আশরাফ চৌধুরী রাজু, সিলেট: নানা ঘটনা রটনার মধ্যে দিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র, কাউন্সিলর পদপ্রার্থীরের ১৮ দিনের নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হচ্ছে আজ শনিবার। সোমবার (৩০ জুলাই) সকাল ৮ টা থেকে শুরু হবে ভোট গ্রহণ। নির্বাচনী বিধিমালা অনুযায়ী ভোট গ্রহণের ৩২ ঘণ্টার আগে থেকেই বন্ধ থাকবে সব ধরণের প্রচারণা ও সভা সমাবেশ।
গত ১০ জুলাই প্রতীক বরাদ্দের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছিল নির্বাচনী প্রচারণা। সেদিন থেকেই আচরণবিধি না মানা নিয়ে মেয়র কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদের মধ্যে অভিযোগ পালটা অভিযোগও উঠেছে বারবার। আর এসব কিছু মিলিয়েই সুষ্ঠভাবেই নির্বাচনী প্রচারণা শেষ করছেন সিসিক নির্বাচনের প্রার্থীরা।আজ শনিবার রাত ১২টায় সব ধরণের সভা সমাবেশসহ নির্বাচনী প্রচারণার সময় শেষ হচ্ছে।
এর আগেই রাত ৯টায় শেষ হবে প্রচারণার কাজে মাইকের ব্যবহার। এদিকে নানা ঘটনা রটনার মধ্যে দিয়েই নির্বাচনী প্রচারণা শেষ করছেন সিসিক নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী।
জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশ ২০ দলীয় জোটে থাকলেও এবারের সিসিক নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। যদিও আরিফ ও জুবায়ের দুইজনেরই আশা নির্বাচনের আগে একে অপরকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন।
কিন্তু এখন পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে আছেন দুই প্রার্থীই।অপরদিকে সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিমও মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। প্রতীক বরাদ্দের পর প্রচারণাও চালিয়েছেন বেশ কিছুদিন। তবে প্রচারণার মধ্যভাগে এসে তিনি আরিফকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।
আরিফকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেও আরিফের পক্ষে প্রচারণার দেখা যায়নি বিএনপির এই সাধারণ সম্পাদককে। জানা যায়, অসুস্থ হয়ে তিনি সিলেটের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।তবে প্রচারণার শেষ সময়ে এসে আরিফ সুষ্ঠ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কাও প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বেশ কয়েকজন দায়িত্বশীলরা সিলেটে অবস্থান করছেন বলে খবর পেয়েছি। নির্বাচনের আগে তাদের এ ধরণের অবস্থানে প্রশাসন প্রভাবিত হচ্ছে।তিনি বলেন, যেসব লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি তাতে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে মনে হচ্ছে না।
পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের বাসায় রাতের বেলা গিয়ে হয়রানি করছে। আমার সম্ভাব্য এজেন্টদের হুমকি দিচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করেও কাজ হচ্ছে না। সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত হয়নি।একই সাথে ভোটকেন্দ্র দখলেরও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপির এই প্রার্থী।অপরদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান সিসিক নির্বাচন সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
নির্বাচনের শেষ সময়ে এসে জাতীয় পার্টির সমর্থনও লাভ করেছেন।তিনি বলেন, একটি পক্ষ পরাজয় আঁচ করতে পেরে নির্বাচনকে বিতর্কিত করার জন্য নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। অভিযোগ করাই বিএনপির রাজনৈতিক সংস্কৃতি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।কামরান বলেন, সিলেটে রাজনৈতিক সম্প্রীতি রয়েছে। এখানে ছোটখাটো কিছু অভিযোগ থাকতে পারে।
তবে সর্বসাকুল্যে পরিবেশ অনেক ভালো। মানুষের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। ফলে নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ার কোনো কারণ নেই।এবারের সিসিক নির্বাচনে ১৩৪ টি কেন্দ্রে ৩ লক্ষ ২১ হাজার ৭৩২ জন ভোটার তাদের ভোট প্রদান করবেন। সোমবার সকাল ৮ টা থেকে টানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
আপনার মতামত লিখুন :