শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ২৫ জুলাই, ২০১৮, ০২:০৪ রাত
আপডেট : ২৫ জুলাই, ২০১৮, ০২:০৪ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আনিসুল হকের মৃত্যুতে থমকে আছে উত্তর সিটির উন্নয়ন পরিকল্পনা

শাকিল আহমেদ: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকা ঢেলে সাজাতে বেশ কয়েকটি বড় পরিকল্পনা নিয়েছিলেন প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক। কিন্তু তার মৃত্যুর পরে নানা জটিলতায় থমকে আছে এসব পরিকল্পনা। তবে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে চেষ্টা চলছে বলে জানান প্যানেল মেয়র ওসমান গণি।

উত্তর সিটিকে একটি আধুনিক নগরী হিসাবে গড়ে তুলতে কয়েকটি বড় উদ্যোগ নিয়েছিলেন আনিসুল হক। এর মধ্যে জনদুর্ভোগ কমাতে চার হাজার বাস নামানো, ইউটার্ন নির্মাণ, তেজগাঁওয়ে ট্রাকস্ট্যান্ড উচ্ছেদ, গাবতলীতে ৫২ একর জমি উদ্ধার, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্লান্ট নির্মাণ, পার্ক ও খেলার মাঠ নির্মান, শৌচাগার নির্মান, এলইডি বাতি ও সিসি ক্যামেরা স্থাপন, গ্রিন ঢাকা ক্লিন ঢাকা অন্যতম। কিন্তু তার মৃত্যুতে এসব উদ্যোগ এখন মুখ থুবরে পড়েছে। এছাড়া শুরু করে যাওয়া প্রকল্পগুলোও চলছে ঢিমেতালে।

এবিষয়ে নগর পরিকল্পনাবিদ মোবাশ্বের হোসেন বলেন, প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের নেওয়া উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন করা না হলে নগরবাসী বঞ্চিত হবেন। ঢাকা শহরে আনিসুল হকের মতো শক্তিশালী নেতৃত্ব দরকার। যারা বর্তমানে দায়িত্বে আছেন তারা চাইলে উদ্যোগগুলো বাস্তবে রূপ দিতে পারেন।
উদ্যোগ গুলোর বর্তমান অবস্থা:

সবুজ ঢাকা:

২০১৬ সালের মে মাসে উত্তরায় আনুষ্ঠানিকভাবে ‘সবুজ ঢাকা’ নামের একটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন আনিসুল হক। প্রকল্পের অংশ হিসেবে উত্তরা এলাকায় ২৯ হাজার গাছের চারা লাগানো হয়। এরপর তার মৃত্যুতে এই উদ্যোগ মুখ থুবড়ে পড়েছে।

চার হাজার বাস: পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে রাজধানীর শ’খানেক বাস কোম্পানি তুলে দিয়ে পাঁচ-ছয়টি কোম্পানির অধীনে চার হাজার বাস চালানোর পরিকল্পনা ছিল। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে প্রয়াত মেয়র পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠকও করেন, কিন্তু বাস্তবায়নের সুযোগ পাননি তিনি।

ইউ টার্ন প্রকল্প: ২০১৫ সালে সাতরাস্তা থেকে উত্তরা পর্যন্ত ১১টি ইউটার্ন নির্মাণের পরিকল্পনা করেন তিনি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর কাছ থেকে জমি বুঝে না পাওয়ায় বর্তমানে উত্তরার র‌্যাব-১ এর কার্যালয় ও রাজলক্ষ্মী কমপ্লেক্স বাদে বাকি নয়টি জায়গায় নির্মাণকাজ বন্ধ আছে।

এলইডি বাতি ও সিসি ক্যামেরা: ডিএনসিসি এলাকাকে আলো ঝলমলে ও নিরাপদ করতে এলইডি বাতি ও সিসি ক্যামেরা স্থাপনের স্বপ্ন দেখেছিলেন প্রয়াত মেয়র। ৪৪২ কোটি ব্যয়ের প্রকল্পটি অনুমোদনও পায় একনেকে। কিন্তু মেয়র মারা যাওয়ার পর এখনো প্রকল্পের কাজ শুরু হয়নি।

সমন্বয় সভা: রাজধানীবাসীকে সেবাদানকারী ২৬টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাজের সমন্বয় করতে নিয়মিত সভা করতেন আনিসুল হক। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পরিপত্র জারি করার জন্য ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট ২৬টি সেবাদানকারী সংস্থার সঙ্গে প্রথম সমন্বয় সভা করেন তিনি। ২০১৭ সালের ২ জানুয়ারি ডিএনসিসি, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), ঢাকা ওয়াসা এবং জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের মধ্যে আরেকটি সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মেয়র মৃত্যুর পর আর কোনো সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়নি।

মোনায়েম খানের বাড়ির উদ্ধার করা জায়গা: ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী মোনায়েম খানের পরিবারের অবৈধ দখল থেকে ১৪ কাঠা জমি উদ্ধার করে ডিএনসিসি। সেখানে নতুন করে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন আনিসুল হক। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে জায়গাটির নকশা প্রণয়নও করান। পরে কাজটির কোনো অগ্রগতি হয়নি।

গাবতলীর জায়গা উদ্ধার: গত বছর গাবতলী এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালীদের দখলে থাকা ৫২ একর জমি উদ্ধার করেন মেয়র আনিসুল হক। এখানে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্লান্ট নির্মাণের পরিকল্পনা ও মেকানিক্যাল ওয়ার্কশপ, বাস, ট্রাক ডিপোসহ কিছু স্থাপনা করার পরিকল্পনা ছিল আনিসুল হকের। গত বছরের ৩০ জুলাই প্রকল্পটি উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ করেছিল ডিএনসিসি। মেয়র আনিসুল হক শারীরিকভাবে অসুস্থবোধ করায় নির্ধারিত অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়। আনিসুল হক লন্ডন থেকে ফিরলে প্রকল্পটি উদ্বোধন করার কথা ছিল। আনিসুল হক ফেরেননি, প্রকল্পটিও চালু হয়নি।

এছাড়া ১০০ গণশৌচাগারের কয়েকটি নির্মান করা হলেও বাকিগুলোর জন্য স্থান না পাওয়া ধিরগতীতে চলছে এ প্রকল্প। তেজগাঁও রেলক্রসিং পর্যন্ত সড়ক ও আশপাশের সড়কগুলোতে অবৈধভাবে ট্রাক রাখার স্থান দখলমুক্ত করলেও তার প্রয়াণের পর সাতরাস্তা থেকে তেজগাঁও রেলক্রসিং পর্যন্ত সড়কটিতে বর্তমানে একটি-দুটি করে ট্রাক ফিরে আসতে শুরু করেছে।

ডিএনসিসির প্যানেল মেয়র ওসমান গনি বলেন, আমরা আনিসুল হকের নেওয়া পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়নের জন্য কাউন্সিলর থেকে শুরু করে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ করে যাচ্ছে। আনিসুল হক কিছু দূরদর্শী উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে সেসব কাজ করতে গিয়ে কিছু জটিলতা তৈরি হচ্ছে। তাই বলে কাজগুলো থেমে গেছে বলা যায় না চলমান আছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়