শিরোনাম
◈ গাজীপুরে কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে চীনা নাগরিকের মৃত্যু ◈ প্রধানমন্ত্রীর সৌদি আরব ও গাম্বিয়া সফর বাতিল ◈ এ বছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫.৭%: আইএমএফ ◈ ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জের দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, ৪ পুলিশ সদস্যসহ আহত ২০ ◈ মার্চ মাসে সারাদেশে ৬২৪ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫৫০, আহত ৬৮৪  ◈ ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ককে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যেতে হবে: হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ◈ অস্ত্রসহ কেএনএফের আরও ৯ সদস্য আটক ◈ পাকিস্তানের মুশতাক আহমেদ বাংলাদেশের নতুন স্পিন কোচ ◈ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কারিকুলাম যুগোপযোগী করার তাগিদ রাষ্ট্রপতির ◈ সরকারের অব্যবস্থাপনার কারণেই সড়ক দুর্ঘটনার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে: মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত : ২৫ জুলাই, ২০১৮, ০৯:৩৭ সকাল
আপডেট : ২৫ জুলাই, ২০১৮, ০৯:৩৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আব্দুল হকের বাঁশের বাঁশি

ডেস্ক রিপোর্ট : প্রথমে ঢাকায় বিস্কুটের কারখানায় চাকুরি। সেখানে দিন শেষে রাতের অবসরে শখ করে বাঁশিতে সুর তুলতেন আব্দুল হক। নিভৃত পল্লী থেকে জীবিকার তাগিদে শহরে গিয়ে আর মন টেকেনি। কারখানার চাকুরি ছেড়ে গাঁয়ের ছেলে গাঁয়ে ফিরে আসেন। তারপর কিছুদিন কৃষি শ্রমিক।

বাড়ির পাশে বিষখালী নদী, দিগন্তজোড়া ফসলের মাঠ। পাখির উজাড় উড়াল আর পাখির সুর তাকে বিমোহিত করত। সেই সাথে নদী ও নৌকার দেশের মানুষ আব্দুল হক পানিমূলেই স্থায়ী হয়ে ওঠেন। মাঝে মাঝে নদী তীরের বৃক্ষ ছাঁয়ায় বসে বাঁশের বাঁশি বাজাতেন। নবম শ্রেণী পাসের পর স্কুল থেকে ঝড়ে পড়েন তিনি। দরিদ্র কৃষকের ছেলে বলে কৃষির সঙ্গেই সখ্যতা গড়ে ওঠে। তবু বাঁশির সুর তাঁরে টানতো। সুরের আবহ পরানের গহীন অবধি টানতো তাঁর।

আব্দুল হকের আর কৃষিকাজে মন নাই। পরিবারের কাছে বেয়াড়া আর অকর্মা হয়ে ওঠেন। একদিন বাঁশি তারে ঘর ছাড়া করে দেয়। বাঁশির সুরই তারে গৃহত্যাগে বাধ্য করে। ভাবেন তিনি বাশুড়িয়া হবেন। কিন্তু ওস্তাদ কই? বরগুনার তালতলীর বাঁশুড়িয়া সেকেন্দার আলীর খোঁজ মেলে। তারেই ওস্তাদ মানেন আব্দুল হক। তালিম নেন। সত্যি সুর আসে আব্দুল হকের বাঁশিতে। এরপর একদিকে সাধনা চলে আবার অন্যদিকে উপকূলে নানা অনুষ্ঠানের বাশিওয়ালার ডাক আসে। কিছু টাকা পয়সাও মেলে।

যে বাঁশির জন্য একদা গৃহত্যাগ করেছিলেন সেই বাঁশের বাঁশি নিয়ে ঘরে ফেরেন তিনি। পরিবারের স্বজনরা তাকে সংসারী করে দেন। বাঁশিওয়ালার একদিন বিয়ে হয়ে যায় কোহিনুর বেগম নামে এক কণ্যার সাথে। তবু বাঁশি আব্দুল হককে ছাড়েনা। জমি জিরেত যা আছে তা দিয়ে সারাবছর আহারের সংস্থান হয়না। কি আর করা উপায়হীনের তো একটা উপায় থাকেই। ভাবেন যেহেতু বাঁশিতে সুর তুলতে জানেন তাই বাঁশিতেই পসরার ভাবনা আঁটেন তিনি।

এরপর কুমিল্লা থেকে বাঁশের বাঁশি কিনে প্রথমে মেলায় আর হাট বাজারে বাজারজাত শুরু করে দেন। উপকূলের হাটবাজারের বাঁশি বাজিয়ে বাঁশের বাঁশি বিক্রি শুরু করেন। মাথায় কালো টুপি। কাঁধে কাপড়ের ব্যাগে বাঁশের বাঁশির পসরা নিয়ে ঘোরেন। সুরের মূর্ছনার সাথে অর্থ আসে। ব্যবসা পাতি মন্দ না।

বরগুনার বেতাগী উপজেলার সরিষামুড়ি উনিয়নের গাবতলা গ্রামের বাশিওয়ালা আব্দুল হক টানা ৩০ বছর উপকূলীয় হাট বাজারে বাঁশি বাজিয়ে বাশের বাশি বিক্রয় করে আসছেন। এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে আব্দুল হক সংসারী বটে।

আব্দুল হক বলেন, ‘বাঁশি বাজাই, বাঁশি বেচি খাই দাই আর উপকূল ঘুরি।’

আব্দুল হকের জীবনে আর কোন স্বপ্ন নাই। এই বাঁশি বাজাতে বাজাতে একদিন উপকূলের পথেই মরে যেতে চান!

আমি টের পাই আব্দুল হকের পূর্বপুরুষ আসলে বাউল। বাঁশুরিয়া আমায় এমন সাক্ষ্য দেয়।

সূত্র : সারাবাংলা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়