন্সগুলো যাত্রীদেরকে কাছ থেকে সুযোগ বুঝে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে।
সেই তুলনায় অবশ্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেটের ফ্লাইটগুলোতে চাপ কম থাকে। কারণ হিসাবে এয়ারলাইন্সগুলো বলছে- এই রুটগুলো আন্তর্জাতিক। আন্তর্জাতিক রুট হওয়ায় এয়ারলাইন্সগুলো বোয়িং উড়োজাহাজ বা বড় উড়োজাহাজগুলো এই রুটে চলাচল করে। সিট সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় এরুটে যাত্রী বাড়লেও এয়ারলাইন্সগুলো খুব বেশি সমস্যা হয় না। আন্তর্জাতিক রুটে যাওয়ার সময় ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার বা সিলেট ঘুরে যেতে যাত্রী বহন করতে পারে।
এয়ারলাইনসগুলোর তথ্যমতে, প্রতিটি এয়ারলাইন্সের প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ ঈদের টিকিট বিক্রি সম্পন্ন হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ৭৫ শতাংশ টিকিট বিক্রি সম্পন্ন হয়েছে। রিজেন্ট এয়ারওয়েজের প্রায় ৭৪ শতাংশ টিকিট বিক্রি সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া নভো-এয়ার ও ইউএস-বাংলার ৭০ শতাংশের বেশি বিক্রি হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বলেন, ইতোমধ্যেই রাজশাহী ও সৈয়দপুরের টিকিট বিক্রি শেষ হয়েছে। অন্যান্য রুটের প্রায় ৭৫ শতাংশ টিকিট বিক্রি শেষ হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যাত্রীর চাপ রয়েছে। আগামীকাল রোববার মিটিংয়ে কোথায় কোন ফ্লাইট বাড়ানো হবে, সেটা জানা যাবে। বিশেষ করে ঈদ উপলক্ষে বিমানের রাজশাহী ও সৈয়দপুর রুটে কিছু ফ্লাইট বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
এব্যাপারে রিজেন্ট এয়ারওয়েজের চিফ কমার্শিয়াল হানিফ জাকারিয়া বলেন, ঈদে যাত্রীর চাপ প্রতিটি এয়ারলাইন্সেই বেশিই থাকে। আমাদের এয়ারলাইন্সে ঈদের সামসময়িক সময় প্রায় ৭৪ শতাংশ টিকেট বিক্রি হয়েছে।
অতিরিক্তি ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে কক্সবাজারে অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা পরিকল্পনা রয়েছে।
ইউএস-বাংলার মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) কামরুল ইসলাম বলেন, ঈদে সাধারণত সব রুটেই মোটামুটি চাপ থাকে। তবে যশোর, রাজশাহী, সৈয়দপুর ও বরিশালে তুলনামূলকভাবে বেশি চাপ থাকে। ইতোমধ্যে আমাদের ৭০ ভাগের বেশি টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে।
এব্যাপারে নভোএয়ারের নির্বাহী কর্মকর্তা (মার্কেটিং অ্যান্ড মিডিয়া কমিউনিকেশন) নীলাদ্রি মহারত্ন বলেন, প্রচুর চাপ রয়েছে কোরবানি ঈদে। এখন পর্যন্ত ৭০ শতাংশের বেশি টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে। এছাড়া অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামলাতে অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।-পরিবর্তন
আপনার মতামত লিখুন :