শিরোনাম
◈ চলচ্চিত্র ও টিভি খাতে ভারতের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করলেই ব্যবস্থা: ইসি আলমগীর  ◈ নির্বাচনের মাঝেই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শনিবার ঢাকা আসছেন ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ মুজিবনগর সরকারের ৪০০ টাকা মাসিক বেতনের কর্মচারি ছিলেন জিয়াউর রহমান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ১৭ জুলাই, ২০১৮, ১১:০৩ দুপুর
আপডেট : ১৭ জুলাই, ২০১৮, ১১:০৩ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

‘টানাটানির’ সময় ব্যাংকের টাকায় সরকারের টান

ডেস্ক রিপোর্ট : অর্থ সংকটের সময় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ নিচ্ছে সরকার। গত অর্থবছরের শেষের দিকে ঋণ গ্রহণের পরিমাণ বাড়তে থাকে। চলতি অর্থবছরের শুরুতেও সেই প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ হিসাবে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার কার্যদিবসে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে নিট ৪ হাজার ১২ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণের চেয়ে পরিশোধ করেছে বেশি। গত অর্থবছরের শেষ দুই মাসেও গড়ে দৈনিক প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ঋণ নেয় সরকার। সরকারের ঋণগ্রহণ সংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।

ওই প্রতিবেদনে ৫ জুলাই পর্যন্ত তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। ওই সময় পর্যন্ত কার্যদিবস ছিল চারদিন। গত অর্থবছরের শেষদিন ৩০ জুনে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে সরকারের ঋণস্থিতি ছিল ৬৬ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা। ৫ জুলাই তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭০ হাজার ৬৭২ কোটি টাকা। অর্থাৎ চার দিনে সরকার ৪ হাজার ১২ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে।

অর্থের অভাবের সময় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ঋণ নিলেও সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে সরকারের ঋণ স্থিতি ২৩ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ চার দিনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৩ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে সরকার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করলেও সামগ্রিকভাবে ব্যাংকিং খাতের কাছে সরকারের ঋণ স্থিতি ৯০ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৯১ হাজার ৭ কোটি টাকা। এই চার দিনে সরকারের ব্যাংকঋণ বেড়েছে ৬৬৯ কোটি টাকা।

একাধিক ব্যাংকার জানান, বেসরকারি খাতের ঋণের চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে তারল্য সংকটে পড়েছে বেশিরভাগ ব্যাংক। এই সংকটের কারণে সুদহার হুহু করে বাড়তে থাকে। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশনা অনুশারে বাড়তে থাকা সুদহারে লাগাম টানেন ব্যাংকের মালিকরা। গত পহেলা জুলাই থেকে আমানতে সর্বোচ্চ ৬ এবং ঋণে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ কার্যকরের ঘোষণা হয়েছে। সুদহার কমালে ঋণের বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়ে তারল্যের ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি হবে বলে তাদের ধারণা। এর মধ্যে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে সরকার বেশি ঋণ নিলে তারল্য সংকট তৈরি হতে পারে। এই সময়ে ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার প্রবণতা ব্যাংকগুলোর জন্য মাড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।

এদিকে অর্থমন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, অর্থ ছাড় করতে সময় লাগে, দৈনন্দিন কাজে অর্থের প্রয়োজন হয়; কিন্তু শুরুতেই আয় হয় না। তাই সবসময় অর্থবছরের শুরুর দিকে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বেশি থাকে। বিভিন্ন প্রকল্প ও বরাদ্দের অর্থ পাওয়ার পর সেখান থেকে প্রয়োজন মেটানো ও ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করা হয়, যার ফলে শুরুতে বাড়লেও পরবর্তী সময়ে তা কমে যায়। তারা জানান, মূলত নির্বাচনের বছরে পদ্মা সেতু, এলএনজি টার্মিনাল, মেট্রোরেলসহ বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে ব্যাপক অগ্রগতির ফলে সরকারের প্রচুর নগদ অর্থের প্রয়োজন হচ্ছে।

গত অর্থবছরে সরকারের ঋণগ্রহণ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বেশিরভাগ সময়ে সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার তুলনায় পরিশোধ করছিল বেশি। এতে করে ব্যাংকে সরকারের ঋণস্থিতি অনেক কমে যায়। আগের বছরের জুনের তুলনায় গত এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে ব্যাংক খাতে সরকারের নিট ঋণ ২৫ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা কমে স্থিতি দাঁড়ায় ৭১ হাজার ৬২৯ কোটি টাকায়। তবে শেষ দুই মাসে ঋণস্থিতি ২৬ হাজার ৬৩০ কোটি বেড়ে ৯০ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা হয়েছে। এতে করে গত অর্থবছর ব্যাংক খাতে সরকারের নিট ঋণ বেড়েছে ৯২৬ কোটি টাকা।

গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের মূল বাজেটের ঘাটতি পূরণে ব্যাংক থেকে সরকার ২৮ হাজার ২০৩ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে। সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ১৯ হাজার ৯১৭ কোটি টাকা করা হয়। আগের ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ব্যাংক থেকে সরকার যে পরিমাণ ঋণ নিয়েছিল, পরিশোধ করেছিল তার চেয়ে ১৮ হাজার ২৯ কোটি টাকা বেশি। তবে নতুন ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ব্যাংক থেকে ৪২ হাজার ২৯ কোটি টাকা নিট ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। মূলত সঞ্চয়পত্র থেকে ব্যাপক আয় বাড়ায় ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নিতে হয়নি সরকারকে। গত অর্থবছরের মে পর্যন্ত হিসাবে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে সরকারের নিট আয় ৪৬ হাজার ৯৬৯ কোটি টাকা হলেও চলতি বছরের বাজেটে এই বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৬ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা।-দৈনিক আমাদের সময়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়