সাজিয়া আক্তার : ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট বা কর্মক্ষম জনসংখ্যার বোনাসকাল নিয়ে পরিকল্পনা থাকলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বিশ্লেষকরা বলছেন জনসম্পদকে ঠিকমত ব্যবহার করতে না পারলে সুযোগ উল্টো বোঝায় পরিনত হবে, তৈরি হবে নানা সংকট।
কোনো দেশেই ১৫ থেকে ৫৯ বছর বয়স মানুষের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৬০ ভাগের বেশি হলে তাকে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট বা কর্মক্ষম জনসংখ্যার বোনাসকাল বলা হয়। বর্তমানে এমন মানুষের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৬৫ ভাগ, অর্থাৎ দেশে সাড়ে ১৬ থেকে ১৭ কোটি মানুষের প্রায় ১১ কোটি মানুষেই কর্মক্ষম। যার মধ্যে আবার তরুণদের সংখ্যাই বেশি।
একটি দেশে কর্মক্ষম জনসংখ্যার বোনাসকাল একবারেই আসে। সেই হিসেবে বাংলাদেশে ২০১০ সাল থেকে শুরু হয়েছে, এর সুবিধা থাকবে ২০৪০ থেকে ৪৫ সাল পর্যন্ত। তার পর থেকে কমতে থাকবে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা।
পপুলেশন সায়েন্স ঢাবি অধ্যাপক এ কে এম নূর-উন-নবী বলেন, পরিকল্পনা আছে, কিন্তু সেই পরিকলনা গুলো যে গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন সে গতিটা এখনো আসেনি। সে গতিটা আনা খুব দ্রুতই প্রয়োজন। আমরা যদি এই বোনাসকাল সময়টার ব্যবহার না করতে পারি তাহলে ভবিষ্যতে নানা সমস্যা দেখা দিবে।
দেশে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা সাড়ে ৬ শতাংশ কিংবা ১ কোটি ১৮ লাখ। ২০২১ সাল নাগাদ বয়স্ক মানুষের সংখ্যা হবে ২০ ভাগ বা প্রায় সাড়ে ৪ কোটি। যাদের ভরন পোশনের অর্থায়ন দিতেই চাপ তৈরি করবে বলে জানান বিশ্লেষকরা।
ঢাকা কার্যালয় বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, দেশে বড় তরুণ শক্তি থাকলেই শুধু হবে না তাদের যথাযোগ্য কাজে লাগাতে হবে। এই তরুণ শক্তিকে উৎপাদনশীল কাজে লাগাতে হবে। আমাদের দেশে অনেক লোক আছে, কিন্তু সেই তুলনায় কাজ বেশি নেই। আর সেই জন্যই আমরা লভ্যাংশ খুব একটা আহরণ করতে পারছি না।
১৯৭৪ সালে দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২ দশমিক ৪/৮ ভাগ থেকে কমে বর্তমানে ১ দশমিক ৩/৪ ভাগে নেমেছে।
বিশ্বে উন্নত দেশগুলো যখন কর্মক্ষম জনসংখ্যার অভাব বলছে তখন বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে। যা টেকসই উন্নয়নের জন্য বড় সুযোগ, আর তা উপযুক্ত ব্যবহারের এখনই সময় বলছেন বিশ্লেষকরা।
সূত্র : ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন
আপনার মতামত লিখুন :