শিরোনাম
◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ ভিত্তিহীন মামলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের নাজেহাল করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী ◈ অপরাধের কারণেই বিএনপি নেতা-কর্মীদের  বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী  ◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি  ◈ ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক ◈ বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে বাস ঢু‌কে প্রকৌশলী নিহত ◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন

প্রকাশিত : ১৫ জুলাই, ২০১৮, ০৩:৪১ রাত
আপডেট : ১৫ জুলাই, ২০১৮, ০৩:৪১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কোটা বাতিলের ওয়াদা রক্ষা না করে প্রধানমন্ত্রী শপথ ভঙ্গ করেছেন : শিবির সভাপতি

রফিক আহমেদ : বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত বলেছেন, ছাত্রসমাজের দাবির মুখে প্রধানমন্ত্রী বিরাগভাজন হয়ে সংসদে দাঁড়িয়ে জাতির সামনে কোটা পদ্ধতি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এখন আবার তিনি আক্রোশের বশবর্তী হয়ে আদালতের দোহাই দিয়ে আগের মতই কোটা বহাল রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। অথচ সাংবিধানিক ভাবে শপথের সময় তিনি বলেছিলেন যে তিনি কারো প্রতি বিরাগভাজন হবেন না। সুতরাং কোটা বাতিলের ওয়াদা রক্ষা না করে প্রধানমন্ত্রী শপথ ভঙ্গ করেছেন। শনিবার রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী পূর্ব আয়োজিত থানা দায়িত্বশীল শিক্ষা বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বৈঠকে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. ফখরুদ্দীন মানিক। মহানগরী সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন হেলালীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি হাফিজুর রহমানের পরিচালনায় শিক্ষাশিবিরে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক রাজিবুল হাসান বাপ্পি, আইন সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন, সদ্য বিদায়ী সভাপতি সোহেল রানা মিঠু, মহানগরী অফিস সম্পাদক- আবুল খায়ের ও অর্থ সম্পাদক মুজিবুর রহমানসহ মহানগরীর অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

শিবির সভাপতি বলেন, কোটা সংস্কার কতটা যৌক্তিক ও জরুরি তা কোটা আন্দোলনে ছাত্রসমাজ, সকল ছাত্র সংগঠন, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, বিভিন্ন শিক্ষক সমিতি এবং সর্বস্তরের জনতার একাত্বতা প্রকাশের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে। ছাত্রসমাজ চেয়েছিল কোটা সংস্কার। প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনে ভীত শঙ্কিত হয়ে পবিত্র সংসদে দাঁড়িয়ে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি যে মন থেকে নয় বরং ক্ষিপ্ত হয়ে ঘোষণা দিয়েছিলেন তা কোটা বহাল রাখা নিয়ে তার বক্তব্যের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে। তিনি ছাত্র সমাজকে দেয়া ওয়াদা নিজেই ভঙ্গ করেছেন। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ঘোষণা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। উল্টো কোটা আন্দোলনকারীদের উপর সন্ত্রাসী ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দিয়ে অনেক ছাত্রকে মারাত্বকভাবে আহত করেছেন। প্রকাশ্য ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করেছে ছাত্রলীগ। পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার নির্যাতন করা হচ্ছে মেধাবী ছাত্রদের। চিকিৎসা সেবা মৌলিক অধিকার হলেও হামলায় মারাতœক আহত মেধাবী ছাত্রকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করে সরকারি হাসপাতাল থেকে সরকারের বিভিন্ন মহলের নির্দেশে বের করে দেয়া হয়েছে। ঢাবি ভিসি কোটা আন্দোলনকারীদের জঙ্গি বলে আখ্যায়িত করেছেন। কোটা আন্দোলনকারীদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।

সর্বশেষ, যে সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিলের ঘোষণা করেছিলেন সেই সংসদে দাঁড়িয়েই আবার কোটা বহাল রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। মূলত কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ ও ছাত্রলীগের হামলা, মামলা, রিমান্ড, নির্যাতন, ঢাবি ভিসির বক্তব্য এবং প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ বক্তব্য একই সূত্রে গাথা। যা ছাত্রসমাজের সঙ্গে চরম প্রতারণা ছাড়া কিছু নয়। প্রধানমন্ত্রী আদালতের দোহাই দিয়ে কোটা বহাল রাখার যে ঘোষণা দিয়েছে তা হাস্যকর। কোটা সংস্কার নিয়ে তিনি এখন আদালতের দোহাই দিচ্ছেন। অথচ আইনসিদ্ধ ও আদালতের নির্দেশনা থাকলেও তত্ত্ববধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচনের জনদাবি তিনি গ্রাহ্য করছেন না। আসলে তিনি বরাবরই আদালতকে নিজের সুবিধামত ব্যবহার করছেন। ছাত্রসমাজের ন্যায় ও যুক্তি সংগত আন্দোলনকে তিনি থাকা এবং খাওয়ার খোটা দিয়ে তিরস্কারের মাধ্যমে আড়াল করতে চাইছেন। তিনি শান্তিপূর্ণ আন্দোলকারীদের নিয়ে তিনি বিষেদগার করলেও যারা আন্দোলনকারীদের নৃশংস কায়দায় হাতুড়ি পেটা, লাঠি পেটা করেছে, প্রকাশ্য ছাত্রীর শ্লীলতাহানী করেছে তাদেরকে নিয়ে সামান্য কথাও বলেননি। আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেননি এমনকি দেখতেও যাননি। এতে করে প্রধানমন্ত্রী কারো প্রতি বিরাগবাজন না হওয়ার যে শপথ নিয়েছিলেন তা ভঙ্গ করেছেন। অন্যদিকে তার আদালতের দোহাই বিশিষ্ট আইনজীবীরা প্রত্যাখ্যান করেছেন। সংসদের দাঁড়িয়ে ওয়াদা করার পর ৩ মাসের মাথায় সেই ওয়াদা ভঙ্গ বাংলাদেশের সংসদীয় রাজনীতির ইতিহাসে নজিরবিহীন। দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে এমন প্রতারণা আশা করেনি ছাত্রসমাজ। এ ঘৃন্য প্রতারণা জাতির জন্যও চরম লজ্জাজনক। ছাত্রসমাজ এ প্রতারণা মেনে নেবে না।

তিনি বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের প্রতিটি দাবী যৌক্তিক। এই অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক অনৈতিক প্রক্রিয়া লাখো মেধাবীকে দেশ গড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করছেই না বরং মেধাবীদের মূল্যহীন করে তুলছে। স্বাধীনতার পর থেকে বৈষম্যমূলক কোটা ব্যবস্থার মাধ্যমে মেধাবীদের সকল ক্ষেত্রে বঞ্চিত করা হচ্ছে। দেশে যেখানে লাখ লাখ শিক্ষিত যুবক চাকরির অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছে কোটা পদ্ধতির কারণে। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর এমন বিশ্বাসঘাতকতা বুমেরাং হতে পারে। ছাত্রসমাজ কোনভাবেই এ প্রতারণা মেনে নিবে না। অবিলম্বে কোটা পদ্ধতির যৌক্তিক সংস্কার ও তার বাস্তবায়ন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারী পুলিশ ও ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্ত মূলক বিচার করতে হবে। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরিয়ে নিতে হবে। অন্যথায় লাখো শিক্ষার্থীকে বঞ্চিত করার জন্য প্রতারণা বাস্তবায়ন অব্যাহত থাকলে শিক্ষার পরিবেশ বিঘিœত হলে তার দায় সরকারকেই নিতে হবে।

তিনি থানা দায়িত্বশীলদের উদ্দেশ্যে বলেন, থানা পর্যায় থেকে শুরু করে একেবারে তৃণমূলে সংগঠনকে মজবুত রাখতে আপনাদের ভূমিকা পালন করতে হবে। সংগঠনের সকল দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে। পাশাপাশি ছাত্রসমাজের অধিকার আদায়, বঞ্চিত ছাত্রদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের মৌলিক দায়িত্ব। সামনের দিনে যে পরিস্থিতিই আসুক না কেন, সেই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ছাত্রজনতাকে সাথে নিয়ে প্রস্তুত থাকতে হবে। ইসলাম ও দেশের স্বাধীনতা-স্বার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়