শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ২৫ জুলাই, ২০১৮, ১১:৩৯ দুপুর
আপডেট : ২৫ জুলাই, ২০১৮, ১১:৩৯ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

খুলনার আধুনিক রেল স্টেশন চালু হচ্ছে সেপ্টেম্বরে

শরীফা খাতুন শিউলী, খুলনা: খুলনার বহু কাঙ্খিত দৃষ্টি নন্দন ও আধুনিক রেল স্টেশনের নির্মান কাজ এ বছরের আগষ্টে সম্পন্ন হচ্ছে। নির্মান কাজ শেষে সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্টেশনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।

রেলওয়ে মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিজান এমপি বুধবার দুপুরে স্টেশন পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যম কর্মীদের এ তথ্য জানান।
এদিকে, আধুনিক রেল স্টেশন চালু হলে খুলনার সঙ্গে বাংলাদেশ-ভারত রেল যোগাযোগ আরও সহজ হবে।

সেই সঙ্গে ভারত যাত্রীদের খুলনা স্টেশনেই ইমিগ্রেশন ও চেকিংসহ সকল ভ্রমণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন এবং ভাড়া কমানোর বিষয়েও দু’ দেশের মধ্যে আলোচনা করে নিরাপদ ও সহজ যাত্রার দ্বার উন্মোচন করা হবে। এ স্টেশনে একসঙ্গে ৬টি ট্রেন প্রবেশ এবং বের হওয়ার ব্যবস্থা থাকায় প্রতিদিন প্রায় ৯ থেকে ১০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করতে পারবে বলেও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

পরিদর্শন শেষে মিজানুর রহমান মিজান এমপি বলেন, আরও আগেই আধুনিক ও দৃষ্টি নন্দন এ স্টেশনটি চালু হওয়ার প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু সেটিতে বিলম্ব হওয়ায় খুলনার মানুষ কিছুটা হতাশ হয়েছে। তবে, সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্টেশনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।

তিনি বলেন, স্টেশনটি আরও দৃষ্টি নন্দন ও এর সৌন্দর্য্য বর্ধনের লক্ষে হাউজ বিল্ডিং’র ভবনটিও সরিয়ে ফেলা হবে। এ স্টেশন থেকেই বাংলাদেশ-ভারত নিরাপদ রেল যোগাযোগের মূল সেতুবন্ধ তৈরি হবে। যাত্রা আরও সহজ করতে ওয়ানস্টপ চেকিং ব্যবস্থা এবং ভাড়া কমানোর জন্যও পর্যায়ক্রমে উদ্যোগ নেয়া হবে।

এ সময় রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের জিএম মুজিবুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী (অতি.) আবু জাফর মিয়া, প্রধান বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার সাহা ও আধুনিক রেল স্টেশন নির্মান প্রকল্পের পরিচালক রিয়াদ আহমেদসহ রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের জিএম মুজিবুর রহমান বলেন, কনসালটেন্ট প্রতিষ্ঠান মডার্ণ ইঞ্জিনিয়ার্স এন্ড প্লানার্সের ডিজাইনে ক্রটি থাকার কারণেই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে বিলম্ব হয়েছে। এ কারণে কনসালটেন্ট প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের এবং রেল কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানটিকে কালো তালিকাভূক্ত করেছে। আগষ্টে শতভাগ কাজ সম্পন্ন হলে সেপ্টেম্বরে উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে স্টেশনটি চালু করা সম্ভব হবে বলেও প্রত্যাশা করেন তিনি।

নির্মাণ ব্যয়, নিম্নমানের স্লিপার এবং রেলের জায়গা অবৈধ দখল সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে রেলওয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, নির্মাণ ব্যয় ৬০ কোটি টাকা অতিক্রম করছে না। ২০০৯ সালে আমদানিকৃত স্লিপার কিছুটা পুরাতন হওয়ায় ত্রুটি ধরা পড়েছে। তবে, ত্রুটিপূর্ণ স্লিপার পরিবর্তন করা হচ্ছে। এছাড়া অবৈধ দখলদারদের বিষয়েও কর্তৃপক্ষ সতর্ক রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

জানা যায়, নতুন রেল স্টেশনটি করা হয়েছে তিনতলা বিশিষ্ট। প্রথম তলায় স্টেশন ভবনে থাকছে ৬টি টিকিট কাউন্টার, ওয়েটিং রুম ও সহকারী স্টেশন মাস্টারের রুম। দ্বিতীয় তলায় থাকছে স্টেশন মাস্টারের রুম, রেস্টুরেন্ট, ব্যাংকের শাখা, নারী-পুরুষের জন্য আলাদা ওয়েটিং রুম, ফাস্ট ফুড এবং রেল কর্মকর্তাদের জন্য আলাদা কক্ষ। তৃতীয় তলায় থাকছে রেলওয়ের প্রকৌশলীদের অফিস কক্ষ। এ স্টেশন চালু হলে একসঙ্গে ৬টি ট্রেন স্টেশনে প্রবেশ এবং বের হতে পারবে। থাকছে সিটিং ব্যবস্থা, সিসি ক্যমেরা ও অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা। স্টেশন চত্বরে থাকছে দৃষ্টি নন্দন ফুলের বাগান এবং অধিক সংখ্যক গাড়ি পার্কিং’র ব্যবস্থাও।

উল্লেখ্য, ব্রিটিশ আমলে নির্মিত খুলনার পুরানো রেল স্টেশনের বদলে একটি আধুনিক রেল স্টেশন নির্মানের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল খুলনাবাসীর। এর আগে চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে আধুনিক রেল স্টেশন নির্মাণ সম্পন্ন হলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় খুলনায় নির্মাণ কাজ শুরুতেই বিলম্ব হয়।

কয়েকবার দরপত্র জটিলতাসহ নানা কারণে সময়ক্ষেপণের পর বহু কাঙ্খিত আধুনিক রেল স্টেশন নির্মাণ কাজ ২০১৫ সালের এপিলে শুরু হয়। ৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৮ মাস মেয়াদে প্রকল্পের কাজ শেষ করার সময়সীমা নির্ধারিত ছিল। কিন্তু ঠিদাকারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন নির্ধারিত সময় কাজ শেষ করতে না পারায় দফায় দফায় সময় বৃদ্ধির কারণে নির্মাণ ব্যয় ৫৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ৬১ কোটি ২৭ লাখ টাকা।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হওয়া এবং প্রকল্পে নতুন পানির ওভার হেড ট্যাঙ্কি যুক্ত হওয়ায় অতিরিক্ত ৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয় বেড়ে যায়। এরই মধ্যে কনসালটেন্ট প্রতিষ্ঠানের ডিজাইনে ত্রুটির কারণে নির্মানাধীন ২নম্বর প্লাট ফর্মের ছাদে ফাঁটল দেখা দেয়। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটিকে কালো তালিকাভূক্ত করে বুয়েটের প্রকৌশলীদের পরামর্শে প্লাট ফর্মের ছাদের দু’দিকে নতুন করে ভীম নির্মাণ করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়