শিরোনাম
◈ সাভারে শো-রুমের স্টোররুমে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ২ ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ চলচ্চিত্র ও টিভি খাতে ভারতের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করলেই ব্যবস্থা: ইসি আলমগীর  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের

প্রকাশিত : ১৫ জুলাই, ২০১৮, ০৮:০০ সকাল
আপডেট : ১৫ জুলাই, ২০১৮, ০৮:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অভিযানের মাঝেও মাদক বেচাকেনা, বেড়েছে দাম

ডেস্ক রিপোর্ট : দেশজুড়ে চলমান মাদকবিরোধী অভিযান চললেও চাহিদা কমেনি ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইন, গাঁজাসহ অন্য যে কোনো ধরনের মাদকের। চাহিদা মেটাতে বেড়েছে সব ধরনের মাদকদ্রব্যের দামও। বিক্রি হচ্ছে একটু রাখঢাক করে। তবে নজরদারি না থাকায় বারগুলোয় বেড়েছে ভিড়। অনুমোদন ছাড়াই হাজার হাজার মদ্যপায়ী মদ-বিয়ারের নেশায় বুদ হচ্ছে।

মিয়ানমার থেকে আসা প্রতি পিস ইয়াবা এখন ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়। অভিযান শুরুর আগে এর দাম ছিল ৪০০-৫০০ টাকা। অন্যদিকে ভারত থেকে অবৈধভাবে আসা ফেনসিডিলের দাম এক লাফে প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। বর্তমানে এক বোতল ফেনসিডিল বিক্রি হচ্ছে ১২০০-১৫০০ টাকায়, যা আগে ৪০০-৫০০ টাকায় পাওয়া যেত। গাঁজা আগে সর্বনি¤œ ২০ টাকা পুড়িয়া বিক্রি হলেও এখন তা ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হেরোইন আগে ছিল ১০০ টাকা পুড়িয়া, তা এখন আড়াইশ টাকায় হাতবদল হচ্ছে।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ইয়াবার কারণে ফেনসিডিলের কদর কমে গেলেও চলমান অভিযানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টার্গেটে ইয়াবা ব্যবসায়ী ও সেবীরা প্রাধান্য পাচ্ছে। এ অবস্থায় ফেনসিডিল ছেড়ে যারা ইয়াবা ব্যবসা বা নেশায় বুদ হয়েছিলেন তারা আবার ফিরেছেন আগের নেশায়। বেড়েছে ফেনসিডিলের কদর। গত এক সপ্তাহে রাজধানী ও আশপাশে অভিযান চালিয়ে কয়েক হাজার বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে র‌্যাব-পুলিশ। আবার যারা ইয়াবার নেশা থেকে বের হতে পারছেন না তারা নানান কৌশলে চড়া দামে সংগ্রহ করছেন তা।

নিয়মিত মাদক সেবন করেন এমন কয়েক জনের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, যারা ফেনসিডিল, হেরোইন ও ইয়াবা সেবন করে, তারা বিরতি দিলে পেটের পীড়া দেখা দেয়। মেজাজ খিটখিটে হয়। শরীরে দুর্বলতা অনুভব হয়। মূলত ইয়াবা সেবন করলে নির্ঘুম সময় কাটে। বিরতি দিলে

শরীর দুর্বল হয়ে উল্টো ফল হয়। ফেনসিডিল সেবনের পর বেশি মিষ্টি দিয়ে দুধ চা সেবনের পর অধিক সময় ঘুমায়। বন্ধ করলে অস্বস্তি থেকে মানসিক সমস্যা হয়। হেরোইন সেবীরা পরে দুধ পান করেন। সেবন বন্ধ করলে তারা খেই হারিয়ে ফেলেন। গাঁজা সেবীরা ঝিম ধরে থাকেন, অহেতুক হাসেন। বন্ধ করে দিলে তাদের মধ্যে উদাসীনতা ভর করে। এ অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে মাদকের সহজলভ্যতা কমেছে, তবে থেমে নেই বিকিকিনি। রাঘববোয়ালরা এখনো অধরা থাকায় কৌশল বদলে নানান মাধ্যমে তারা মাদকের চালান পৌঁছে দিচ্ছে খুচরো বিক্রেতা ও সেবীদের হাতে। আর সীমান্তপথে ইয়াবা ও ফেনসিডিলের চালান আসা থেমে যায়নি। অভিযোগ রয়েছে, এখন মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় অসাধু সদস্যদের হাতে।

সূত্রমতে, অনেকটা ঢাকঢোল পিটিয়ে গত ১৮ মে থেকে দেশব্যাপী মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু করে পুলিশ। ৪ মে থেকে পৃথকভাবে অভিযানে নামে র‌্যাব। চলমান অভিযানে এ পর্যন্ত সারা দেশে গ্রেপ্তার হয়েছে ২২ হাজার মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ী, মামলা হয়েছে ১৪ হাজার ৯৩৩টি। ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে মোট ১৫৩ জন। যাদের মধ্যে পুলিশের সঙ্গে ৮৪ জন, র‌্যাবের সঙ্গে ৩৪ জন এবং বাকি ৩৫ জন ‘মাদক ব্যবসায়ীদের দুই পক্ষের’ ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে। গত জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ১৯ হাজার ৫৬ অভিযান চালিয়ে ৬ হাজার ১৩২ জন আসামির বিরুদ্ধে ৫ হাজার ৪৭৮টি মামলা করেছে। এ সময় ১২ লাখ ২৯ হাজার ৪৪১টি ইয়াবা ট্যাবলেট, ১১ হাজার ১৩২ বোতল ফেনসিডিল, ৫ হাজার ৬৪১ কেজি হেরোইন, ১ হাজার ৬৮২ কেজি গাঁজা, ৫ হাজারের বেশি অ্যাম্পুল ইনজেকশন উদ্ধার করা হয়েছে। মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত এক বছরে শুধু মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরেই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে ৭২ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয় আরো ৯০ জনকে। পুলিশের একাধিক সদস্যকেও গ্রেপ্তার করা হয় মাদক ব্যবসায় সংশ্নিষ্টতার কারণে। এখনো অর্ধশতাধিক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তালিকায় ঢাকার প্রভাবশালী ৮২ মাদক ব্যবসায়ীর নাম রয়েছে। তালিকাভুক্ত গডফাদার হিসেবে শীর্ষে থাকা মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পের ইসতিয়াক ওরফে কামরুল হাসান, নাদিম ওরফে পঁচিশ এখনো অধরা। এ ছাড়া এই তালিকাভুক্ত প্রভাবশালী পাইকারি মাদক ব্যবসায়ী ও গডফাদার উত্তরার ফজলুল করিম, বাড্ডার রিয়াদউল্লাহ, বংশালের নাছির উদ্দিন ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। এ তালিকায় আরো রয়েছে পাইকারি ইয়াবা ব্যবসায়ী ছাব্বির হোসেন ওরফে সোনা মিয়া, কামাল হোসেন, মোবারক হোসেন বাবু, আনোয়ারা বেগম ওরফে আনু, নারগিস ওরফে মামী ওরফে সকার বউ, দয়াগঞ্জের মাদক সম্রাজ্ঞী রহিমা বেগম, মুগদার পারভীন ও শফিকুল ইসলাম মলাই, ডেমরার রাজু আহম্মেদ, মুগদার আলম হোসেন, কমলাপুরের লিটন, ইসলামবাগের ওমর ফারুক, কামরাঙ্গীরচরের খুরশিদা ওরফে খুশি, মোহাম্মদপুরের শহীদুজ্জামান ওরফে নাভিদ, শাহবাগ এলাকার শামীম শিকদার, চানখারপুলের পারভীন আক্তার, উত্তরার গোলাম সামদানী ফিরোজ, এনায়েতুল করিম ও শরীফ ভূঁইয়া আকিক, ভাটারার সাহিদা বেগম ইতি, কারওয়ান বাজারের মাহমুদা খাতুন, মিনা বেগম, বংশালের কাশেম, সেলিম ও সূত্রাপুরের হানিফ হোসেন উজ্জ্বল। - ভোরের কাগজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়