শিরোনাম
◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলার নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ মুজিবনগর সরকারের ৪০০ টাকা মাসিক বেতনের কর্মচারি ছিলেন জিয়াউর রহমান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি ◈ টাইমের প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকায় বাংলাদেশের মেরিনা (ভিডিও) ◈ দেশের মানুষকে ডাল-ভাত খাওয়াতে ব্যর্থ হয়েছিল বিএনপি : প্রধানমন্ত্রী ◈ দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলের ফসফরাস বোমা হামলা

প্রকাশিত : ১৭ জুলাই, ২০১৮, ০২:৫৬ রাত
আপডেট : ১৭ জুলাই, ২০১৮, ০২:৫৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অপচয় ও পচে নষ্ট হয়েছে দুই হাজার কোটি টাকার আম

মতিনুজ্জামান মিটু : চলতি মৌসুমে দেশে অপচয় ও পচে নষ্ট হয়েছে অন্তত দুই হাজার কোটি টাকার আম। কৃষিবিদ, চাষি ও ব্যবসায়িদের সঙ্গে আলাপ করে এ কথা জানা গেছে। অসময়ে অতিবৃষ্টি- রোদসহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়, অতিরিক্ত মাছির আক্রমণ, আম উৎপাদন ও সংগ্রহের ব্যবস্থাপনা এবং বিপনন এর দূর্বলতা, উপর থেকে চাপিয়ে দেয়া বাস্তব বিবর্জিত আম পাড়ার রুটিন ও মৌসুমের শুরুতে অযৌক্তিক অভিযানে ওই ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অপচয় ও পচনের কারণ খতিয়ে দেখতে আম সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে জাতীয় সংলাপ ও গবেষণার তাগিদ দিয়েছেন আম গবেষক, কৃষিবিদ ও চাষিরা। কৃষিবিদদের হিসেবে এবার উৎপাদিত আমের ৫০ ভাগ নষ্ট হয়েছে। আর তাতে অন্তত ১০ লাখ মেট্রিক টন আম অপচয় ও পচে নষ্ট হয়েছে। মেট্রিক টন প্রতি ২০ হাজার হলে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় দুই হাজার কোটি টাকা।

এ বছর আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। এই সঙ্গে বেড়েছে আম সংগ্রহের অপচয় ও পচনের পরিমাণ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হর্টিকালচার উইং এর হিসেবে গত মৌসুম অর্থাৎ ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে দেশে আম উৎপাদন হয়েছিল ২১ লাখ ৪৩ হাজার ৪৪৩ মেট্রিক টন। চলতি মৌসুমে উৎপাদন আরও অনেক বেশি হবে বলে জানিয়েছেন উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইং এর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. মো. আজহার আলীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কৃষিবিদরা।

বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের জাতীয় পরামর্শক এম. এনামুল হক বলেন, চলতি মৌসুমে আমের ফলন অন্তত ৪০ ভাগ বেশি হওয়ার কথা। এদিকে ফলন বাড়লেও এবার আমের পচন ও সংগ্রহত্তোর ক্ষতি পরিমান আগের যে কোনো বছরের চেয়ে অনেক বেশি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের বাংলাদেশ ফাইটোস্যানিটারী সামর্থ শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের কনসালটেন্ট(পিআরএ) কৃষিবিদ মো. আহছান উল্যা বলেন, চলতি মৌসুমে প্রায় ৫০ ভাগ আম পচে নষ্ট হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া এবার আমের চেহারাও খারাপ হয়েছে। ল্যাংড়ার কিছুটা এবং ফজলির চেহারা ভাল হলেও হিমসাগর বা খিরসাপাত, লক্ষণভোগ, মোম্বাইসহ অন্যান্য আমের চেহারা ভাল ছিলনা। আমের গায়ে ছিল কালো দাগে। অন্যান্যবার সাধারণত আম পাকার সময়ে গরম এবং রৌদ্র থাকে। কিন্তু এবার তা ছিলনা। বরং প্রায়ই থেকে থেকে বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টিপাতের কারণে আম দেরিতে এবং একসঙ্গে পেকে যায়। যা আম পচনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অতিবৃষ্টিতে আম এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে যেতে পচে যাচ্ছে। আম পচে যাওয়ায় ইউরোপে আম রিজেক্ট হয়েছে। কি ব্যবস্থা নিলে পচন রোধ করা যাবে বা পেস্টিসাইড দেয়া যাবে কিনা বা দিলে-কি পরিমাণে কোন কীটনাশক দিতে হবে তা খতিয়ে দেখতে হবে। কোন পেস্টি সাইড দিলে পচন রোধ হবে অথচ আমে এমআরএল কম হবে বা সহনশীল মাত্রায় থাকবে তা নির্ণয় করতে হবে। এ জন্য গবেষণা দরকার।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ জানান, আমসহ বাংলাদেশে উৎপাদিত অধিকাংশ ফলই মৌসুমী এবং দ্রুত পচনশীল। বাংলাদেশে ফল সংগ্রহোত্তর ক্ষতির পরিমাণ ২৫ থেকে ৫০ ভাগ পর্যন্ত হয়ে থাকে। যা মানব স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির জন্য হুমকিস্বরূপ।

কৃষিবিদ, বাগানি এবং চাষিরা জানান, অনুন্নত যোগাযোগ এবং ব্যবস্থাপনার দূর্বলতায় আমের দাম কমে যায় এবং নষ্ট হয়। ক্ষতিগ্রস্থ হয় কৃষকসহ আম সংশ্লিষ্ট সবাই। চাপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের উর্দ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. মো. শরফ উদ্দিন জানান, এবছর যা হবার হয়েছে আগামী বছরে আর যাতে ক্ষতি না হয় তার জন্য চাষিসহ আম সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে জরুরী ভিত্তিতে জাতীয় সংলাপ আয়োজন করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়