শিরোনাম
◈ সরকারি দপ্তরগুলোতে গাড়ি কেনা ও বিদেশ সফরে কড়াকড়ি: কৃচ্ছ্রনীতির অংশ হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা ◈ ২১ বছর বয়স হলেই স্টার্ট-আপ লোনের সুযোগ, সুদ মাত্র ৪%: বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা ◈ ঢাকায় একটি চায়না টাউন প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে: আশিক চৌধুরী ◈ তিন বোর্ডে বৃহস্পতিবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত ◈ এসএসসির ফল নিয়ে যে বার্তা দিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা ◈ সৈক‌তের কা‌ছে দু:খ প্রকাশ ক‌রে‌ছেন ‌বি‌সি‌বির প্রধান নির্বাচক  ◈ ভারত সরকারকে আম উপহার পাঠাল বাংলাদেশ ◈ পুলিশের ঊর্ধ্বতন ১৬ কর্মকর্তা বদলি ◈ কল রেকর্ড ট্রেলার মাত্র, অনেক কিছু এখনো বাকি, অপেক্ষায় থাকুন: তাজুল ইসলাম ◈ জাতীয় নির্বাচনের সব প্রস্তুতি ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা : প্রেস সচিব

প্রকাশিত : ২৬ জুলাই, ২০১৮, ০৩:৩৪ রাত
আপডেট : ২৬ জুলাই, ২০১৮, ০৩:৩৪ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বেশিরভাগ হাসপাতালের আইসিইউ মানসম্পন্ন নয়

যুগান্তর রিপোর্ট: দেশের বেশিরভাগ হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) মানসম্পন্ন নয়। মুমূর্ষু রোগীদের আইসিইউ-এ সেবা প্রদানের নামে চলছে উচ্চ মুনাফার ব্যবসা। কয়েকটি সরকারি ও কর্পোরেট হাসপাতাল ছাড়া বাকি হাসপাতালগুলোর আইসিইউ ও করনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) প্রশিক্ষিত চিকিৎসক, নার্স এবং মানসম্পন্ন চিকিৎসা যন্ত্রপাতি নেই। এমনকি সার্বক্ষণিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। ন্যূনতম সেবা নিশ্চিত না করে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আইসিইউ সেবা সংক্রান্ত স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রতিবেদনে এসব চিত্র উঠে এসেছে।

বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে আইসিইউ সেবা সংক্রান্ত নানা অনিয়মের সংবাদ প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা অভিযান চালান। এসব অভিযান নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। প্রতিবেদনে বলা হয়, অধিকাংশ হাসপাতালে শয্যা সংখ্যার উল্লেখ নেই। ফলে জনবল কাঠামো এবং যন্ত্রপাতির সংখ্যা নিরূপণ করা যায় না। আইসিইউগুলোয় এবিজি মেশিন, পোর্টেবল এক্স-রে, পোর্টেবল আল্ট্রাসনোগ্রাম, ডায়ালাইসিস ফ্যাসেলিটি, পোর্টেবল ভেন্টিলেটরের মতো অতি প্রয়োজনীয় মেশিনের সংখ্যা অত্যন্ত কম। শয্যা সংখ্যার তুলনায় ভেন্টিলেটরের সংখ্যাও কম।

এতে বলা হয়, দু-একটি হাসপাতাল ছাড়া প্রায় সব হাসপাতালে সার্বক্ষণিক আইসিইউ কনসালটেন্ট (বিশেষজ্ঞ) থাকেন না। সার্বক্ষণিক আইসিইউ কনসালটেন্ট থাকা বাধ্যতামূলক হলেও তারা একাধিক হাসপাতালের সঙ্গে সংযুক্ত থাকেন এবং দিনে মাত্র একবার পরিদর্শন করেন। অনেক আইসিইউতে মেডিসিন, সার্জারি, নিউরো মেডিসিন, নিউরো সার্জারি, নেফ্রোলজি, কার্ডিওলজি, গাইনি বিশেষজ্ঞ নেই। নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (এনআইসিইউ) শিশু বিশেষজ্ঞ থাকলেও নিওনেটোলজিতে তাদের প্রশিক্ষণ আছে কি না, তা নিশ্চিত নয়। এসব হাসপাতালের আইসিইউতে ফিজিওথ্যারাপিস্ট, রেসপারিটরি থ্যারাপিস্ট ও নিউট্রিশনিস্ট নেই। নার্সের সংখ্যা সন্তোষজনক হলেও আইসিইউ/এনআইসিইউতে দায়িত্ব পালনের মতো তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা নেই। ক্লিনার, আয়া ও অন্যসব সাপোর্ট স্টাফ থাকলেও আইসিইউতে কাজ করার মতো তারা যোগ্যতাসম্পন্ন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, দেশে আইসিইউ সেবায় কোনো গাইডলাইন নেই। ফলে যে যেভাবে পারছে আইসিইউ পরিচালনা করছে। তিনি বলেন, ভর্তি রোগীর কাছ থেকে আইসিইউর বেড বাবদ ভাড়া নেয়া হয়, একই সঙ্গে আবার আইসিইউ চার্জ বাবদ টাকাও নেয়া হয়। এছাড়া ভেন্টিলেশনসহ অন্যসব যন্ত্র ব্যবহার বাবদ আলাদা টাকা নেয়া হয়। তিনি বলেন, আইসিইউর সেবামূল্য সর্বোচ্চ কত টাকা হতে পারে, সেটি সরকারের নির্ধারণ করা উচিত।

প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসপাতালের একটি বড় সমস্য হল- কোন রোগীকে কখন আইসিইউতে নেয়া হবে বা স্থানান্তর করা হবে, সে সংক্রান্ত ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন বা প্রটোকল নেই। ফলে রোগীকে আইসিইউতে অযৌক্তিকভাবে রাখার ঘটনা ঘটছে। কনসালটেন্সি ফি, ভেন্টিলেটর ফি, প্রতি ঘণ্টায় অক্সিজেন ফি, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ফি, সিভি লাইন ফি ইত্যাদির নামে প্রতারণা করে রোগীর কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) অধ্যাপক ডা. কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন যুগান্তরকে বলেন, আমরা কাজ শুরু করেছি। মঙ্গলবার বেসরকারি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। হাসপাতালগুলোর সেবার মান কঠোরভাবে মনিটরিং করা হবে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে এ সংক্রান্ত গাইডলাইন প্রণয়ন করা হবে। আইসিইউর দুষ্প্রাপ্যতা কমাতে ২০২২ সালের মধ্যে দেশের সব জেলা হাসপাতালে পাঁচ শয্যার আইসিইউ চালু করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানেসথেসিয়া, অ্যানালজেসিয়া অ্যান্ড ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. দেবব্রত কনিক বলেন, আইসিইউ, এনআইসিইউ ও সিসিইউ হল এমন একটি স্থান, যেখানে মুমূর্ষু রোগীদের নিবিড় পরিচর্যা করা হয়। আইসিইউর একটি বেডের জন্য ন্যূনতম ২০ বর্গফুটের জায়গা প্রয়োজন। যাতে এক রোগী থেকে আরেক রোগী নিরাপদ দূরত্বে থাকে। আইসিইউর কক্ষটি অবশ্যই কেন্দ্রীয়ভাবে তাপ নিয়ন্ত্রিত হতে হয়। যাতে কক্ষটিতে একটি নির্দিষ্ট তাপের সঞ্চালনশীল বায়ু প্রবহমান থাকে। স্পিলিট টাইপ এসিযুক্ত কক্ষের বাতাস একদিকে প্রবাহিত হওয়ায় কক্ষে ব্যাক্টেরিয়াসহ বিভিন্ন জীবাণু থেকে যায়, যা রোগীদের শরীরে ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি করে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়