শিরোনাম
◈ গাজীপুরে হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু  ◈ বিশৃঙ্খলার পথ এড়াতে শিশুদের মধ্যে খেলাধুলার আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী ◈ তাপপ্রবাহের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসও বন্ধ ঘোষণা ◈ সোনার দাম কমেছে ভরিতে ৮৪০ টাকা ◈ ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি ◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও)

প্রকাশিত : ২৮ জুলাই, ২০১৮, ০২:২৩ রাত
আপডেট : ২৮ জুলাই, ২০১৮, ০২:২৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ইমরান আহমেদ খান নিয়াজি!

 

আসিফুজ্জামান পৃথিল: সম্প্রতি শেষ হওয়া পাকিস্তানের ১৩তম সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভ করেছে সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানের নেতৃত্বধীন তেহরিক ই ইনসাফ। সব ঠিক থাকলে ইমরান খানই হতে যাচ্ছেন দেশটির ১৯তম প্রধানমন্ত্রী। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য এই ইমরান খানের সাথে বাংলাদেশেরও রয়েছে একটি দূরবর্তী যোগাযোগ! ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানের ইস্টার্ন কমান্ডের অধিনায়ক লে. জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজি ইমরান খানের চাচা। ইমরান খানের পুরো নাম ইমরান আহমেদ খান নিয়াজি।

ইমরান খান পশতুন বংশোদ্ভূত। তার পরিবারের আদি নিবাস পাঞ্জাবের মিয়ানওয়ালিতে। কিন্তু চাকরি সূত্রে ইমরানের বাবা ইকরামুল্লাহ খান নিয়াজি থাকতেন পাঞ্জাবের রাজধানী লাহোরে। সেখানেই জন্ম নেন ইমরান। এদিকে মিয়ানওলির নিয়াজি গোত্রের আরেক সদস্য আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজি। ১৯১৫ সালে মিয়ানওয়ালিতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৩৭ সালে ২য় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কমিশন পান নিয়াজি। ২য় বিশ্বযুদ্ধে বার্মা ফ্রন্টে বীরত্ব দেখিয়ে অর্জন করেন ব্রিটিশ মিলিটারি ক্রস। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর নিয়াজি ধীরে ধীরে একজন লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে পদন্নতি পান। ১৯৭১ সালে ৪ এপ্রিল তাকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কামান্ডের সর্বাধিনায়ক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।

বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে নিয়াজির নির্দেশে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ভয়াবহ বর্বরতা চালায়। তার নির্দেশেই হত্যা করা হয় ৩০ লাখ নিরীহ বাঙালীকে। দুই লক্ষাধিক নারী বর্বর ধর্ষণের শিকার হন। অবশেষে রক্তস্নাত ৯ মাসের প্রবল লড়াই এর পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় পতাকা হাতে মিরপুর সেতু অতিক্রম করে অবরুদ্ধ ঢাকায় প্রবেশ করেন মুক্তিযোদ্ধারা। জেনেভা কনভেনশনকে সম্মান দেখিয়ে তারা মেজর জেনারেল নাগরার নেতৃত্বাধীন ভারতীয় বাহিনীর আসার প্রতিক্ষায় ছিলেন। এরপর একই কনভেনশনকে সম্মান জানিয়ে নিয়াজিকে কোন ক্ষতি না করেই আত্ম সমর্পণের নির্দেশ দেন। যেই নিয়াজির নির্দেশেই ঠান্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছিলো ৩০ লাখ নীরিহ বাঙালীকে।

১৬ ডিসেম্বর বিকাল সাড়ে ৪টায় পরাজিত ‘টাইগার’ নিয়াজি রেসকোর্স ময়দানে মিত্রবাহিনীর অধিআয়ক লে. জেরারেল জগজিৎ সিং আরোরার কাছে পদত্যাগ করেন। খুলে ফেলেন নিজের র‌্যাঙ্ক অ্যাপুউলেট। জমা দেন নিজের সার্ভিস রিভলভার। ৯ মাস যেই নিয়াজি চরম দম্ভ দেখিয়েছেন, বাঙালির কাছে পরাজিত হয়ে সেই তিনিই সাধারণ যুদ্ধবন্দী হিসেবে আত্মসমার্পন করলেন।

নিয়াজির পরিবারের অপর সদস্য ইমরান খান নিয়াজি এই ঘটনার সাড়ে ৪৬ বছর পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদ গ্রহণের দ্বারপ্রান্তে। ইমরান খানরা এখনও নিয়াজিকে বাঘ ভাবতে পারেন। কারণ কোনঠাসা নিয়াজির ইতিহাস পাকিস্তানিরা ভুলে যেতে চায়। সেই নিয়াজির ইতিহাস যে তরুণ মুক্তিযোদ্ধা বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকির দিতে হাত বাড়িয়েছিলো। আর কাদের সিদ্দিকি হাত না বাড়িয়ে বলেছিলেন, ‘আমি নারী ও শিশু হত্যাকারীদের সাথে হাত মিলাইনা।’ সেই নিয়াজি কখনওই হিরো নন যিনি পরাজয় সহ্য করতে না পেরে জেনারেল নাগরার কাঁধে মাথা রেখে ডুকরে কেঁদেছিলেন। সেই নিয়াজি যাকে আত্মসমার্পনে বাধ্য করেছিলো ‘ভেতো’ বাঙালিরা।

রেফারেন্স: উইটনেস টু সারেন্ডার-মেজর সিদ্দিক সালেক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়