শিরোনাম
◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল ◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন ◈ আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ৮ মে ◈ সেনা গোয়েন্দাসংস্থার বিরুদ্ধে ৬ পাক বিচারপতির ভয় দেখানোর অভিযোগ ◈ নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিরা সাদা পতাকা উড়াচ্ছিল, তাদের বূলডোজার দিয়ে মাটি চাপা দিল ইসরায়েলী সেনারা ◈ ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দ্রুত আরোপ করুন: জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ ◈ যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত ◈ বাংলাদেশে পূর্ণাঙ্গ ও মুক্ত গণতন্ত্র বাস্তবায়নে কাজ করে যাবে যুক্তরাষ্ট্র: ম্যাথিউ মিলার

প্রকাশিত : ২৪ জুলাই, ২০১৮, ০৮:২৩ সকাল
আপডেট : ২৪ জুলাই, ২০১৮, ০৮:২৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দখলের কবলে ডাকাতিয়া

ডেস্ক রিপোর্ট : প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী নদী ডাকাতিয়া। কুমিল্লা জেলার সোনাইমুড়ি সীমান্ত দিয়ে এ নদী প্রবেশ করেছে বাংলাদেশে। দূষণ ও ভূমিদস্যুদের কবলে ক্রমেই সংকীর্ণ হয়ে পড়ছে চাঁদপুরের অংশে থাকা এই নদীটি। মরে যাচ্ছে ডাকাতিয়া।

ডাকাতিয়া নদীটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কুমিল্লা ও চাঁদপুর জেলা দিয়ে বয়ে গেছে। এর দৈর্ঘ্য ১৪১ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৬৭ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। ডাকাতিয়া মেঘনার একটি উপনদী। নদীটি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে কুমিল্লার বাগসারা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুর জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এরপর কুমিল্লা লাকসাম ও চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলা অতিক্রম করে চাঁদপুরের কাছে মেঘনায় মিলিত হয়েছে।

এককালের খরস্রোতা ডাকাতিয়া প্রভাবশালীদের দখলদারিত্বের কারণে এখন মৃতপ্রায়। নদীতে নেই জোয়ার-ভাটার উত্তাল ঢেউ। অবৈধ দখল আর দূষণে ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে নদীটি। নদীতে এক সময় ছিল উত্তাল ঢেউ, চলতো পালতোলা নৌকা। এক সময় এর দু’পাশে গড়ে উঠে জেলে পল্লী। এ নদীতে মাছ ধরেই তারা জীবিকা নির্বাহ করত। কালের বিবর্তনে ডাকাতিয়ার সেই জৌলুস হারিয়েছে। নদীতে নেই মাছ। তাই অনেক জেলে মাছ ধরার বাপ-দাদার ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে। এসব জেলেদের দিন চলছে অনেক কষ্টে।

দখলের কবলে পড়েছে চাঁদপুর শহরের ৩,৫ ও ১০ নম্বর ঘাট, চৌধুরী ঘাট এবং নতুন বাজার এলাকাসহ হাজীগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জ উপজেলায় নদীর দু’পাড়। এসব এলাকায় শত শত পাকা ভবন ও আধাপাকা টিনশেড বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা হয়েছে। অবৈধ এসব স্হাপনা কয়েকবার উচ্ছেদ করা হলেও দখলমুক্ত হয়নি। উচ্ছেদের পর আবার দখল হয়ে যাচ্ছে।
দখলের প্রভাবে বর্ষায় শহরে পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। অল্প বৃষ্টিতেই পানি জমে যায় শহরের পাড়া-মহল্লা ও রাস্তা-ঘাটগুলোতে।
ডাকাতিয়া নদীর মেঘনার প্রবেশমুখে চাঁদপুর পুরান বাজার ও নতুন বাজারসহ বেশিরভাগ এলাকায় দখল হয়ে নদী সরু গেছে। এছাড়াও ফরিদগঞ্জ, হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি উপজেলায় নদীর দু’পাশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ বালুমহাল। এসব বালুমহালে বালু দিয়ে ভরাট হয়ে যাচ্ছে ডাকাতিয়া। এতে নাব্য হারাচ্ছে নদী। অন্যদিকে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ আটকে যাওয়ায় ফসল উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে।

হাজীগঞ্জ উপজেলার জেলে কার্তিক দাস জানান, ডাকাতিয়া নদীতে আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। নদীও ছোট হয়ে গেছে দখলের কারণে। শীতকালে নদীর পানি নষ্ট হয়ে যায়। তাই অনেকেই এই পেশা ছেড়ে চলে যাচ্ছে অন্য পেশায়। তিনি বলেন, এক সময় এ নদীতে আইড়, রিটা, বাইলা, ট্যাংকার, চিতল, বোয়াল, রুই, পুঁটি ও নদীর চরগুলোতে চিংড়ি মাছ পাওয়া গেলেও এখন তার পরিমান কমে যাচ্ছে আশঙ্কাজনকভাবে।

চাঁদপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা বশির মিয়া বলেন, ডাকাতিয়া নদী যেভাবে দখল করা হচ্ছে এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই মরে যাবে নদীটি। দখলদারদের হাত থেকে ডাকাতিয়া নদী বাঁচাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এ ব্যাপারে চাঁদপুর বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রহমান বলেন, ডাকাতিয়া নদী রক্ষায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এরইমধ্যে অতিরিক্ত ডিসি (রাজস্ব) কে আহবায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। নদী দূষনরোধ এবং অবৈধভাবে নদীর পাড় দখলকারীদের বিরুদ্ধে তালিকা করা হচ্ছে। অচিরেই অভিযানে নামা হবে।
ডাকাতিয়া উৎসস্থল ভারতের পার্বত্য ত্রিপুরার রঘুনন্দন পাহাড়ে। বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন শাখা-প্রশাখাসহ অসংখ্য লোক কাহিনীতে পাওয়া যায় ডাকাতিয়ার নাম। সূত্র : ডেইলি বাংলাদেশ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়