সিফাত বন্যা : এটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর দ্বিতীয়ার্ধের সিলেবাস। এই মাসের ১ তারিখ থেকে আমি প্রায় ২০ জন ছাত্রছাত্রী কে ব্যক্তিগতভাবে পড়াচ্ছি। এরা সবাই সরকারী বিদ্যালয়ে পড়ে। এবং নিতান্তই নিম্নবিত্ত ঘরের সন্তান এরা। যাইহোক, পড়াতে গিয়ে আমার যে অভিজ্ঞতা সেটা নিয়ে আমি রীতিমত হতবাক.....
১) একজন ছাত্রী নাম কান্তা, সে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ে কিন্তুু সাধারণ যোগ, বিয়োগই সে ঠিকমত করতে পারে না।। অথচ সে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ে। ২) প্রথম শ্রেণীতে পড়ে একজন নাম লামিয়া, সে অ আ লিখতে পারে না, অথচ শিশুশ্রেণীও আছে এখন সরকারী বিদ্যালয়ে। ৩) এই সিলেবাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে ইংরেজি এৎধসসধৎ ও আছে, কিন্তুু মজার বিষয় হলো এৎধসসধৎ কি জিনিস চতুর্থ শ্রেণীর এই ছাত্রছাত্রী গুলো জানেই না।। আমাকে একজন বলছে, আমার খালামনি একদিন আমাকে বলেছিল,এমনকিছু। ৪) আমি জানতে চাইলাম এখানে তো সঙ্গীত আছে, তোমাদের কি কোন শিক্ষক আছে,ওরা হেসে দিয়ে বলল,,না আপু। পরীক্ষার সময় আমাদের বলে জাতীয় সঙ্গীত গাও। ৫) চারু ও কারুকলা নিয়ে এবার বলছি, এটা জানতে চাইলেও বলল, পরীক্ষার সময় ছবি টবি আঁকতে দেয়,,সারা বছর কোনকিছুই হয় না।
৬) শারীরিক শিক্ষা : হা হা হা,ওরা হেসে দিয়ে বলে এটা আবার কি আপু! ৭) এবং বোর্ডের বই ছাড়া ওদের কাছে কোন বাড়তি বই নেই,,সিলেবাস অনুযায়ী। এবং এ বিষয়ে শিক্ষকদের কোন মাথাব্যথা ও নেই। ৮) উক্ত বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি একজন বিশিষ্ট আওয়ামীলীগ নেতা। জীবনে এই বিদ্যালয় মুখো হয়েছেন কিনা আমার জানা নেই। ৯) আমাদের দেশের শিক্ষার হার তবুও বেড়েই চলছে এবং চলবেই। ১০) আমাদের দেশ তবুও উন্নয়নশীল উন্নত দেশে পরিণত হবে। ১১) সরকারী আমলাদের কোন সুযোগ সুবিধার অভাব হবেনা তবুও বরং দিনদিন বেড়েই চলবে। ১২) এবং একদিন বাংলাদেশ এধরনের অর্ধশিক্ষিত সন্তানদের হাত ধরে বিশ্বের সাথে লড়াই করার জন্য চেষ্টা করবে।
১৩) দিনশেষে আমরা সবাই ভালমানুষ এবং আমাদের সততার কোন অভাব নেই,,কারন আমরা মুসলিম প্রধান দেশে বাস করি। আমরা সবাই জান্নাতবাসী হবো বলেই হালাল রুজি-রোজগার করি। আমার বাংলাদেশ,,এভাবেই এগিয়ে চলছে....
পরিচিতি: সাংগঠনিক সচিব, নাট্যভ’মি/ ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :