ড. মীজানুর রহমান: মা-বাবারা বাচ্চাদের উপরে অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করে। বাচ্চা কোথায় যায়, কি করে, কি খায় সব কিছুতেই তারা অতিরিক্ত কড়াকড়ি করে, এটা আইন করে বন্ধ করা উচিত। শিক্ষা ব্যবস্থায় যে সৃজনশীল নামে একটি নতুন কারিকুলাম আসছে, তা হয়ত শিক্ষার্থীরা আয়ত্বে আনতে পারবে। কিন্তু শিক্ষকরা এবং মা বাবারা সৃজনশীল কি, সেটা বুঝেন না। তারা তো সৃজনশীল ব্যবস্থায় শিক্ষা গ্রহণ করে আসেন নাই। যার কারণে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখিন হতে হচ্ছে। এই সমস্যাটা আমাদের আরো কিছুদিন থাকবে। এখন যারা সৃজনশীল পড়ছে তারা যখন মা-বাবা হবে, তখন আর এই সমস্যাটা থাকবে না। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারেরই নিয়োগ দেওয়ার পদ্ধতি চালু করতে হবে। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার পদ্ধতিটা অবিলম্বে বন্ধ করা দরকার। কারণ, সেখানে এমপি সাহেবরা স্কুল গুলো পরিচালনার দায়িত্ব দেন নিজেদের কাছের লোকদের। আর তারা টাকা খেয়ে অযোগ্য লোকদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন। একটি শিক্ষা সার্ভিস কমিশন হওয়া উচিত। যেখানে সারাবছর যারা শিক্ষক হবেন, সেই শিক্ষকদের পরিক্ষা নেওয়া হবে। আর যে সকল স্কুলে শিক্ষক প্রয়োজন, তারা সেই প্যানেলের নিকট চিঠি পাঠাবেন এবং সার্ভিস কমিশনের প্যানেল সেখানে উপযুক্ত শিক্ষক পাঠাবেন। শিক্ষার বিপর্যয় ঠেকাতে এটা বাস্তবায়ন করতে হবে। আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে এমপিওভুক্তিকরণ। কতগুলো লোক যারা চাকরি করে না এবং কোন চাকরি করার যোগ্যতাও তাদের নেই, তারা কয়েকজনে মিলে একটি মাদ্রাসা টাইপের কোন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে। একটি পর্যায়ে এই প্রতিষ্ঠান দাঁড়িয়ে যায় এবং এই অযোগ্য লোকগুলো হয় পরিচালক এবং শিক্ষক। এবং তারাই এক সময় তাদের মাদ্রাসাকে এমপিওভুক্তির দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। তাদেরকে তো কেউ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার জন্য বলে নাই! বিভিন্ন মাদ্রাসা এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেখানে সেখানে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে, এগুলোকে অবিলম্বে বন্ধ করা দরকার। এত পরিমান স্কুল মাদ্রাসা দরকার নাই। যেগুলো আছে সেগুলোতেই সমভাবে শিক্ষার্থী বন্টন করে দেওয়া উচিত। এবং শিক্ষকদেরকের ট্রান্সফার করা দরকার। যে সকল প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত সে সকল প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পাঠিয়ে সমান ভাবে বন্টন করা দরকার। এসব পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে আগামীতে আরো বেশি শিক্ষার্থী ফেইল করবে।
পরিচিতি: ভিসি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়/ মতামত গ্রহণ: তাওসিফ মাইমুন/সম্পাদনা: মোহাম্মদ আবদুল অদুদ
আপনার মতামত লিখুন :