মুনজের আহমেদ চৌধুরী: মাহমুদুর রহমানের অপরাধ, সরকার বিরোধী লেখালেখি করা। তার লেখালেখির জবাব তো তাকে কারাগারে নিয়ে, তার পত্রিকা বন্ধ করে, দেশের জেলায় জেলায় মামলা দিয়ে সরকারী দল দিচ্ছে। অথচ, কলমের বা ভিন্নমতের জবাব সভ্য সমাজে কলম বা ভিন্নমত দিয়েই হওয়া সমীচিন। একমত না হবার অপরাধে পিটিয়ে রক্তাক্ত করতে হবে ? এ কোন অসভ্যতা?
মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহীতার মামলা অাছে। অপরাধ প্রমান হলে অাইন তার বিচার করবার কথা।
অাজ তথ্য মন্ত্রীর নিজ জেলা কুষ্টিয়ায় জামিন নিতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা। হামলার অাগে কয়েক ঘন্টা অাদালত চত্বরে অবরুদ্ধ ছিলেন তিনি। সেসময় পুলিশ, প্রশাসন, অাদালত সবাইকে বিষয়টি জানানোও হয়েছিল। হামলার ভিডিওতে দেখলাম, পুলিশ নিরাপত্তা দেবার কথা বলে তাকে গাড়িতে তুলে দেয়। তাৎক্ষনিক পুলিশের উপস্থিতিতেই হামলা হয়।
এভাবেই চলছে গনতন্ত্র, বাক স্বাধীনতা...বাংলাদেশে।
বিচারালয়ে যেখানে নিরাপত্তা নেই, সেখানে কি ন্যায় বিচারের সুযোগ থাকে ?
অামি অবশ্যই একজন সম্পাদক হয়ে সাংবাদিকতার নামে মাহমুদুর রহমানের একপাক্ষিক দৃষ্টিভঙ্গির, মতকানা লেখালেখির সাথে ভিন্নমত পোষন করি। সরকার তার অামার দেশ বন্ধ করেছে, মাহমুদুর রহমান বছরের পর বছর কারাবন্দী থেকেছেন।
কিন্তু, এমন পিটিয়ে মারার অসভ্যতাকে কোন বিবেকে নীরবতা দিয়ে সমর্থন করব? তাও অাবার অাদালত চত্বরে।
অাচ্ছা, দেশে তো কোন বিরোধীদল নাই, সরকারও এত নতুন নতুন অাইন করছে। গনমাধ্যম সহ সরকারের সমালোচনা নিয়ন্ত্রনই যার লক্ষ। এত কিছু না করে, নতুন একটা অাইন বা অধ্যাদেশ জারি করে সরকারের সমালোচনা একেবারে বন্ধ করে দিলেই তো পারে তারা।
অার অবশ্য দেশে এখন নতুন এক সংস্কৃতির সৃষ্টি করেছেন সরকারের সুবিধাভোগী বুদ্ধিবেশ্যারা। অন্যায়ের সমালোচনা করলে তখন তারা বলেন, বিএনপির অামলে তো এর চেয়েও খারাপ হয়েছিল, হেন তেন সব নেতিবাচক কু-যুক্তি।
অামার কথা হল, বিএনপি খারাপ করেছে বলেই কি অারো খারাপের নজীর সৃষ্টি করতে হবে? বিএনপির নেতৃত্বে জোট সরকারের ভূলের ফল অাজকের বিএনপির এ পক্ষাঘাতগ্রস্থ অবস্থা। অার দলটি তো ক্ষমতায় নেই প্রায় এক যুগ, বিরোধীদলেও নেই।
অার সভ্যতা, সমাজের জন্য লজ্জাজনক ঘটনাটি ঘটার দেড় ঘন্টা পরও দেশের শীর্ষ সংবাদপত্রগুলো তাদের অনলাইনে এ ব্যাপারে এক লাইনের সংবাদই প্রচার করেনি। এ হল দেশের গনমাধ্যমের স্বাধীনতার চিত্র।
পরিচিতি: বাংলা ট্রিবিউন এর একজন সংবাদকর্মী। লেখাটি তার ফেসবুক থেকে সংগ্রহীত।
আপনার মতামত লিখুন :