শিরোনাম
◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট ◈ তীব্র গরমে স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা আরও ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা ◈ সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত ◈ সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে, পতন অনিবার্য: রিজভী  ◈ সরকারের বিরুদ্ধে অবিরাম নালিশের রাজনীতি করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের ◈ বুশরা বিবিকে ‘টয়লেট ক্লিনার’ মেশানো খাবার খাওয়ানোর অভিযোগ ইমরানের ◈ গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী ◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের

প্রকাশিত : ২৫ জুলাই, ২০১৮, ০১:৫০ রাত
আপডেট : ২৫ জুলাই, ২০১৮, ০১:৫০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের আবাসন সংকট থাকছে না

আসাদুজ্জামান সম্রাট : সিনিয়র সচিব, সচিব ও গ্রেড-১ কর্মকর্তাদের দীর্ঘদিনের আবাসন সংকট সমাধান হতে যাচ্ছে। ২৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে তাদের জন্য ১১৪টি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হচ্ছে। যাতে সুইমিংপুল, শরীরচর্চা কেন্দ্র, লন টেনিস কোর্ট, ব্যাডমিন্টন কোর্ট, পেভড ওয়াকওয়েসহ নানা সুবিধা থাকবে। ২০১৯ সালের জুন মাসে এর কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় অনুযায়ী ৯ মাস আগেই সেপ্টেম্বর মাসে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য নির্ধারিত সময়ের ৯ মাস আগে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে গণপূর্ত অধিদপ্তর।

প্রশাসনের সিনিয়র সচিব, সচিব ও গ্রেড-১ কর্মকর্তাদের আবাসন সংকট ছিল দীর্ঘদিন ধরে। তাদের প্রাপ্যতা অনুযায়ী পর্যাপ্ত বাড়ি না থাকায় বিদ্যমান এ সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্যোগী হন। তার আগ্রহেই সরকার ইস্কাটনে প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২৭৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ের এই ফ্ল্যাট প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে। ওই বছরের জানুয়ারি মাসে এর কার্যাদেশ দেয়া হলেও এই জায়গায় ডিএমপি কমিশনার, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারীসহ ৫ জন ভিআইপির বাসা থাকায় তা খালি করতে বিলম্ব হয়।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুরুর দিকের এই বিলম্বের পরেও নির্ধারিত সময়েই প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করা যেতো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বর্তমান মেয়াদের বিচারপতিদের মতো সচিবদেরও ‘বাসায় উঠাবেন’ বলে প্রতিশ্রুতি দেন। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনও প্রধানমন্ত্রীকে এই সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দেন। এ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে হিমশিম খায় গণপূর্ত অধিদপ্তর। প্রতিশ্রুত সময়ের মধ্যে ভবনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ও প্রকল্প পরিচালক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী উৎপল কুমার দে রাতদিন কাজ করে যান। ফলে এক বছর চার মাসের
মধ্যেই প্রকল্পের মূল স্ট্রাকচারের কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে। এখন এর ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে।

উৎপল কুমার দে জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে প্রচলিত পদ্ধতির বাইরেও ভিন্ন ভিন্ন কৌশল নিয়ে এগিয়েছেন তারা। একটি ছাদ ঢালাইয়ের মধ্যে আরেকটি ছাদ ঢালাইয়ের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হয়েছে। ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই এর মূল স্ট্র্যাকচার দাড়িয়ে গেছে। প্রতি মাসে তিনটি ছাদ ঢালাইয়ের ঘটনা গণপূর্ত অধিদপ্তরের ইতিহাসে এই প্রথম। তিনি জানান, এ কাজ করতে গিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর আমাদের কঠোর হতে হয়েছে। অতিরিক্ত জনবল লাগিয়ে এর কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রধান প্রকৌশলী প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি রক্ষায় রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছেন। ব্যক্তিগতভাবে তিনি এ কাজের মনিটরিং করছেন।

সূত্র জানিয়েছে, মোট তিনটি বিশ তলা ‘এল আকৃতি’র ভবন হচ্ছে। যার প্রতিটি ফ্লোরে থাকবে ২টি করে ফ্ল্যাট। প্রতিটি ফ্ল্যাটের আয়তন হবে ৩ হাজার ৪শ’ ৮৯ বর্গফুট। এই কমপ্লেক্স তিনটির ভেতরে থাকবে সর্বাধুনিক সুইমিংপুল, শারীরিক চর্চা কেন্দ্র (জিম), লন টেনিস কোর্ট, ব্যাডমিন্টন কোর্ট, ৫ ফুট প্রস্তের ১৪শ’ ফুট ওয়াকওয়ে। ৭ ফুট উচ্চতার বাউন্ডারী ওয়াল, কার ওয়াশিং সিসটেম, স্বয়ংক্রিয় অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা, নিজস্ব গভীর নলকূপ দ্বারা সুপেয় পানির সরবরাহ ব্যবস্থাসহ আরো অনেক সুবিধা। প্রতিটি ভবনে ২টি করে লিফট থাকবে এছাড়া মাল্টিপারপাস হলের জন্য একটি লিফট থাকবে। মাল্টিপারপাস হলে ছোটখাটো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে। এনডিই, কুশলী ও পদ্মা নামের তিনটি প্রকৌশল প্রতিষ্ঠান এ কাজে সম্পৃক্ত রয়েছে।

প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আমান উল্লাহ সরকার জানিয়েছেন, এখানকার অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা হবে অত্যাধুনিক। এ জন্য ৩০ হাজার গ্যালন পানি ধারণ সম্পন্ন একটি ওয়াটার রিজার্ভার করা হয়েছে। এছাড়াও স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (এসটিপি) থাকছে। নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াও সিসিটিভি দ্বারা সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা থাকছে। প্রতিটি পরিবারে কমপক্ষে ২টি গাড়ি রাখার সুবিধাসহ একটি বেজমেন্ট ও গ্রাউন্ড ফ্লোর রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক উৎপল কুমার দে এ প্রতিবেদককে বলেন, এখনও প্রকল্পটির মেয়াদ প্রায় দেড় বছর রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে আমাদের দিনভর কাজ করতে হচ্ছে। প্রধান প্রকৌশলী মহোদয় আমাদের সঙ্গে রাতদিন পরিশ্রম করছেন। জটিল জায়গাগুলোতে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত দেয়ায় আমাদের কাজ সহজ হয়েছে। আশা করছি, সেপ্টেম্বরের মধ্যেই প্রকল্পটি উদ্বোধনের পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবো। ব্যক্তিগতভাবে এটি আমার জীবনের একটি চ্যালেঞ্জি প্রকল্প। যা সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরে ভালো লাগছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়