শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও

প্রকাশিত : ২৭ জুলাই, ২০১৮, ০৮:০৪ সকাল
আপডেট : ২৭ জুলাই, ২০১৮, ০৮:০৪ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কোন পথে বিএনপি?

ডেস্ক রিপোর্ট:  সব ঠিক থাকলে নভেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য তফসিল। এর আগেই অক্টোবরে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হবে। সবমিলে মাঝে আর দুই মাস। এই যখন অবস্থা, দাবি আদায় আর নির্বাচন নিয়ে কতটা প্রস্তুত রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি? দলটির প্রধান নীতি গ্রহণ এবং বাস্তবায়নকারী চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় সাজার পর কারাবন্দি। এরপর যার সিদ্ধান্তে দল চলে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানও ফেরারি হয়ে লন্ডনে।

ফলে এখন পর্যন্ত দাবি আদায়ের আন্দোলন-সংগ্রাম এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রশ্নে বিএনপির সিনিয়র নেতারা স্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি। তবে আওয়ামী লীগকে ‘বৈধতা’ দেয়ার কোনো নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না, এই ইঙ্গিত দলটির নেতারা দিয়েছেন।

দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপি নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। যদিও সরকার সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তারা সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান রেখে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করবে এবং সে সরকারের অধীনেই হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

ফলে নির্বাচনী প্রস্তুতি ও দলীয় চেয়ারপারসনের মুক্তির আন্দোলন নিয়ে বিএনপি এক প্রকার রাজনৈতিক চাপে পড়েছে। সঙ্গে প্রায় এক যুগ ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটিকে সংগঠিত করা নিয়েও বিপাকে রয়েছেন নীতি-নির্ধারকরা। বেশিরভাগ কমিটি পূর্ণাঙ্গ না করায়, হঠাৎ করেই কোনো কর্মসূচি নিলে তা বাস্তবায়ন করার সামর্থ দলটির আপাতত নেই।

এসব বিষয়ে বিএনপির একাধিক নেতা পরিবর্তন ডটকমকে জানান, দলীয় চেয়ারপারসনকে ছাড়া বিএনপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাবে না। তারা ধরেই নিয়েছেন, টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিএনপি ছাড়া নির্বাচন যেমন অংশগ্রহণমূলক হবে না, দেশে-বিদেশেও গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি আগে থেকেই কঠোর কোনো কর্মসূচি দিয়ে শক্তি ক্ষয় করতে চাইছে না। একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলেই নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায়ে কঠোর কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামতে চাইছে। দলটির নেতারা সেভাবেই এখন থেকে হোমওয়ার্ক করছেন।

ঈদুল আযহার পর শোকাবহ আগস্ট, মাসজুড়ে থাকবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কর্মসূচি। এরপর সেপ্টেম্বরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। সেটিকে টার্গেট করেই কর্মকৌশল ঠিক করছেন দলটির নেতারা।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘আমাদের একমাত্র লক্ষ্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি। আগে মুক্তি, পরে আমরা নির্বাচন নিয়ে চিন্তা করব।’

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সক্রিয় আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে দলের নীতি-নির্ধারণী ফোরামের সদস্যরা আছেন, তারা সিদ্ধান্ত দিবেন।’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, খালেদা জিয়াকে ছাড়া কোনো একতরফা নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি, আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রথম শর্ত খালেদা জিয়াকে মু‌ক্তি দিতে হবে। তাকে কারাগারে রেখে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না, জনগণ সে নির্বাচন মেনেও নেবে না।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেয়া হবে না। বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা কেউই দেবেন না।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড সব সময় চলমান থাকে। এগুলো নিয়ে আপাতত চিন্তা করছি না। আমাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী স্থায়ী কমিটির বৈঠক আনুষ্ঠানিকভাবে করার কোনো সুযোগ নেই। কারণ, আমাদের দলের চেয়ারপারসন জেলে। তাছাড়া দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও বিদেশে। তাই আমরা স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সিনিয়র নেতারা বসে মিটিং করে কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি।’

খালেদা জিয়ার কারাবন্দিত্বের ৬ মাস

চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। এরপর থেকে তিনি নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। জামিনের জন্য আইনি প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছেন তার আইনজীবীরা। তবে এরই মধ্যে প্রায় ৬ মাস হতে চলল তার কারাবন্দিত্বের।

এখন খোদ বিএনপির নেতারাই আশঙ্কা করছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়া মুক্তি পাচ্ছেন না। সম্প্রতি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক অনুষ্ঠানে এমন সংশয় প্রকাশ করেছেন।

তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রীকে সেই পর্যন্ত সরকার আটকে রাখতে চাইবে, যতদিন না তারা অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে। তাদের (সরকারের) একমাত্র উদ্দেশ্য, আবারো ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো একটি একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়া।’

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩৬টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তিনটি বাদে সব মামলাতেই তিনি জামিনে আছেন। তিনটি মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানোর কারণে তিনি কারামুক্ত হতে পারছেন না।

দলে নিষ্ক্রিয়দের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে

খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে গুটিকয়েক কেন্দ্রীয় নেতাকে সক্রিয় দেখা যায়। এ নিয়ে কর্মীদের মধ্যেই ক্ষোভ বিরাজ করছে। কেউ কেউ বলছেন, খালেদা জিয়া যাদের বিশ্বাস করে দায়িত্ব দিয়েছেন, তাদের বেশিরভাগই রাজপথের আন্দোলন-কর্মসূচিতে আসেন না। যার ফলে কর্মীদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ৫৯২ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাহী কমিটির সদস্যদের মধ্যে ঘুরেফিরে হাতেগোনা কয়েকজন চেনামুখই কর্মসূচিতে অংশ নেন। এছাড়া স্থায়ী কমিটি, ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের মধ্যে বেশিরভাগই নিষ্ক্রিয়। কালে-ভদ্রে দলীয় কোনো ঘরোয়া সভায় তাদের দেখা মেলে।

২০১৬ সালের ১৯ মার্চ বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এর কয়েক মাস পর জাতীয় নির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়। নির্বাহী কমিটিতে ১৯ সদস্যের স্থায়ী কমিটির দুটি পদ শূন্য। আ স ম হান্নান শাহ এবং এমকে আনোয়ার মারা গেছেন। তিনজন সদস্য গুরুতর অসুস্থ। ভারতে আছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। অন্যরা ঘরোয়া সভা-সমাবেশে সীমাবদ্ধ। খালেদা জিয়া প্রায় ছয় মাস ধরে কারাবন্দি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান লন্ডনে।

এছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ৭৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ৩৫ জন, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব একজন ও যুগ্ম-মহাসচিব সাতজন। বিভিন্ন বিষয়ে সম্পাদকীয় ১৬৩টি পদের মধ্যে পাঁচটি শূন্য। নতুন-পুরনো মিলে নির্বাহী কমিটির সদস্য ২৯৩ জন।

কেন্দ্রীয় কমিটিও পূর্ণাঙ্গ হচ্ছে না

সংগঠন শক্তিশালী করতে বিএনপির অঙ্গ সংগঠনগুলোর পুনর্গঠন কাজ চলছে। অঙ্গ সংগঠনগুলোর সারাদেশে ইউনিট কমিটি পুনর্গঠন শেষের দিকে। আগামী ঈদের আগে কমিটি পুনর্গঠন কাজ শেষ হবে বলে জানা গেছে।

কিন্তু, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি খালেদা জিয়ার অনুস্থিতিতে করার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তিনি জানান, দলের চেয়ারপারসেনর অনুপস্থিতিতে দলীয় গণতন্ত্রে তাদের এটা করার ক্ষমতা দেয়নি। পরিবর্তন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়