রাশিদ রিয়াজ : ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থার মুখপাত্র বেহরুজ কামালবান্দি জানিয়েছেন, তার দেশের পরমাণু স্থাপনায় ভারী পানির উৎপাদন বন্ধ করেনি বরং আগের মতোই এর উৎপাদন চলছে। তিনি বুধবার তেহরানে এক অনুষ্ঠানের অবকাশে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ ঘোষণা দেন। স্বাভাবিক পানির চেয়ে ভারী পানিতে হাইড্রোজেন-১ আইসোটোপের চেয়ে বেশি পরিমাণে হাইড্রোজেন আইসোটোপ ডিউটেরিয়াম থাকে। এধরনের ভারী পানি বিশেষ ধরনের পারমানবিক চুল্লিতে ব্যবহার করা হয় যা নিউট্রোনকে ধীর গতি এনে দেয়। এরফলে ফিউশনিং ছাড়াই ইউরোনিয়াম সমৃদ্ধ করা সম্ভব হয়।
তিনি বলেন, ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে যাওয়ার পর দেশটির নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। তবে ইরানের ভারী পানি বিক্রি বন্ধের মার্কিন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
কামালবান্দি বলেন, সাবেক মার্কিন প্রশাসন যেখানে নিজেই ইরানের কাছ থেকে ৩০ টন ভারী পানি কিনেছিল সেখানে বর্তমান মার্কিন প্রশাসন অন্য দেশের কাছে ইরানের ভারী পানি বিক্রি আটকে দেয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ইরান বিশ্বের অন্যান্য দেশের কাছে ভারী পানি বিক্রি করে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।
২০১৫ সালে পাশ্চাত্যের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা সই করার আগে ইরান ২০ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করত। সেইসঙ্গে ইরানের আরাক পরমাণু স্থাপনায় ভারী পানির উৎপাদন ও তার মজুদ চলছিল।
তবে পরমাণু সমঝোতার ধারা অনুযায়ী ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা কমিয়ে আনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার তত্ত্বাবধানে ভারী পানি পরমাণু শক্তিধর অন্যান্য দেশের কাছে বিক্রি করে দিতে সম্মত হয়। ওই সমঝোতায় ইরানে ভারী পানির উৎপাদন চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়।
সমঝোতা অনুযায়ী, পরমাণু শক্তিধর অন্যান্য দেশের মতো যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক বারাক ওবামা প্রশাসনও ইরানের কাছ থেকে ভারী পানি ক্রয় করে। কিন্তু বেহরুজ কামালবান্দি জানালেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন বর্তমান মার্কিন প্রশাসন ইরানের কাছ থেকে এই পানি কেনা বন্ধ করে দেয়ার পাশাপাশি তা অন্যান্য দেশে বিক্রির প্রক্রিয়ায়ও বাধা দেয়ার চেষ্টা করছে। পারস টুডে
আপনার মতামত লিখুন :