রিকু আমির : ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালের লাইফ সাপোর্টে রাখা স্বাধীনতা পদক সবিনয়ে প্রত্যাখ্যানকারী অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের শারীরীক অবস্থার খুব সামান্য উন্নতি হয়েছে।
মুজিবনগর সরকারের ছয় সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদের একমাত্র জীবিত সদস্য এই ব্যক্তি সম্পর্কে রোববার দুপুরে ন্যাপের নেতা ইসমাঈল হোসেন আমাদের সময় ডটকমকে বলেন, চিকিৎসকরা যে সামান্য উন্নতির সেটা উল্লেখযোগ্য কিছু নয়।
শ্বাসকষ্ট ও হালকা জ্বরসহ শুক্রবার দুপুরে ৯৬ বছর বয়স্ক মোজাফফর আহমেদকে অ্যাপোলোতে আনার পর লাইফ সাপোর্টে দেয়া হয় বলে তার মেয়ে আইভী আহমেদ আমাদের সময় ডটকমকে জানান।
১৯২২ সালের ১৪ এপ্রিল কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণকারী এই ব্যক্তি লাইফ সাপোর্ট থেকে সুস্থ্য হয়ে ফিরবেন কিনা, এমন শঙ্কা কাজ করছে পরিবারের মধ্যে।
আইভী বলেন, উনার নিউমোনিয়া হয়েছে। এটা ইনফেকশন হয়ে পুরো দেহে ছড়িয়ে সেপ্টিসেমিয়ায় রূপ নিয়েছে। তার উপর রক্তচাপ কম। এজন্য কিডনি স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারছে না। উনার তো বয়স বেশি। এই ধকল সামলানোর ক্ষমতা এই বয়সে? জানি না, কী জানি হয়।
বাংলাদেশ সরকার ২০১৫ সালে বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী অধ্যাপক মোজাফফর আহমদকে স্বাধীনতা পদক দেওয়ার ঘোষণা দিলে তিনি সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করেন।
তার মতে, রাজনীতির অর্থ দেশ এবং মানুষের সেবা। পদ বা পদবির জন্য কখনো রাজনীতি করেননি তিনি। পদক দিলে বা নিলেই যে মানুষ সম্মানিত হয়, এই দৃষ্টিভঙ্গিতে তিনি বিশ্বাসী নন।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে এ মুহূর্তে প্রায় নিস্ক্রিয় এবং বিভক্ত ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) একাংশের সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর নিজেকে ‘কুঁড়ে ঘরের মোজাফফর’ বলে পরিচয় দিতে ভালোবাসেন। বাংলাদেশের প্রগতিশীল-গণতান্ত্রিক রাজনীতির প্রবাদপ্রতিম এ ব্যক্তিত্ব নিজেকে সাদামাটাভাবে উপস্থাপন করতে ভালোবেসেছেন আজীবন।
অধ্যাপক আহমদ ব্যক্তিজীবনে কথাবার্তা বলেন কিছুটা কৌতুকমিশ্রিতভাবে; কখনো থাকে প্রচ্ছন্ন হেঁয়ালির ছোঁয়া। তিনি কাছের মানুষদের কাছে একসময় বলতেন, ‘আমার নাম মোজাফফর আহমদে নূরী, আমি পথে পথে ঘুরি’।
আপনার মতামত লিখুন :