শিরোনাম
◈ জাতিসংঘে সদস্যপদ প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর নিন্দা ফিলিস্তিনের, লজ্জাজনক বলল তুরস্ক ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের

প্রকাশিত : ২২ জুলাই, ২০১৮, ০২:১৯ রাত
আপডেট : ২২ জুলাই, ২০১৮, ০২:১৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যারা যুগের সাথে বদলাতে পারে না, যুগ তাদের পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়

ফেসবুক পোস্ট:  Kodak কোম্পানিকে মনে আছে? ১৯৯৮ সালে কোড্যাক কোম্পানিতে প্রায় ১লক্ষ ৭০ হাজার কর্মচারী কাজ করতেন। এবং বিশ্বে ছবি তোলার প্রায় ৮৫% ই কোড্যাক ফিল্ম ও ক্যামেরায় তোলা হত। গত কয়েক বছরে মোবাইল ক্যামেরার বাড়বাড়ন্ত হওয়ায় এমন অবস্থা হয় যে Kodak ক্যামেরার কোম্পানীটাই উঠে যায়। এমনকি Kodak সম্পুর্ন দেউলিয়া হয়ে পড়ে এবং এদের সমস্ত কর্মচারীকে বাধ্যতামূলক ছাঁটাই করা হয়।

ওই একই সময়ে আরো কতগুলি বিখ্যাত কোম্পানি তাদের ঝাঁপ পাকাপাকি বন্ধ করতে বাধ্য হয়। যেমন-

HMT (ঘড়ি)
BAJAJ (স্কুটার)
DYANORA (TV)
MURPHY (radio)
NOKIA (Mobile)
RAJDOOT (bike)
AMBASSADOR (গাড়ি)

এই উপরের কোম্পানিগুলোর মধ্যে কারুরই কোয়ালিটি খারাপ ছিল না। তবুও এই কোম্পানি গুলো উঠে গেল কেন? কারণ এরা সময়ের সাথে নিজেকে বদলাতে পারেনি।

এখনকার সময়ে দাঁড়িয়ে আপনি হয়তো ভাবতেও পারছেন না যে সামনের 10 বছরে দুনিয়া কতটা পাল্টে যেতে পারে! এবং আজকের 70%-90% চাকরিই সামনের 10 বছরে সম্পুর্নভাবে বিলুপ্ত হতে চলেছে। আমরা ধীরে ধীরে ঢুকে পড়েছি "চতুর্থ শিল্প বিপ্লব"-এর যুগে।

আজকের বিখ্যাত কোম্পানিগুলোর দিকে তাকান-

উবার কেবলমাত্র একটি Software-এর নাম। না, এদের নিজস্ব কোন গাড়ি নেই। তবু আজ বিশ্বের বৃহত্তম ট্যাক্সি-ভাড়ার কোম্পানি হল উবার।

১৯৯৪ সালে একটি গ্যারেজে সূচনা হয়েছিল Amazon নামের অনলাইন শপিং বিজনেস। আজ এর মালিক জেফ বেজোস পৃথিবীর ১নং ধনী।

Airbnb হল আজকে দুনিয়ার সবথেকে বড় হোটেল কোম্পানি। কিন্তু মজার ব্যাপার হল, পৃথিবীর একটি হোটেলও তাদের মালিকানায় নেই।

একইভাবে Paytm, ওলা ক্যাব, Oyo rooms ইত্যাদি অসংখ্য কোম্পানির উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে।

আজকে আমেরিকায় নতুন উকিলদের জন্য কোন কাজ নেই, কারণ IBM Watson নামে একটি আইনি সফটওয়্যার যে কোন নতুন উকিলের থেকে অনেক ভাল ওকালতি করতে পারে। এইভাবে পরের 10 বছরে প্রায় 90% আমেরিকানদের আর কোন চাকরি থাকবে না। বেঁচে থাকবে খালি বাকি 10%। এই 10% হবে বিশেষ বিশেষজ্ঞ।

নতুন ডাক্তারদেরও চাকরি যেতে বসেছে। Watson নামের Software মানুষের থেকেও 4 গুন নিখুঁত ভাবে ক্যানসার এবং অন্যান্য রোগ শনাক্ত করতে পারে। 2030 সালের মধ্যে কম্পিউটারের বুদ্ধি মানুষের বুদ্ধিকে ছাপিয়ে যাবে।

2019 সালের মধ্যেই রাস্তায় নামতে চলেছে চালকহীন গাড়ি। 2020 সালের মধ্যেই এই একটা আবিষ্কার বদলে দিতে পারে গোটা দুনিয়ার চালচিত্র। এর ফলে সামনের 10 বছরে আজকের 90% গাড়িই আর রাস্তায় দেখা যাবে না। বেঁচে থাকা গাড়িগুলো হয় ইলেক্ট্রিকে চলবে অথবা হাইব্রিড গাড়ি হবে। রাস্তাগুলো ক্রমশঃ ফাঁকা হতে থাকবে। পেট্রোলের ব্যবহার কমবে এবং পেট্রোল উৎপাদনকারী আরব দেশগুলি ক্রমশঃ দেউলিয়া হয়ে আসবে।

তখন গাড়ি লাগলে, উবারের মত কোন Software-এর কাছেই গাড়ি চাইতে হবে। আর গাড়ি চাইবার কিছুক্ষনের মধ্যেই সম্পুর্ন চালক-বিহীন একটা গাড়ি আপনার দরজার সামনে এসে দাঁড়াবে। আপনি যদি অনেকের সাথে Share করে ওই একই গাড়িতে যাত্রা করেন, তাহলে মাথাপিছু গাড়িভাড়া বাইকের থেকেও কম হবে।

গাড়িগুলো চালকবিহীন হবার ফলে 99% দুর্ঘটনা কমে যাবে। এবং সেই কারণেই গাড়ি-বীমা করানো বন্ধ হবে এবং গাড়ি-বিমার কোম্পানি গুলো সব উঠে যাবে।

গাড়ি চালানোর মত কাজগুলো আর পৃথিবীতে বেঁচে থাকবে না। 90% গাড়িই যখন রাস্তা থেকে উধাও হয়ে যাবে, তখন ট্রাফিক পুলিশ এবং পার্কিং-এর কর্মী-দেরও কোন প্রয়োজন থাকবে না।

ভেবে দেখুন, আজ থেকে 5-10 বছর আগেও রাস্তার মোড়ে মোড়ে STD বুথ ছিল। দেশে মোবাইল বিপ্লব আসার পর, এই সবকটা STD বুথই কিন্তু পাততাড়ি গুটাতে বাধ্য হল। যেগুলো টিকে রইল, তারা মোবাইল রিচার্জের দোকান হয়ে গেল। এরপর মোবাইল রিচার্জেও অনলাইন বিপ্লব এল। ঘরে বসেই অনলাইনে লোকে মোবাইল রিচার্জ করা শুরু করল। এই রিচার্জের দোকান গুলোকে তখন আবার বদল আনতে হল। এরা এখন কেবল মোবাইল ফোন কেনা-বেচা এবং সারাইয়ের দোকান হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে সেটাও বদলাবে খুব শিগগিরই। Amazon, Flipkart থেকে সরাসরি মোবাইল ফোন বিক্রি বাড়ছে।

টাইপ রাইটার মেশিন গুলা আজ কোথায়? টাইপিং ও শর্ট হ্যান্ড শিখুন সেই ট্রেনিং সেন্টার গুলিই বা আজ কোথায়??

টাকার সংজ্ঞাও পাল্টাচ্ছে। একসময়ের নগদ টাকা আজকের যুগে "প্লাস্টিক টাকায়" পরিণত হয়েছে। ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ডের যুগ ছিল কদিন আগেও। এখন সেটাও বদলে গিয়ে হয়ে যাচ্ছে মোবাইল ওয়ালেট-এর যুগ। Paytm-এর রমরমা বাজার, মোবাইলের এক টিপে টাকা এপার-ওপার।

যারা যুগের সাথে বদলাতে পারে না, যুগ তাদের পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়। তাই ক্রমাগত যুগের সাথে বদলাতে থাকুন।
সময়ের কোডাক ফিল্মের ফিতায় কখনো বেঁধে রাখবেন না ।প্রযুক্তির উদ্ভাবনার সাথে নিজেকে সব সময় চলমান রাখুন  সাফল্যকে সাথে রাখুন, সময়ের সাথে থাকুন।

লেখাটি ‘চৌধুরী নেয়াজ মোর্শেদ লিমন’র ফেসবুক থেকে নেয়া।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়