লিহান লিমা: পাকিস্তানের একটি গ্রামের কোন নারীই দেশটিতে অনুষ্ঠিত হওয়া বুধবারের সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে নি। পাকিস্তানের মুলতান থেকে থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরের গ্রাম মুহুরিপুরের মুরুব্বিরা নারীদের ভোট দিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। তাই স্বামীর বাধার মুখে ঘরেই থাকতে বাধ্য হয়েছিল মুহুরিপুর গ্রামের নারীরা।
নির্বাচন কমিশন জানায়, ওই গ্রামের ৩ হাজার ২০০ নারী নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধনে থাকলেও একজন নারীও ভোট দেন নি। ২৫ বছরের তনয়া বিবি বলেন, ‘আমাদের স্বামী আমাদের হুমকি দিয়েছিল যদি আমরা ভোট দেই তবে আমাদের তালাক দিয়ে দিবে।’ গ্রামের যুবক মোহাম্মদ শমসের বলেন, ‘আমরা এখানে ভোট দিতে এসেছি, কিন্তু আমাদের গ্রামের নারীরা ভোট দেয় না, এটি আমাদের পুরনো ঐতিহ্য।’ এমনকি নারীদের ভোটের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা কাসির আব্বাস বলেন, ‘আমি নিজেও আমার স্ত্রীকে ভোটকেন্দ্রে আনতে পারি নি। আমি ভয় পেয়েছিলাম, যদি গ্রামবাসী আমার পরিবারকে বয়কট করে।’ স্থানীয় এনজিও এর কর্মী বিসমিল্লাহ ইরমান বলেন, ‘মসজিদে সতর্ক করে দেয়া হয়েছিল নারীরা যেন ভোট কেন্দ্রে না আসে।’ মুহুরিপুরে দশকব্যাপী এই রীতি চলে আসছে। ২০১৫ সালে ফৌজিয়া তালিক নামের এক নারী ভোট দিলে তাকে গ্রামের লোকজন বয়কট করেছিল।
দক্ষিণ এশিয় এই দেশটিতে সম্প্রতি নির্বাচনী আইন পরিবর্তন হলেও নারীর প্রতি ব্যবহার নিয়ে শঙ্কা থেকে গিয়েছে। যদ্ওি এবার পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করেছিল, যদি ১০ ভাগ নারী ভোটার না থাকে তবে ফলাফল বয়কট করা হবে। পাকিস্তানের ২০ মিলিয়ন ভোটারের মধ্যে ৯.১৩ মিলিয়নই নারী । কিন্তু লাহোর এবং করাচীর মত ভোটকেন্দ্রগুলোতেও নারীদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। কোতো শহরের ভোটার সাজিদা হালিম বলেন, ‘এই প্রথমবার আমি ভোট দিয়েছি এর আগে ২০১৩ ও ২০১৫ তে ভোট দিতে চেয়েও বাধার মুখে ব্যর্থ হয়েছি। সবসময় ভাবি কেন পুরুষ আমাদের হয়ে সিদ্ধান্ত দিবে? আমার বয়স এখন ২৭ এই প্রথমবার ভোট দেয়ার সুযোগ পেয়ে এখন নিজকে পূর্ণাঙ্গ পাকিস্তানি মনে হচ্ছে।’ এএফবি।
আপনার মতামত লিখুন :