প্রিয়াংকা আচার্য্য ও কায়েস চৌধুরী: সোমবার দুপুরে ফটোগ্রাফার জীবন আহমেদের ফেসবুকে দেয়া একটি যুগলের চুম্বনের ছবি গত ২৪ ঘণ্টায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তুলেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এরই মধ্যে মঙ্গলববার দুপুরে তিনি জানান, তার আইডি হ্যাক হয়েছিল। আর তার ফেসবুক ওয়ালে সেই হ্যাকার স্ট্যাটাস দেয়- আজ থেকে সাংবাদিকতা থেকে বিদায় নিলাম। কিছুসময় পর জীবন আহমেদ নিজের আইডি উদ্ধার হওয়া নিয়ে যে পোস্ট দেন তা হলো- ‘আমার ফেসবুক আইডি হ্যাক হবার ২ ঘন্টা পর ফেরত পেলাম। নিচের এই ষ্ট্যাটাস আমার দেয়া না। কেও বিভ্রান্ত হবেন না। আমার আইডি থেকে বেশ কিছু পোষ্ট ও গায়েব দেখছি। ধন্যবাদ আমার আইটি স্পেশালিষ্ট বন্ধুকে আইডি ফেরত পেতে সহযোগীতা করবার জন্য।’
এদিকে কালের কণ্ঠ অনলাইনে প্রকাশিত এক খবর বলা হয়, মঙ্গলবার সকালে জীবন আহমেদ নিজ পেশার লোকজনে দ্বারা হামলার শিকার হন। টিএসসির যে স্থানে ছবিটি তোলা হয়েছে সেখানেই তাকে প্রকাশ্যে মারধর করা হয়েছে জীবন আহমেদকে। লাঞ্ছনাকারীরা সকলেই আলোকচিত্রশিল্পী বলে জানা গেছে। একটি ইংরেজি দৈনিকের এক আলোকচিত্র সাংবাদিকেরও নাম যুক্ত রয়েছে এই ঘটনায়।
তিনি জানান, আমি কার বিরুদ্ধে কথা বলবো? তিনি বলেন, আমার পেশার লোকেরাই আমাকে মেরেছে। আমি কিছু বলতাম না তারা যদি আমাকে আড়ালে নিয়ে গিয়ে মারধর করতো। কিন্তু তারা আমাকে মেরেছে প্রকাশ্যে টিএসসিতে।
তিনি আরও বলেন, আমাকে মারার সময় তারা আমাকে বলছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের নির্দেশে মারছে। আমি নাকি কলঙ্কিত করেছি আলোকচিত্রশিল্পী সমাজকে। কিন্তু প্রক্টর স্যার একটু আগে ফোন দিয়ে বললেন, এরকম নির্দেশনা তিনি দেননি দিতে পারেন না। আমিও জানি তারা গায়ের ঝাল মিটিয়েছে।
তবে সরোজমিনে গিয়ে জানা যায়, টিএসসি চত্বরে ভাইরাল হওয়া ছবিটি ব্যাপারে মানুষের মাঝে তেমন একটা প্রতিক্রিয়া নেই। বোঝা যায় বিষয়টি মানুষ খুব স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছে। তেমন খারাপ ভাবে দেখছে না। বরং তারা বলছে এটা ভালোবাসারই বহিঃপ্রকাশ ।
টিএসসি চত্বরের সামনের চায়ের দোকানের মালিক মুকতার জানায়, ভাইরাল হওয়া ছবিটা আমি দেখেছি এবং শুনেছি। এটা তাদের একান্ত ব্যাপার । তাদের মন চাইছে করছে। এটাতো আর এমন হয়নি যে জোর পূর্বক ছেলেটি মেয়েটিকে চুম্বন করেছে।
চা দোকানের মালিক দুলাল জানায়, তারা কখন চুম্বন করেছে আমি দেখি নাই। তারা দুজন বৃষ্টিতে ভিজছিল। আমি আমার কাজে ব্যাস্ত ছিলাম। এসম্পর্কে আমি আর কিছু জানি না। শুনালাম চুম্বনের ছবিটি ভাইরাল হয়েছে।
শিপন নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, এটা তাদের একান্তই ব্যাক্তিগত ব্যাপার। ছবিটি খারাপভাবে দেখার কিছু নাই।
পূর্ব-পশ্চিম নামে একটি পোর্টালের ফটো সাংবাদিক জীবন আহমেদ দৈনিক আমাদের অর্থনীতিকে জানায়, দুপুর আড়াইটার দিকে তাদের দুজনকে দেখেছি চায়ের দোকানের সামনে বসে থাকতে। প্রায় ২০ মিনিট যাবত তারা বৃষ্টিতে ভিজছিল। এর মধ্যে তারা বেশ কয়েক বার একে অপরকে চুম্বন করেছে। সেটা দেখেই আমি একটা ক্লিক করলাম।
ছবিটি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভালোবাসা বিশুদ্ধ এবং প্রকাশ্যই হওয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি’।
তিনি বলেন, আমার আগে বেশ কিছু আলোচিত ছবি ভাইরাল হয়েছে। অন্যতম কাটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকের সামনে আঙ্গুল নাচিয়ে হুমকি দেওয়ার ছবি, অভিজিৎ রায়ের রক্তাক্ত ছবি। তবে এই ছবিটি যে এতো ভাইরাল হবে বুঝি নাই।
তিনি আরও বলেন, ফেসবুকে কে বা কারা বলেছে ছবিটি কোন একাট শর্টফ্লিমের। এ কখাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। এটা পুরোপুরি ন্যাচেরাল ছবি।
আপনার মতামত লিখুন :