ইকবাল আনোয়ার: এক তরুণ ডাক্তার অামাকে বললো- স্যার রাতের বেলায় একা ডিউটি করি, ভয় পাই।কেন?
স্যার মনে করেন সেই সময় একজন মুমুর্ষ রোগী অাসলো, তিনি হয়তো হার্টের পেসান্ট, অথবা স্টোক নিয়ে এসেছেন, তার সাথে যদি জাদরেল একদল অাসেন, অাসবেনই তো, অাত্মীয় স্বজন, এসে হামসি তুমসি করেন, অামি তো অাপ্রাণ চেষ্টা করবো, কি ভাবে তার চিকিৎসা করে ভাল করা যায়, কিন্তুু অাল্লাহ না করুন, এতো সবের পরও তার মৃত্যু হলো, তা হলে অামার অবস্থা কি!
কোন ইনজেকশন দিলাম বা কোন ম্যানিপুলেশন করলাম, এ সবের কারণে রোগী মারা গেছে বলে যদি ভাংচুর বা মারধর শুরু করে, তবে কি হবে, কাকে পাবো তখন!
স্যার, অামি অনেক কষ্টে বাপমার কষ্টের টাকায় ডাক্তার হয়ে এখন এভাবে রাত কাটাই, অাল্লাহরে ডাকি। ডিউটি না করলে খাবো কি? ডাক্তারদের খতিয়ান নেন, ক’জন ডাক্তার ধনী, অার ক’জন অন্য পেশার লোক ধনী! বাদ দেন স্যার ধনের কথা, অামার পেশায় মানুষের সেবা করার সুযোগ অাছে, এ জন্য সোয়াবের অাশায় অাম্মা ডাক্তার হতে বলেছিলেন, সারা রাত জেগে সেবা করে, হ কামাই অ করে এমন কয়টা পেশা অাছে ঈদেও রাত জাগে! এ সবের জন্য মা অামারে কসাই অার দুর্বৃত্ত্ব বাইলা মা ( মা অামার ওপারে ভালো থাকো), অামি তো এখন কনফিডেন্স নিয়ে চিকিৎসাও দিতে পারছিনা, ভয়ের মধ্যে কি মেধা খোলে!
তারপর সে বললো, হা মানি স্যার, চিকিৎসকের দোষে রোগীর ক্ষতি হয়, হতে পারে, তার জন্য সুষ্ঠু তদারকি ও বিচারেরর ব্যবস্থা হোক, কঠিন সাজা হোক দোষীর, কেননা জীবন নিয়ে খেলা খুব অন্যায়, কিন্তুু বিচারের অাগেই হেন্ডকাপ! এইটা কেমন কথা।
অামি বললাম, তুমি তোমার কর্ম শতভাগ সততা ও নিষ্ঠার সাথে করে যাও, অাল্লাহ হেফাজত করবেন।
অার বললাম, তোমাদের কথা অামি লিখবো।
সেবা গ্রহিতাদেরও বলি, দয়া করে চিকিৎসকদের কাজ করার সুযোগ দিন, তার ভালো কাজের প্রশংসা করুন, তা হলে তার মেধা অারো বিকশিত হবে, অারো সেবার মনোভাব তৈরী হবে। অার কোন অভিযোগ খাকলে অবশ্যই তা নিয়মতান্ত্রিক ভাবে করুন। প্রতিটি জীবন মুল্যবান।
লেখক: পদার্থ বিজ্ঞানী
আপনার মতামত লিখুন :