শিরোনাম
◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ ভেটোর তীব্র নিন্দা,মার্কিন নীতি আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লংঘন : ফিলিস্তিন ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক

প্রকাশিত : ২৪ জুলাই, ২০১৮, ১০:৩৬ দুপুর
আপডেট : ২৪ জুলাই, ২০১৮, ১০:৩৬ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আপনাদের মনে রাখতে হবে আমি জাতির পিতার কন্যা

আনিসুর রহমান তপন: কে কোন দল করে, কে কি করে সেদিকে না তাকিয়ে চাঁদাবাজি, চেন্ডারবাজি, পেশিশক্তি, সন্ত্রাস ও মাদক নির্মূলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসক (ডিসি) প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার তেজগাঁওস্থ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ডিসি সম্মেলণ উদ্বোধনকালে তাদের প্রতি এমন নির্দেশনা দেন।
তিনদিন ব্যাপী বার্ষিক এ অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সরকার প্রধান হতে পারি। কিন্তু আমি জাতির পিতার কন্যা। সেটা আপনাদের মনে রেখে শিল্পাঞ্চলে শান্তি রক্ষা, পণ্য-পরিবহন ও আমদানি-রপ্তানি নির্বিঘ্ন  করতেও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং বিনা দ্বিধায় আপনারা টেন্ডারবাজী, পেশী শক্তি, সন্ত্রাস এবং মাদক নির্মূল করবেন। এসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে যদি কেউ বাধা দেয় তবে আপনারা সরাসরি আমার সঙ্গে বা আমার অফিসে যোগাযোগ করবেন বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সমাজ থেকে এসব অশুভ তৎপরতা নির্মূল করে মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই।
সরকারের সঙ্গে মাঠ প্রশাসনের নিবিড় সম্পর্ক দেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র, নিরক্ষরতা, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার অভিশাপমুক্ত একটি সুখী, সমৃদ্ধ, ন্যায়ভিত্তিক, জ্ঞান নির্ভর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে সহায়তা করবে। এ ক্ষেত্রে বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিরা অত্যন্ত গুরুত্ব ভূমিকা রাখতে পারে উল্লেখ করে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকারের ২৩ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।

এসব নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে, সরকারি সেবা পেতে সাধারণ মানুষ যাতে কোনভাবেই হয়রানি বা বঞ্চনার শিকার না হন, তা কঠোর নজরদারিতে রাখা, যুব সমাজকে মাদকের হাত থেকে রক্ষা করতে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করা, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতা দূর করে সর্বক্ষেত্রে শান্তিশৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করা, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, সম্ভাবনাময় স্থানীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে উদ্যোগী হতে হবে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়ন ও বিকাশে নেতৃত্ব দিতে হবে, তৃণমূল পর্যায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করতে হবে, শিক্ষার সকল স্তরে নারীশিক্ষার হার বৃদ্ধি, ঝরেপড়া শিক্ষার্থীদের মূলধারায় ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নিতে হবে, ভূমি প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সরকারি ভূমি রক্ষায় সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে, কৃষি-উৎপাদন বৃদ্ধিতে সার, বীজ, বিদ্যুৎ, জ্বালানির সরবরাহ নির্বিঘ্ন  করতে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নিতে হবে, ভেজাল খাদ্যদ্রব্য বাজারজাত প্রতিরোধে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি এবং এ ধরনের অনৈতিক কর্মকান্ড কঠোর হস্তে দমন করতে হবে, দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম আরও জোরদার করতে হবে, পরিবেশ রক্ষায় জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং এসংক্রান্ত আইন ও বিধি-বিধানের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিপর্যয় প্রশমনে ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১২’ এবং এ সংক্রান্ত স্থায়ী নির্দেশনাবলি অনুসারে সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে, সাধারণ মানুষকে সহজে সুবিচার প্রদান ও আদালতে মামলার জট কমাতে গ্রাম আদালতগুলিকে কার্যকর করতে হবে, জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন কমিটি প্রধান হিসেবে ডিসির নেতৃত্বে যেসব কমিটি আছে তা সক্রিয়, গতিশীল ও ফলপ্রসু করতে হবে, দপ্তরসমূহের বিদ্যমান সেবাসমূহ তৃণমূলে পৌঁছানোর লক্ষ্যে তথ্য মেলা, সেবা সপ্তাহ পালনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম জোরদার করতে হবে, শিল্পাঞ্চলে শান্তি রক্ষা, পণ্য-পরিবহন ও আমদানি-রপ্তানি নির্বিঘ্ন করা এবং চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, পেশীশক্তি ও সন্ত্রাস নির্মূল করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, বাজার-ব্যবস্থার সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টির যেকোন অপচেষ্টা কঠোর হস্তে দমন, নারী ও শিশু নির্যাতন ও পাচার, যৌতুক, ইভটিজিং এবং বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে হবে, নারীর প্রতি সহিংসতা, নিপীড়ন ও বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, নিজ নিজ জেলায় ক্রীড়া, বিনোদন ও সৃজনশীল সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ বাড়িয়ে, শিশু-কিশোরদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সংস্কৃতিবোধ ও বিজ্ঞানমনস্কতা জাগিয়ে তুলতে হবে, প্রতিবন্ধী, অটিস্টিক ও পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর কল্যাণে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করা, পার্বত্য জেলাসমূহের ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য, বনাঞ্চল, নদী-জলাশয়, প্রাণিসম্পদ এবং গিরিশৃঙ্গগুলির সৌন্দর্য সংরক্ষণ করতে হবে। এছাড়া, পর্যটনশিল্প, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং কুটিরশিল্পের বিকাশে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ডিসিদের প্রতি নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক এবং মুখ্য সচিব মো.নজিবুর রহমান বক্তব্য রাখেন। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রী পরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়