মে . জে. (অব.) এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার : নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জামায়াত প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে উঠতে পারে, এটা অসম্ভব কিছু নয়। কারণ দলটি এখন বড় সংকটে আছে। সুতরাং জামায়াত মরিয়া হয়ে যেকোনো কিছু করতে পারে। এখানে নিরাপত্তা বাহিনীর সতর্ক হওয়ার দরকার। জঙ্গি নেই ধরে নিলে ভয়ানক বিপদ হবে। দেশে এখনো জঙ্গি আছে। জঙ্গি উৎপাদিতও হচ্ছে। জঙ্গি বাড়ানোর পরিস্থিতি অব্যাহত রয়েছে। এই কাজটি করছে জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের রাজনীতি করছে। দলটি তো মরণকামড় দেওয়ার জন্য বসে আছে। ফলে কোনোভাবেই আমাদের আত্মতুষ্টিতে ভোগা যাবে না। পুলিশ, গোয়েন্দা বাহিনীর নেটওয়ার্ককে শক্তিশালী করে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে।
জঙ্গি দমনে সরকার বা নিরাপত্তা বাহিনীর যে অভিযান তা সফল ছিল। সেই সফল অভিযানের ফলে জঙ্গিরা কিছুটা পিছু হটেছিল তখন, এখন আবার সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবারও টার্গেট কিলিং শুরু করবে জঙ্গিরা, প্রকাশক হত্যাকান্ড সেই শুরুর অংশ বলেই ধারণা আমার।
নিরাপত্তা বাহিনীর বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা কার্যক্রমের কারণে হয়তো তারা কিছুটা পিছু হটেছিল, কিন্তু তাদের রাজনৈতিক শক্তি তো রয়েই গেছে। তাদের শিকড় তো উৎপাটন করা যায়নি। সেই শিকড় মূলোৎপাটন না হওয়া পর্যন্ত জঙ্গিরা এ ধরনের কর্মকা- চালিয়েই যাবে। এসব কর্মকা- কখন, কীভাবে করবে তা আগে বলা সম্ভব নয়। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতির চেষ্টা থাকতে পারে। নির্বাচন যাতে সঠিকভাবে না হয়, একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি ও নানারকম ভাবে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির একটা চেষ্টা থাকবে।
জঙ্গিদের সঙ্গে যাদের সম্পর্ক রয়েছে তারা এদেশে ধর্মীয় ও উগ্রবাদী রাজনীতি করে। যারা বাংলাদেশে স্লোগান তুলেছিল, ‘আমরা সবাই তালেবান, বাংলা হবে আফগান’, তারা কে, তাদেরকে আমরা সবাই চিনি। জানি। সেই রাজনীতি এখনো বাংলাদেশে বিদ্যমান, জঙ্গি কর্মকান্ডে তাদের সংশ্লিষ্টতা অবশ্যই আছে। তবে প্রচলিত গণতান্ত্রিক রাজনীতি যে সংগঠনগুলো করে তারা এ ধরনের জঙ্গিবাদী কর্মকান্ডে সঙ্গে যুক্ত আছে বলে মনে করি না। জামায়াতের জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা তো প্রমাণিত। আমরা তা দেখিয়েছি শতশত লেখা, গবেষণার মাধ্যমে। সেজন্যই বলছি, জঙ্গিদের শিকড় তবিয়তে আছে। কারণ, তাদের টাকাপয়সার যোগান রয়েছে। এ জায়গাটায় কাজ করতে হবে।
পরিচিতি : নিরাপত্তা বিশ্লেষক/ সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ
আপনার মতামত লিখুন :