নিনা আফরিন, পটুয়াখালী : পর্যটননগরী কুয়াকাটায় ১৫দিন আটকে রেখে এক তরুণী (১৮) কে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী রবিবার (১৫ জুলাই) ভোররাতে বন্দি দশা থেকে পালিয়ে এসে পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এতে ঘটনাটি জনসমক্ষে প্রকাশ পাওয়ার পর অভিযুক্ত শাহজাহান ও শাহআলম তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে গা ঢাকা দেয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, অভিযুক্তদের রক্ষায় একটি মহল ইতোমধ্যে দৌড়ঝাাঁপ শুরু করেছে।
স্থানীয় সূত্র ও ভিকটিম তরুণী জানায়, বরগুনা জেলার পাগডানা গ্রামের ওই ভিকটিম তরুণী সৎ মায়ের প্রতিনিয়ত অত্যাচারে টিকতে না পেরে কাজ এবং নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে পনের দিন পূর্বে পালিয়ে কুয়কাটায় আসে। কুয়াকাটায় আসার পরে পরিচয় জেনে আশ্রয় এবং কাজের প্রলোভন দেখিয়ে কুয়াকাটা পৌর মার্কেটের রুমানা হোটেলে এন্ড রেষ্ট্রুরেন্টের মালিক শাহাজাহান তাকে কাজ দেয়। নানা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে সেদিন রাতেই ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে শাহজাহান। পরবর্তীতে পাশের সেলুনের শাহআলমও তাকে ধর্ষণ করে। এরপর বিভিন্ন সময় বিভিন্ন হোটেলে দেহ ব্যবসা করতে বাধ্য করে তারা। পালিয়ে আসার ২/৩দিন পূর্বেও মহিপুরে শাহজাহানের চায়ের দোকানে দু’দিন আটকে রেখে তাকে ফের ধর্ষণ করে শাহজাহান। সুযোগ বুঝে রবিবার ভোররাতে শাহজাহানের একটি পুরনো মোবাইল ফোন সেট ও তিনশত টাকা নিয়ে পালিয়ে সালাম বাবুর্চির বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে তাদের সাহায্য চায় ভিকটিম। এরপর কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আবদুল বারেক মোল্লার সহায়তায় আইনগত সহায়তা পেতে ভিকটিম ওই তরুণীকে স্থানীয়রা পৌঁছে দেয় মহিপুর থানা পুলিশের কাছে।
স্থানীয় ইউসুফ ও মোটরসাইকেল চালক খলিল জানান, বিষয়টি স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার শাহআলম ও পৌরমেয়র আবদুল বারেক মোল্লার নির্দেশে ভিকটিম ওই তরুণীকে মহিপুর থানা পুলিশের হেফাজতে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আবদুল বারেক মোল্লা জানান, স্থানীয়রা আমাকে জানানোর পর আমি আইনগত সহায়তা পেতে মেয়েটিকে থানায় নিয়ে যেতে বলেছি।
এদিকে মহিপুর থানা পুলিশ কোন রকম আইনী পদক্ষেপ এবং ভিকটিম ওই তরুণীর মেডিকেল কিংবা ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়াই তাকে থানা থেকে প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে সরিয়ে দেয়। এমনকি পুলিশ ভিকটিম ওই তরুণী থানায় যায়নি বলে সাংবাদিকদের জানায়।
এ বিষয়ে মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, ’আমি বিষয়টি স্থানীয়দের কাছ থেকে শুনেছি। ভিকটিম থানায় এসে অভিযোগ দিলে যথাযথ আইনী পদক্ষেপ নেয়ার হবে।’
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান জানান,বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।
আপনার মতামত লিখুন :