শাকিল আহমেদ : এবার কোরবানি ঈদে রাজধানির ২০ স্থানে বসবে পশুর হাট। এরই মধ্যে প্রথম দফায় ১২ হাটের ইজারা সম্পন্ন করেছে দুই সিটি করপোরেশন। কিন্তু দ্বিতীয় দফায়ও ডিএসসিসির ৭ হাটে কোন দরপত্র জমা পড়েনি এবং আশিয়ান সিটি হাট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিএনসিসি।
আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে রাজধানীতে চলছে হাট ইজারারা প্রস্তুতি। সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, এবার কোরবানি উপলক্ষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় ১৩টি ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় ৭টি অস্থায়ী পশুর হাট বসানো হবে। এছাড়া গাবতলীর স্থায়ী পশুর হাটটিও কোরবানির জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে।
এখন পর্যন্ত ঢাকা উত্তরে ৬টি হাট ৯ কোটি ৫৩ লাখ ৯২ হাজার ৫৬২ টাকায় ইজারা দেয়া হয়েছে। এদিকে তিন বারেও কোন দরপত্র না পড়ায় আশিয়ান সিটিতে এবছর পশুরহাট বসানোর সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে ডিএনসিসি। তা ছাড়া খুন খারাবির আশঙ্কায় এবছর আফতাব নগরে হাট না বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ যা গত বছর ইজারা দেয়া হয়েছিলো ১ কোটি ২০ লাখ টাকায়।
এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, দরপত্র না পড়ায় আশিয়ান সিটিতে হাট বসানোর সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে। এবং নতুন করে তিন স্থানে হাট বসানোর জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞতি দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে বসুন্ধরার আশপাশের খালি জায়গার হাটটির জন্য ৬টি ও তেজঁগাও পলিটেকনিক ইনিষ্টিটিউট মাঠের হাটটিতে ৪টি দরপত্র জমা পড়েছে। ময়নারটেক হাটের জন্য এখনো কেউ দরপত্র কিনেনি। এই তিনটি হাটে ব্যপারে আগামিকাল সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণে ১৩ টি পশুর হাটের মধ্যে ৬টি হাটের ইজারা সম্পন্ন হয়েছে মাত্র ২ কোটি ৭০ লাখ ৯৭ হাজার ১৫০ টাকায়। এছাড়া মেরাদিয়া পশুর হাট, ব্রাদার্স ইউনিয়ন বালুর মাট, ধুপখোলা, ধনিয়া, আরমানিটোলা, কমলাপুর ষ্টেডিয়ামের পাশের খালি জায়গা, সাদেক হোসেন খোকা মাঠে প্রথম দফায় দরপত্র বিক্রি হলেও কেউ জমা দেয়নি। গত ১৯ জুলাই দ্বিতীয় দফায়ও টেন্ডার বক্সে কোন দরপত্র জমা পড়েনি। আগামী ৩০ তারিখ দরপত্র জমার শেষ তারিখ এ দিন দরপত্র জমা না পড়লে এই হাট গুলো থেকে খাস আদায় করা হতে পারে। আর এতে কোটি টাকার রাজস্ব হারাবে ডিএসসিসি। কারন গতবছর মেরাদিয়া হাটের ইজারা হয়েছিলো ১ কোটি ১ লাখ ৫৫ হাজার, ধনিয়া হাট ২ কোটি ২০ লাখ ও ধুপখোলা হাটটি ৬১ লাখ ৫০ হাজার টাকায়। এছাড়া ব্রাদার্স ইউনিয়ন বালুর মাট থেকে খাস আদায় করা হয়েছে মাত্র ২১ লাখ ৩০ হাজার, আরমানিটোলা হাট থেকে ১ কোটি ৫০ লাখ, কমলাপুর ৩০ লাখ ও সাদেক হোসেন খোকা মাঠ থেকে ১৫ লাখ টাকা।
একাধিক ইজারাদার বলেন, হাট ইজারা দেয়ার ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৩টি দরপত্র জমা পড়তে হয়। সাধারণ ইজারাদাররা দরপত্রই কিনতে পারেননি। দু-একজন কিনলেও ভয়ে জমা দিতে পারেননি। ফলে প্রভাবশালীচক্র পছন্দমতো দর দিয়ে হাটগুলো ইজারা নিয়েছে। আবার কয়েকটি হাটের ক্ষেত্রে কোনো দরপত্রই জমা পড়েনি। সেগুলো অতীতের মতো ঈদের আগ মুহূর্তে দলীয় লোকদের দিয়ে পরিচালনা করা হতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এই বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আব্দুল মালেক বলেন, আমরা ৩০ তারিখ পর্যন্ত দেখবো যদি কোন দরপত্র না পড়ে তা হলে নিয়ম অনুযায়ি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এবিষয়ে আগেই কোন মন্তব্য করতে চাই না। আর সিন্ডিকেটের বিষয়ে আমার কিছু যানা নেই।
আপনার মতামত লিখুন :