রবিন আকরাম : কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগ আবারো হামলা চালিয়েছে। হামলা থেকে চারজন শিক্ষকও রেহাই পাননি। হামলার শিকার একজন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ড. তানজিম উদ্দিন বলেন, ‘ছাত্রলীগের ছেলেরা মাইকে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে। এমনকি আমার দিকে টাকা ছুড়ে মেরে আমাকে বলে আমি নাকি জামায়াতের টাকা খেয়ে আন্দোলন করি। আন্দোলনে আমরা মোট চারজন শিক্ষক ছিলাম। আর ছাত্ররা ছিল। হামলাকারীদের মধ্যেই আমাদের যারা পরিচিত ছাত্র ছিল, তারা আমাদের রক্ষা করে। ১০-১৫ জন ছাত্র আহত হয়।'
তিনি অভিযোগ করেন, ‘আমার মনে হয়েছে হামলাটি পূর্ব পরিকিল্পিত৷ কারণ, যখন আমাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও হামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছিলো, তখন ভিসি ও প্রক্টর দু'জনকেই ফোন করি। কিন্তু তাঁদের মেবাইল ফোন বন্ধ ছিল। কিন্তু হামলা শেষ হওয়ার পর আমি প্রক্টরকে ফোনে পাই। তখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয় পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার জন্য উল্টো আমাদেরই দায়ী করেন। তার এই কথা আমাকে মানসিক পীড়ণের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।'
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ফাহমিদুল হক বলেন, ‘মানববন্ধনের শেষ পর্যায়ে সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আমাদের ঘিরে ফেলে। পরে আমরা রাজু ভাস্কর্যের দিকে যাওয়ার পথে শিববাড়ি মোড়ে শেখ রাসেল টাওয়ারের সামনে গেলে তারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় এবং আমাদের লাঞ্ছিত করে।'
শিক্ষার্থী রাফিয়া তামান্না বলেন, ‘তারা প্রথম থেকে আমাদের মানববন্ধনে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে৷ তারা আমাদের শিক্ষকদের জামায়াত-শিবির বলে অপমান করেছে। আমরা মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় হামলা চালায়। সাংবাদিকরা এগিয়ে এলে তাঁদের ওপরও হামলা করে। এসএম হলের ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সায়েম সাংবাদিকদের ক্যামেরা ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে। এবং কয়েকটি মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলে।'
প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীরা এখন আর মাঠে নামতে পারছেন না। তাঁদের ওপর দফায় দফায় হামলার পর এখন প্রতিবাদ সমাবেশেও হামলা হচ্ছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্তত ১৩ জন নেতা এখন কারাগারে আছেন। তাঁদের রিমান্ডেও নেয়া হয়েছে। আহতরা কোনো হাসপাতালে চিকিৎসাও পচ্ছেন না। আর যাতে তাঁরা রাস্তায় নামতে না পারেন, তার জন্য হুমকি অব্যাহত আছে। ডয়চে ভেলে
আপনার মতামত লিখুন :