শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ১৭ জুলাই, ২০১৮, ০৯:২৩ সকাল
আপডেট : ১৭ জুলাই, ২০১৮, ০৯:২৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আওয়ামী লীগের দুর্গ দখলে নিতে মরিয়া বিএনপি

ডেস্ক রিপোর্ট : প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি এবং খনিজ সম্পদ পাথরের সাম্রাজ্য সিলেট-৪ আসন। সীমান্ত জনপদ জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসন। চলতি মেয়াদ নিয়ে পাঁচবার এ আসনে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের ইমরান আহমদ। এ কারণে আওয়ামী লীগের শক্ত দুর্গ হিসেবে আসনটি বিবেচিত হয়ে আসছে। বিএনপি এখানে সর্বশেষ নির্বাচিত হয় ২০০১ সালে, সংসদ সদস্য হন দিলদার হোসেন সেলিম। প্রয়াত অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ও ১২ জুনে অনুষ্ঠিত পৃথক দুটি নির্বাচনে জয়ী হন এখান থেকে। এ সময় এম সাইফুর রহমান তার জন্মভূমি মৌলভীবাজার সদর আসনেও জয়ী হওয়ায় তিনি সিলেট-৪ আসনটি ছেড়ে দেন। ফলে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইমরান আহমদ নির্বাচিত হয়ে আসনটি পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হন।

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের ইমরান আহমদ আসনটি বিএনপির কাছ থেকে পুনরুদ্ধারের পর দশম সংসদ নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীকেও পরাজিত করেন। সঙ্গত কারণে আগামী নির্বাচনেও তিনি মনোনয়ন পাবেন বলে মনে করছেন অনেকে। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের দুর্গ দখলে নিতে তৎপরতা চালাচ্ছেন বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী একাধিক প্রার্থী। তবে ইমরান আহমদের সঙ্গে ভোটযুদ্ধের জন্য মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক দিলদার হোসেন সেলিম বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

শুধু এ দুজন নন- নিজ নিজ দলে মনোনয়ন পাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন আরো চার নেতা। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমদ দশম সংসদ নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন। তবে আগামীতে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন তিনি। গতবারের মতো এবারো দলের মনোনয়ন চাইবেন গোয়াইনঘাট ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ফজলুল হকও।

এদিকে এ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য দিলদার হোসেন সেলিমের সঙ্গে মনোনয়ন দৌড়ে আছেন গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম চৌধুরী, সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক এডভোকেট নুরুল হক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এডভোকেট শামসুজ্জামান জামান । আর ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে জামায়াতের আলহাজ জয়নাল আবেদীন মনোনয়ন চাইবেন। তিনি জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের দুবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান।

এ আসনের সাধারণ ভোটার ও দলীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে গ্রুপিং-কোন্দলের কারণে এই আসনে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা একাধিক ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এর প্রভাব পড়েছে সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোতেও। বিশেষ করে কোম্পানীগঞ্জ পাথর রাজ্যের অঘোষিত ‘রাজা’ যুবলীগ নেতা ‘পাথর শামীম’ ও সংসদ সদস্যের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলীর নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ হয়েছেন দলের নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে পরিচ্ছন্ন ক্লিন ইমেজের অধিকারী সংসদ সদস্যের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।

তবে এ আসনের বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের এমপি হওয়ার বাসনা আর ভেতরের কোন্দলে খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থায় নাই তারাও। এ সুযোগে জামায়াত ইসলামী এ আসনটি তাদের জন্য ছেড়ে দিতে জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তবে শেষ পর্যন্ত বিএনপি জোটের ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রার্থী নির্বাচনে সক্ষম হলে ও লেভেল প্লেয়িং অবস্থায় নির্বাচন হলে লড়াই হবে সমানে সমানে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করে।

এ ব্যাপারে বর্তমান সংসদ সদস্য ইমরান আহমদ বলেছেন, দলের হাইকমান্ড অতীতে তাকে মূল্যায়ন করে বারবার মনোনয়ন দিয়েছেন। আর তৃণমূল নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষও ভালোবেসে তাকে নির্বাচিত করে তাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। বিগত সময়ে এ অঞ্চলে তিনি ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন বলে দাবি করেন। জনগণ অতীতের মতো আগামীতেও তার কাজের মূল্যায়ন করবে বলে তিনি আশা করেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক দিলদার হোসেন সেলিম জানিয়েছেন, এমপি থাকার সময় তিনি এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। এ জন্য নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ ভোটাররাও তাকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চাইছেন। দল থেকে তাকেই মনোনয়ন দেয়া হবে বলে তিনি মনে করছেন।

বিএনপির জেলা সহসভাপতি আবদুল হাকিম চৌধুরী জানান, তিনি পরপর দুবার আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে পরাজিত করে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে এ আসনের ভোটাররা তাদের সেবা করার জন্য তাকে দলীয় মনোনয়ন চাওয়ার প্রেরণা জোগাচ্ছেন। তার বিশ্বাস, তিনি মনোনয়ন পাবেন।

আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ফারুক আহমদ বলেন, বিএনপি-জামায়াতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্যই তিনি গত নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। তবে সব দিক বিবেচনা করে দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে মনোনয়ন দেবেন বলে তিনি বিশ্বাস করছেন।

গোয়াইনঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যক্ষ ফজলুল হক বলেছেন, মনোনয়ন না পেয়েও তিনি গত নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন। জনগণের স্বার্থে তিনি এবারো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইবেন।

জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা আলহাজ জয়নাল আবেদীন বলেন, জোটগতভাবে নির্বাচন হলে আমি এ আসন থেকে জোটের প্রার্থী দাবিদার। আমার দলের হাইকমান্ড থেকেও আমাকে এ আসনে গণসংযোগ ও প্রচারণা চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

এদিকে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ টি ইউ তাজ রহমান। তিনি বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের নির্দেশে তিনি এলাকায় কাজ করে যাচ্ছেন। এখন তিনি পার্টিকে সংগঠিত করছেন।-ভোরের কাগজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়