শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত

প্রকাশিত : ২৩ জুলাই, ২০১৮, ১২:১১ দুপুর
আপডেট : ২৩ জুলাই, ২০১৮, ১২:১১ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাতে পালিয়ে থাকে বিএনপির নেতাকর্মীরা

ডেস্ক রিপোর্ট : নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হওয়ার পর রাজশাহী নগরীতে গ্রেপ্তার আতঙ্কে ভুগছে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীরা। কোনো পরোয়ানা ছাড়াই বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে প্রতিদিন নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে। গতকাল রবিবারও একই অভিযোগ করা হয়েছে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের পক্ষ থেকে। এমনিতেই এবার দলীয় কোন্দলসহ নানা কারণে কোণঠাসা হয়ে আছেন বুলবুল। এর ওপর মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে গ্রেপ্তারের ভয়ে তাঁর অনেক নেতাকর্মী প্রচারণার মাঠে নামতে পারছে না।

গতকাল বুলবুলের নির্বাচন সমন্বয়ক তোফাজ্জল হোসেন তপুর করা অভিযোগে বলা হয়, শনিবার রাতে মিথ্যা মামলায় বিনা গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান মন্টুকে তাঁর বাসা থেকে সাদা পোশাকধারী পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়। একই রাত ১১টার দিকে নগরীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বাবলুকে আটক করা হয়েছে। রাত ১২টার দিকে ১৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহম্মেদকে এবং রাত ৮টার দিকে ধানের শীষের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় ২৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি জামিল উদ্দিনকে আটক করা হয়। অভিযোগে বলা হয়, এসবই উচ্চ আদালতের নির্দেশনার পরিপন্থী কাজ।

আরো অভিযোগ করা হয়, কোনো ধরনের মামলা না থাকলেও ১১ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুন্নবী মুক্তারের বাসায় বিনা কারণে তল্লাশি চালানো হয়। গ্রেপ্তার এড়াতে ওই সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। উচ্চ আদালত থেকে নির্বাচনের এই সময়ে বিনা ওয়ারেন্টে কোনো নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার না করার নির্দেশনা থাকলেও তা ভঙ্গ করে গণগ্রেপ্তার অব্যাহত রয়েছে বলে অভিযোগে বলা হয়। পাশাপাশি এসব বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক সুষুম নির্বাচনী পরিবেশ ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সৃষ্টি করার জোর দাবি জানানো হয়। নগরীর ১১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার আলী গতকাল বলেন, ‘দিনের বেলা কোনোমতে প্রচার চালাচ্ছি। কিন্তু রাতে নিজেই বাড়িতে থাকতে পারছি না। আমার বাড়ির পাশ থেকেও ডায়মন্ড নামের এক কর্মীকে গত রাতে (শনিবার) আটক করা হয়েছে। এসব কারণে অধিকাংশ নেতাকর্মী ভালোভাবে প্রচারণা চালাতে পারছে না।’ নগরীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমি নির্বাচন নিয়ে আর মাথা ঘামাচ্ছি না। ছেলেকে নিয়ে ঢাকায় আছি। এলাকায় কী হচ্ছে বলতে পারব না।’

গতকাল নগরীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ড উপশহর, তেরোখাদিয়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দলে দলে ভাগ হয়ে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছে। থেমে নেই দলটির নারী কর্মীরাও। উপশহর মোড়ের রাস্তায় তারাও দাঁড়িয়ে পথচারীদের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের লিফলেট। সেখান থেকে নগরীর ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে সন্ধ্যা ৬টার দিকে গিয়ে দেখা যায় লিটনের নারী কর্মীদের বিরাট জমায়েত। তাদের একটু দূরেই আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরাও প্রচারণা চালাচ্ছে। ১৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান রতন এবং মহানগর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা প্রচারণা চালাচ্ছে। ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা আকলিমা বেগম বলেন, ‘এবার তো লিটনের জন্যই বেশি লোকজন অ্যাসছে ভোট চাইতে। গতবার বুলবুলের লোকজন বেশি অ্যাসছিল। কিন্তু এবার কি উঁই ভোটে দাঁড়াইনি?’
১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহজামাল বলেন, ‘গত রাতেও (শনিবার) আমাদের এলাকা থেকে চার-পাঁচজন কর্মীকে আটক করা হয়েছে। নেতাকর্মীরা দিনের বেলা প্রচারণা চালাতে পারছে। কিন্তু রাতের বেলা বাড়িতেই থাকার সাহস পাচ্ছে না, প্রচারণা তো দূরের কথা।’ নগরীর নওদাপাড়া এলাকায় গতকাল সন্ধ্যার দিকে গিয়ে দেখা যায়, খণ্ডে খণ্ডে বিভক্ত হয়ে অন্তত ১০টি দল লিটনের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে। কিন্তু বুলবুলের প্রচারণা চালাতে কোনো দল দেখা যায়নি।
মেয়র প্রার্থীদের নিয়ে আরডিজেএডির সংলাপ : রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে ঢাকাস্থ রাজশাহী বিভাগ সাংবাদিক সমিতির (আরডিজেএডি) উদ্যোগে ‘কেমন রাজশাহী চাই’ শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সকাল ১১টায় রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি মিলনায়তনে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে খায়রুজ্জামান লিটন, মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, গণসংহতির মেয়র প্রার্থী মুরাদ মুর্শেদ, জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী হাবিবুর রহমান বক্তব্য দেন।
লিটন বলেন, ‘রাজশাহীর উন্নয়নে আমাদের দল-মত-নির্বিশেষে কাজ করতে হবে। উন্নয়নের জন্য রাজশাহীতে সর্বদলীয় ফোরাম গঠন করতে হবে। সিটি করপোরেশনের সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে নগর সরকারের বিকল্প নেই। নগর সরকার গঠন করার জন্য সিটি করপোরেশনের সব ধরনের উপাদান ও সামর্থ্য আছে। মেয়রের মন্ত্রীর পদমর্যাদা না থাকায় অনেক কাজ করতে অসুবিধা হয়। আগামীতে মেয়র যিনিই হবেন তাঁকে পূর্ণ মন্ত্রীর পদমর্যাদা দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

বুলবুল বলেন, ‘নগরীর সার্বিক উন্নয়নের জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটাতে হবে। সর্বস্তরে যার যেটা দায়িত্ব তা পালন করতে হবে। ব্যক্তিস্বার্থ বাদ দিয়ে সমষ্টির উন্নয়ন নিয়ে কাজ করতে হবে। নগরীর উন্নয়নের জন্য সর্বস্তরের মানুষের মতামত নিতে হবে।’ অনুষ্ঠানে রাজশাহীবাসীর সমস্যা, সম্ভাবনা ও সুপারিশ নিয়ে বক্তব্য দেন নাট্যকার ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মলয় কুমার ভৌমিক, সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর, ক্রিকেটার খালেদ মাসুদ পাইলট, সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান খান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কাজী মন্টু, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি জামাত খান প্রমুখ। তাঁরা বলেন, মাদকমুক্ত, কর্মমুখী ও নিরাপদ নগরী গড়ে তোলার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক চর্চা, খেলাধুলার পরিবেশ তৈরিতে পর্যাপ্ত অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। পদ্মা নদীকে কেন্দ্র করে নগরীর উন্নয়ন ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির দাবি জানান তাঁরা। ঢাকাস্থ রাজশাহী বিভাগ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি খায়রুজ্জামান কামালের সভাপতিত্বে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেনের তত্ত্বাবধানে এ অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন সহসভাপতি আনোয়ার হক। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সমিতির সহসভাপতি মুজিবুর রহমান চৌধুরী। অন্যদের মধ্যে সমিতির দীপক দেব, মারিয়া সালাম, মনোরমা আক্তার ও এনায়েত করিমসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সূত্র : কালের কণ্ঠ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়