রফিক আহমেদ : প্রধান অথিতির বক্তব্যে আল্লামা শাহ আহমদ শফি বলেন, দেওবন্দের কথা বলি আমরা। নবীজির লাঠির রেখার ওপর প্রতিষ্ঠিত দারুল উলুম দেওবন্দ। আমাদের সবকিছু যেন ফতওয়া মোতাবেক হয়। দেওবন্দের ফতওয়াকে ভিত্তি করেই উলামারা কথা বলেছেন। তাবলিগের তিন মুরব্বি যে উসুলে কাজ করেছেন কেয়ামত পর্যন্ত সে উসুলেই চলবে।
শনিবার দুপুর ১ টায় রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুরে তাবলিগের ওয়াজাহাতি জোড় অনুষ্ঠিত হয়। সবশেষে বাংলাদেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর বয়ান ও দোয়ার মাধ্যমে জোড় শেষ হয়।
তিনি বলেন, ওয়াজের সব মজলিসে বক্তরা তাবলিগের এ উসুলের কথা প্রচার করবেন। আমরা আলেমদের কথামতো চলব। তাবলিগের কাজ করব। অন্য কারো কথা মানব না, আমল করব না। যিনি আলেম না, তিনি কোন মাজহাব বানালে আপনারা তার কথা শুনবেন না। এই আলেম ওলামা যারা বাংলার সিংহ আপনারা তাদের কথা শুনবেন।
তিনি আরও বলেন, এ কাজ উলামাদের থেকে এসেছে, এখনো একাজের মুরব্বি হবেন উলামায়ে কেরাম। যারা আলেমদের অপমানিত করেছে। মারধর করেছে। আমরা উলামারা মার খেতে পারব। এখানকার মুফতিয়ানে কেরাম আমাদের মারলেও সহ্য করব। কিন্তু যারা মূর্খ, কিছু জানে না তাে নেই তাদের তাবলিগ কিসের।
আল্লামা আহমদ শফী বলেন, নবী সা. দীন হলো একে অন্যের মঙ্গল কামনার নাম। আল্লাহ, আল্লাহর রাসূল, আলেমদের মঙ্গল কামনার নাম দীন। এক. আল্লাহর মঙ্গল কামনা মানে কুরআন মানা। দুই. রাসূলের মঙ্গলকামনা মানে রাসূলের সব কথা মানা। সবার কাছে ওয়াদা নিতে চাই, আপনারা আপনাদের ঘরের সদস্যদের নামাজি বানান। সবাই দাড়ি রাখুন সুন্নত তরিকায়। যদি নবীর সুপারিশ পেতে চান। না হয় নবীজি সা. কেয়ামতের ময়দানে সুপারিশ নিতে গেলে বলবেন, তুমি আমার মুখের সঙ্গে শত্রুতা করেছ। তুমি কোন ইহুদি নাসারা আমি চিনি না। সবাই সুন্নতের কিতাব কিনে আমল করুন।
তাবলীগের চলমান সঙ্কট নিরসন ও মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত উলামায়ে কেরামের অবস্থান পরিস্কার করতে জোড় সম্মেলনের আয়োজন করেন উলামায়ে কেরাম। জোড় শেষে উলামায়ে কেরামের সম্মিলিত সিদ্ধান্তের সবাই ঐক্যমত পোষণ করেন। এতে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে ৬ টি সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে।
জোড়ে গৃহীত সিদ্ধান্ত গুলো হলো, এক. জমহুর উলামায়ে কেরাম একমত হয়েছেন, তিনটি মৌলিক কারণে- (ক) কোরআন ও হাদিসের মনগড়া ব্যাখ্যা, (খ) তাবলিগের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে তাবলিগ ব্যতীত দ্বীনের অন্যান্য মেহনতকে যথা দ্বীনি শিক্ষা ও তাসাউফ ইত্যাদিকে হেয় প্রতিপন্ন করা। (গ) পূর্ববর্তী তিন হজরতজি (হজরত মাওলানা ইলয়াস রহ., হজরত মাওলানা ইউসুফ রহ, ও হজরত মাওলানা এনামুল হাসান রহ. এর উসুল ও কর্মপন্থা থেকে সরে যাওয়ার কারণে বর্তমানে মাওলানা মুহাম্মদ সাদ সাহেবকে অনুসরণ করা সম্পূর্ণভাবে বর্জনীয় ও নিষিদ্ধ।
হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক বলেন, তাবলিগও উলামায়ে কেরাম, আওলিয়ায়ে কেরামের কথা মতো করবেন। সবাই গ্রামে গ্রামে জামাত নিয়ে বের হোন। যাতে অন্য কোনো নতুন তাবলিগ শুরু হতে না পারে। মাদরাসা বন্ধ দিয়ে হলেও তাবলিগে বের হতে হবে উলামাদের। নতুন নতুন যারা বিভিন্ন কথা বলছে তাদের কথা মানা যাবে না।
জোড়ে জামিয়া শরইয়্যাহ মালিবাগ মাদরাসার প্রিন্সিপাল পীরে কামেল আল্লামা আশরাফ আলী, জামিয়া বারিধারার মুহতামিম আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, মারকাজুদ দাওয়ার আমিনুত তালিম মুফতি আবদুল মালেক, কিশোরগঞ্জ জামিয়া ইমদাদিয়ার মুহাতামিম আল্লামা আজহার আলী আনোয়ার শাহ, ফরিদাবাদ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আবদুল কুদ্দুস, শাইখ জাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ, জামিয়া রাহমানিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহফুজুল হক, লালবাগ জামিয়ার মুহাদ্দিস মুফতি ফয়জুল্লাহ, বসুন্ধরা ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের প্রধান মুফতি, মুফতি এনামুল হক, বারিধারা মাদরাসার মুহাদ্দিস মুফতি ওবায়দুল্লাহ ফারুক, আরজাবাদ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া ও উত্তরা আল মানহাল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা কেফায়াতুল্লাহ আল-আজহারী।
আপনার মতামত লিখুন :