রফিক আহমেদ : গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নেতারা বলেছেন, মজুরি বোর্ডের সভায় মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়। অবিলম্বে ১৬ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করতে হবে। মঙ্গলবার সকাল ১১টায় পল্টনের মুক্তিভবনের প্রগতি সম্মেলন কক্ষে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের এক সংবাদ সম্মেলনে নেতারা এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কার্যকরি সভাপতি কাজী মো. রুহুল আমিন। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার, সঞ্চালনা করেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্রমিক নেতা ইকবাল হোসেন। আরও উপস্থিত ছিলেন কেএম মিন্টু, এম. এ শাহীন ও জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।
গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে বলা হয় গত সোমবার মজুরি বোর্ডের সভায় মালিক প্রতিনিধি নিম্নতম মজুরি ৬ হাজার ৩৬০ টাকা প্রস্তাবনা করেছেন যা বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিক ও দেশবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এই প্রস্তাবনার মধ্যদিয়ে বিজিএমইএ প্রমাণ করেছে যে, তারা সুষ্ঠ শিল্প মালিক নয়। তারা চরম শোষক ও নিপীড়ক, তাই এই অমানবিক প্রস্তাবনা পরিবর্তন করে শ্রমিকের জীবনমান উন্নয়ন শিল্পকে বিকাশিত করা ও জাতীয় অর্থনীতিক উন্নয়নের স্বার্থে নিম্নতম মোট মজুরি ১৬ হাজার টাকা মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান হয়।
গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নেতারা বলেন, দেশের বর্তমান বাজার দরের সঙ্গে মজুরির প্রস্তাবনা কোনোভাবেই সামাঞ্জস্যপূর্ণ নয়। সেখানে গার্মেন্টস শিল্পাঞ্চলে বস্তি বা টিনশেডের একটি রুমের ভাড়াই ৪-৫ হাজার টাকা দিতে হয়। সেখানে শ্রমিকদের খাদ্য, চিকিৎসা শিক্ষাসহ বেঁচে থাকার মত ন্যূনতম চাহিদা কিভাবে মিটাবে?
গতকাল মঙ্গলবার মজুরি বোর্ডের নির্ধারিত মিটিংয়ে মালিক পক্ষ থেকে যে প্রস্তাবনা করা হয়েছে তা থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় যে, মালিক সরকার মিলে মজুরি বৃদ্ধির নামে প্রহসন মঞ্চাস্থ করতে যাচ্ছেন। মালিকরা বাজার দর, আইএলও কনভেনশন, মুদ্রাস্ফীতি, আর্থসামাজিক অবস্থা এবং শ্রমিকের জীবনমান কোনকিছুর তোয়াক্কা না করে যে মজুরি প্রস্তাব করেছেন তা এদেশের গার্মেন্ট শ্রমিকসহ সকল বিবেকবান মানুষ গ্রহণযোগ্য বলে মনে করছেন না। অন্যদিকে শ্রমিক প্রতিনিধি পক্ষ থেকে যে প্রস্তাব করা হয়েছে তা শ্রমিকদের প্রাণের দাবি ১৬ হাজার টাকার বিষয়টি তোয়াক্কা না করে মালিকদের স্বার্থকেই সংরক্ষণ করা হয়েছে। যা এদেশের প্রায় ৪০ লাখ গার্মেন্ট শ্রমিক কোনোভাবেই মেনে নিবে না।
শ্রমিক নেতারা বলেন, মালিকরা যেনতেন একটা মজুরি ঘোষণা দিয়ে পার পেয়ে যাওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। সেই নীল নকশা বাস্তবায়নে তারা মিথ্যা মামলা দিয়ে গার্মেন্ট টিইউসি’র নেতৃবৃন্দকে দমন করার চেষ্টা চালাচ্ছে। মালিকদের কোন ষড়যন্ত্রই মজুরি আন্দোলনকে দমন করতে পারবে না।
এমতাবস্থায় তারা অবিলম্বে নিম্নতম মূল মজুরি ১০ হাজার টাকা আর মোট মজুরি ১৬ হাজার টাকা এবং একই হারে পিসরেটসহ সকল শ্রমিকদের মজুরি ঘোষণা করার দাবি জানান। তা না হলে ১৬ হাজার টাকা মজুরির দাবিতে আমাদের আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। কর্মসূচি : আগামী শুক্রবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে এই আন্দোলনকে বেগবান করতে সভা, সমাবেশ ও মিছিলসহ নানামুখী কর্মসূচি পালিত হবে।
আপনার মতামত লিখুন :