শিরোনাম
◈ ৯৫ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা বিলে জো বাইডেনের সাক্ষর  ◈ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর ◈ বাংলাদেশ ব্রাজিল থেকে ইথানল নিতে পারে, যা তেলের চেয়ে অনেক সস্তা: রাষ্ট্রদূত ◈ মিয়ানমার সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠালো বিজিবি ◈ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপির ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ◈ বর্ধিত ভাড়ায় ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু ◈ মন্ত্রী ও এমপিদের নিকটাত্মীয়রা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে: ওবায়দুল কাদের  ◈ লোডশেডিং ১০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে, চাপ পড়ছে গ্রামে ◈ বাংলাদেশে কাতারের বিনিয়োগ সম্প্রসারণের বিপুল সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ীরা  ◈ হিট স্ট্রোকে রাজধানীতে রিকশা চালকের মৃত্যু

প্রকাশিত : ২৬ জুলাই, ২০১৮, ০৯:১৭ সকাল
আপডেট : ২৬ জুলাই, ২০১৮, ০৯:১৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

ডেস্ক রিপোর্ট : দুুই যুগেরও বেশি সময় ধরে একের পর এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দিলেও শিক্ষার্থীদের টিউশন ও ভর্তি ফি সংক্রান্ত কোনো নীতিমালা তৈরি করতে পারেনি সরকার। জানা গেছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ফি, টিউশন ফি এবং শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ইত্যাদিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে।
এছাড়া ট্রান্সক্রিপ্ট, সার্টিফিকেট ও প্রশংসাপত্র ইত্যাদি সরবরাহ করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পক্ষ থেকে উচ্চহারে ফি নেওয়ার হাজার-হাজার অভিযোগ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি)। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, যৌক্তিক কারণ ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রতি বছর সকল প্রকার ফি বৃদ্ধি করে যা এখন মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে গেছে।
প্রসঙ্গত, উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির ফল প্রকাশ হয়েছে সম্প্রতি। ইতিমধ্যেই সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শুরু হয়ে গেছে ভর্তি প্রক্রিয়া। মধ্যবিত্তদের নাগালে টিউশন ও ভর্তি ফি রাখার লক্ষ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি-সংক্রান্ত একটি নীতিমালা করা জরুরি বলে মনে করে ইউজিসি। ২০১৩ সালেই এ সংক্রান্ত নীতিমালা করার সুপারিশ পাঠানো হয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। ৫ বছর আগের ইউজিসির সেই প্রস্তাব সেখানেই থমকে আছে বলে জানিয়েছেন কমিশনের একাধিক সদস্য।
উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিচ্ছু অনেক শিক্ষার্থী জানান, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামের কারণে ভর্তি ও টিউশন ফি মধ্যবিত্ত পরিবারের নাগালের বাইরে। মো. গোলাম মাহবুব চৌধুরী নামের এক অভিভাবক জানান, তার ছেলের বিবিএ সম্পন্ন করতেই ৪ লাখ থেকে ৭ লাখ টাকা ব্যয় হচ্ছে। তিনি বলেন, যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পায়নি, তারা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবে। এমন খরচ হলে তো মধ্যবিত্ত মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চশিক্ষা গ্রহণ সম্ভব হবে না।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, শিক্ষাদানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মুনাফালোভী না হয়ে সেবার জন্য ব্রতী হওয়া প্রয়োজন। এ জন্য শিক্ষার্থীদের প্রদেয় বিভিন্ন ফি ও চার্জ সহনীয় পর্যায়ে রাখা অত্যাবশ্যক। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ এ ভর্তি ফি সহনীয় পর্যায়ে রাখার কথা উল্লেখ আছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
ইউজিসির তথ্যানুযায়ী, শিক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষ থাকা বিষয়গুলোয় পড়াশোনার খরচ মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের নাগালের বাইরে। বিশ্ববিদ্যালয়-ভেদে ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (বিবিএ) পড়তে খরচ আড়াই লাখ থেকে ৯ লাখ টাকা পর্যন্ত, মাস্টার্স অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এমবিএ) ১ লাখ থেকে ৫ লাখ, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) ৩ লাখ থেকে সাড়ে ৬ লাখ, ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক পড়তে ২ লাখ থেকে ৫ লাখ, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিংয়ে আড়াই লাখ থেকে ৫ লাখ, ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) ৩ লাখ থেকে ৮ লাখ এবং সাংবাদিকতায় স্নাতক পড়তে আড়াই লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা ব্যয় হয়। এ বছর এগুলো আরো বাড়তে পারে। গুটিকয়েক বিশ্ববিদ্যালয়ে এর চেয়ে কম খরচে লেখাপড়ার সুযোগ আছে।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষাবিদ প্রফেসর মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, সরকার কোনোভাবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর কর্তৃত্ব রাখতে পারছে না। হয় তারা রাজনৈতিক প্রভাবশালী, না হয় অবাধ্য। এ থেকে বোঝা যায় কেন ইউজিসির প্রস্তাব আলোর মুখ দেখেনি।
ইউজিসির এক সদস্য জানান, কমিশনে তার যোগদানের আগে একটি নীতিমালা নিয়ে কাজ করা হয়েছিল। সেটা বাস্তবায়ন হয়নি। সবার সহযোগিতা না থাকলে এমন নীতিমালা করাও অসম্ভব।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকদের সংগঠন প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক সদস্য বলেন, সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মান এক নয়। অবকাঠামো সুযোগ সুবিধা, শিক্ষকদের মান ও বেতন ইত্যাদি কারণে শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও টিউশন ফিয়ের তারতম্য হয়। এক্ষেত্রে নীতিমালা করে নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই কষ্টসাধ্য বলে মনে করেন তিনি।
দেশে অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ১০৩টি। জাতীয় ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া উচ্চশিক্ষা গ্রহণকারী মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ৬৩ শতাংশ অর্থাৎ ৪ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
সূত্র : আমাদের সময়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়