শিরোনাম
◈ বিশৃঙ্খলার পথ এড়াতে শিশুদের মধ্যে খেলাধুলার আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী ◈ তাপপ্রবাহের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসও বন্ধ ঘোষণা ◈ সোনার দাম কমেছে ভরিতে ৮৪০ টাকা ◈ ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি ◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও) ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু

প্রকাশিত : ২২ জুলাই, ২০১৮, ১১:৪৩ দুপুর
আপডেট : ২২ জুলাই, ২০১৮, ১১:৪৩ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

`সমকাজে সমমর্যাদা ও সমবেতন প্রাপ্তি সাংবিধানিক অধিকার’

নোমানুজ্জামান আল আজাদ : সাম্প্রতিক সময়ে সরকারি দপ্তরে বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ক্রীতদাস প্রথার ন্যায় আউট সোর্সিং এর মাধ্যমে জনবল সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে, যা ১১ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হচ্ছে। এর ফলে শূন্য পদে পদোন্নতির সুযোগ সংকুচিত হচ্ছে এবং নিয়োগকৃত জনবলের বেতন ভাতার অর্ধাংশ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হাতিয়ে নিচ্ছে। পুঁজিবাদী, সাম্রাজ্যবাদী সমর্থনপূষ্ঠ কায়েমী স্বার্থবাদী আমলাদের ষড়যন্ত্রের ফলে সরকার ও গণকর্মচারীদের মধ্যে দুরত্ব সৃষ্টি করা হচ্ছে। সংবিধানের নির্দেশনা এই যে, স্ব স্ব মেধা ও যোগ্যতা অনুযায়ী রাষ্ট্রের সকল নাগরিক প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ লাভের যোগ্য হইবেন। প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত ব্যক্তি পদ, পদবী ও যোগ্যতা অনুযায়ী আর্থিক ও প্রশাসনিকভাবে সমঅধিকার প্রাপ্ত হইবেন। সংবিধান পরিপন্থি আউট সোর্সিং এর মাধ্যমে জনবল নিয়োগের কারনে প্রকারান্তরে কর্মচারী নিধন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে যার ফলশ্রুতিতে সারাদেশের কর্মচারী অঙ্গনে চরম হতাশা, তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে।

২০১৫ সালে নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর হওয়ার ফলে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিল করায় কর্মচারী অঙ্গনে চরম হতাশা বিরাজ করছে বিধায় কর্মচারীদের সর্বক্ষেত্রে টাইমস্কেল ও সিলেকশনগ্রেড পূনর্বহালের দাবি জানাচ্ছি। সরকারি চাকুরীজিবীদের বিদ্যমান পেনশন নীতিমালা পরিবর্তন করার ফলে কর্মচারীরা মারাতœক আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছে। বিদ্যমান পেনশন নীতিমালায় একজন নিম্নবেতনভুক কর্মচারী চাকুরী জীবনের শেষ প্রান্তে প্রত্যাশায় থাকেন অবসর পরবর্তী জীবনে সমুদয় টাকা একসাথে উত্তোলন করবেন। সে প্রত্যাশায় অবসর পরবর্তী জীবনে পরিবার পরিজন নিয়ে এতটুকু মাথা গোজার ঠাই খোঁজেন। এহেন অবস্থায় সরকার পেনশন নীতিমালা সংশোধন করে প্রাপ্য টাকার অধার্ংশ তথা ৫০ শতাংশ সরকারি তহবিলে স্থায়ী জমা রাখার সিদ্ধান্তে অবসরে যাওয়া কর্মচারীদের উপর চরম আর্থিক অবিচার শুরু হয়েছে।

অন্যদিকে একজন পেনশনভোগী পুরুষ কর্মচারী মারা গেলে তার স্ত্রী আজীবন পেনশন প্রাপ্য হন। কিন্তু একজন পেনশনভোগী মহিলা কর্মচারী মারা গেলে তার স্বামী শুধু মাত্র ১৫ বছর পেনশন পাবেন। এ বৈষম্য দুরীকরণের প্রতি দৃষ্টি না দিয়ে বর্তমানে পেনশন বিষয়ে আহরিত সুযোগ সুবিধা সংকোচনের প্রকৃয়া গণকর্মচারীদের জন্য মারাতœক নেতিবাচক এবং ক্ষতিকর সিদ্ধান্ত বলে আমরা মনে করছি। এমতাবস্থায় আমরা টাইমস্কেল সিলেকশন গ্রেড পূনর্বহাল, পূর্বের ন্যায় শতভাগ পেনশন প্রদানসহ পেনশন গ্র্যাচ্যুইটির হার ১ টাকায় ২৩০ টাকার স্থলে ৫০০ টাকা নির্ধারণের জন্য আবেদন জানাচ্ছি।

সমকাজে সমমর্যাদা ও সমবেতন প্রাপ্তি একটি সাংবিধানিক অধিকার। সে অধিকার থেকে বঞ্চনাহেতু সচিবালয়ের ন্যায় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে কর্মরত প্রধান সহকারী, উচ্চমান সহকারী, স্টেনোগ্রাফার, তত্ত্বাবধায়ক ইত্যাদি সমমানের পদকে ২য় শ্রেণীর পদমর্যাদাসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা নামকরণ, স্টেনোটাইপিস্ট, অফিস সহকারী, নাজির ইত্যাদি সমমানের পদকে সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সহকারী ব্যক্তিগত কর্মকর্তা নামকরণ, হিসাব রক্ষক পদকে সহকারী হিসাব কর্মকর্তা, হিসাব সহকারী পদকে উপসহকারী হিসাব কর্মকর্তা নামকরণ এবং অফিস সহায়ক সমমানের পদকে অফিস সহকারী নামকরণ। এছাড়াও স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত ওয়ার্ড সরদার পদবীকে ওয়ার্ড সুপারভাইজার, জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল বিভাগে নলকূপ মেকানিক পদবীকে ওয়াস (ডধংয) সুপারভাইজার নামকরণ, জজ কোর্ট ও জেলা প্রশাসনসহ সকল সরকারি দপ্তরে কর্মরত ওয়ার্ক চার্জড, কন্টিনজেন্ট পেইড, অস্থায়ীভাবে নিয়োগকৃত কর্মচারীদের নিয়মিতকরণ, পদোন্নতিবিহীন পদ (ইষড়পশ চড়ংঃ) লাইব্রেরীয়ান, ডুপ্লিকেটিং মেশিন অপারেটর, কেয়ারটেকার, হোস্টেল সুপার, প্রসেস সার্ভার, কম্পাউন্ডার, ড্রেসার, এ্যাটেনডেন্ট ইত্যাদি সমমানের পদকে পরবর্তী উর্দ্ধতনস্তরে পদোন্নতির প্রস্তাবসহ সচিবালয়ের সাথে সঙ্গতি রেখে সকল সরকারি দপ্তওে এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধি প্রণয়নের দাবি জানাচ্ছি।

দুর্গম অরণ্যে পাহাড়ী অঞ্চল, হাওড়, বাওর, সামুদ্রিক অঞ্চলে কর্মরতদের প্রাকৃতিক বিপর্যয় এর মুখে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয় বিধায় তাদের জন্য মূল বেতনের ৪০% (সর্বনিম্ন ৫০০০/-টাকা) প্রদানের দাবি জানাচ্ছি, জুডিশিয়াল সার্ভিসে কর্মরতদের বিচারকদের ন্যায় জুডিশিয়াল ভাতা প্রদান, এছাড়া গাড়ী চালক ও ১৮, ১৯, ২০তম গ্রেডের কর্মচারীদেরকে নার্সদের ন্যায় মাসিক বেতনের সাথে ৩০০০/- (তিন হাজার টাকা) হারে সাজপোষাক ভাতা প্রদান, স্বাস্থ্য বিভাগসহ ল্যাব, হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী, টেকনিশিয়ান, গাড়ী চালক, লিফ্টম্যান, ইলেকট্রিশিয়ানসহ বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত ঝুঁকিপূর্ন কাজে নিয়োজিত কর্মচারীগণকে মূলবেতনের ২০% ঝুঁকি ভাতা প্রদানসহ দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে বিশেষ বিশেষ সরকারি সংস্থার (আর্মি, পুলিশ, বিজিবি, আনসার) সদস্যদের ন্যায় ন্যায্য মূল্যে মানসম্মত রেশন প্রদান এবং নিয়োগের ক্ষেত্রে কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য রেল এর ন্যায় ৪০ শতাংশ পোষ্য কোটা সংরক্ষণ এবং রেল বিভাগের পেনশনারদের অনুকূলে সরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে পেনশন প্রদান ব্যবস্থা চালুর আবেদন জানাচ্ছি।

২০১৫ সালের বেতন কাঠামোতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বৈষম্য প্রকট (সবোর্চ্চ ৮৬,০০০/- এবং সর্বনিম্ন ৮২৫০/-) যা নিম্ন আয়ের কর্মচারীদের জন্য চরম হতাশাজনক, এমতাবস্থায়, বর্তমান মহাজোট সরকারের শেষ বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য কোন আর্থিক সুবিধা না রাখায় কর্মচারীগণ হতাশ। এক্ষেত্রে বর্তমান বাজার দর ও বাস্তবতার নীরিখে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ৫ শতাংশের স্থলে ২০ শতাংশ নির্ধারণের জোর দাবিসহ ওখঙ ঈড়হাবহঃরড়হ এর ৮৭ ও ৯৮ ধারা মোতাবেক গণকর্মচারীদের সংগঠন করার প্রয়োজনে ঞৎধফব টহরড়হ অধিকার প্রদানে আপনার সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

লেখক: মহাসচিব, বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ/সম্পাদনা: মোহাম্মদ আবদুল অদুদ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়