দেবব্রত দত্ত : বাংলাদেশের জনসংখ্যা বতমার্নে ১৬.৮ কোটি এবং প্রতি বছর ২০ লাখ হারে বাড়ছে। দেশের বিদ্যমান কৃষি জমিতে অতিরিক্ত ফসল উৎপাদনের চাহিদা সৃষ্টি করছে এই সরকার। ক্রমহ্রাসমান জমি থেকে অধিক ফসল প্রাপ্তির লক্ষ্যে সময় মতো চাষ,উপকরণের যথাযথ ব্যবহার ও ন্যূনতম অপচয়ে শষ্য আহরণ এখন জরুরী হয়ে পড়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রতি অংশ জমিতে যান্ত্রিক শক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা অপরিহার্য। ভৌগলিক জলবায়ূর নেতিবাচক প্রভাবে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা , খরা ইত্যাদি প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে প্রতি বছর পশুর শক্তির সংখ্যা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। অন্যদিকে কৃষি শ্রমিকের একটি বড় অংশ শিল্প ও পরিবহন খাতে স্থানান্তরিত হওয়ার ফলে শ্রমিকের অভাব দিন দিন প্রকট হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে বিশাল জনগোষ্ঠির খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দেশের দেশের চিরাচরিত কৃষি ব্যবস্থাকে আধুনিক যান্ত্রিক কৃষি ব্যবস্থা রূপান্তর করার কোনো বিকল্প নেই।
ক্রমবর্ধমান খাদ্য ও কৃষি পন্যের চাহিদা মেটানোর জন্য অধিক শস্য উৎপাদন ও নিবিড়তা বৃদ্ধি অন্যতম উপায়। যন্ত্র শক্তির মাধ্যমে সময়, মতো চাষ, রোপন ও কর্তন করে এই লক্ষ্য অজর্ন সম্ভব । দেশের রোপন ও কর্তন কাজ এখনও বহুলাংশে কৃষি শ্রমিকের উপর নির্ভরশীল। ভরনা মওসুমে শ্রমিকের চাহিদা বৃদ্ধি ও অপ্রতুলতার কারণে কৃষকরা রোপন ও কতর্নের সময় এক অর্থে অসহায় হয়ে পড়েন। একদিকে শ্রমিকের উচ্চ মূল্য ও অন্যদিকে প্রয়োজনীয় শ্রমিকের অভাব কৃষি কাজের উপর অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। মাঠ পর্যায়ে কৃষিকাজকে চলমান রাখার স্বার্থে শস্য কতর্ন যন্ত্র (কম্বাইড হারভেস্টার,রিপার ).রোপন যন্ত্র (রাইস ট্রান্সপ্লান্টার )শক্তিচালিত মাড়াই যন্ত্র সহজলভ্য করার বিকল্প নেই। এ ছাড়া দেশের শস্য কর্তন পরবর্তী অপচয় বর্তমানে ১৪%। যন্ত্রের ব্যবহারে সহজেই তা ৫% এ নামিয়ে আনা সম্ভব। আবার খন্ড খন্ড জমিকে একত্র করে বৃহৎ আকারের জমিতে একই জাতের ফসলের চাষাবাদ ও শস্য উৎপাদনে কৃষকদের উৎসাহিত করা প্রয়োজন।খামার যান্ত্রিকীরণের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্প ২য় পর্য়ায়ের আওতায় দেশের ৫১ টি জেলার ২১৭ টি উপজেলায় বিভিন্ন ধরনের আধুনিক যন্ত্রের প্রদর্শনী ও মাঠ দিবসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি প্রদর্শনী বাস্তবায়নে ১৫০ জন অগ্রসর কৃষককে আমন্ত্রণ হয়। এবং রাস্তার পার্শ্বে জনসমাগম হয় এ রকম জায়গায় যন্ত্রের কাযক্রম দেখানো হয়।