শিরোনাম
◈ অবশেষে মার্কিন সিনেটে সাড়ে ৯ হাজার কোটি ডলারের সহায়তা প্যাকেজ পাস ◈ কক্সবাজারে ঈদ স্পেশাল ট্রেন লাইনচ্যুত, রেল চলাচল বন্ধ ◈ ইউক্রেনকে এবার ব্রিটেননের ৬১৭ মিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা ◈ থাইল্যান্ডের উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ◈ জিবুতি উপকূলে অভিবাসীবাহী নৌকাডুবিতে ৩৩ জনের মৃত্যু ◈ লোডশেডিং ১০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে, চাপ পড়ছে গ্রামে ◈ এফডিসিতে মারামারির ঘটনায় ডিপজল-মিশার দুঃখ প্রকাশ ◈ প্রথম ৯ মাসে রাজস্ব আয়ে ১৫.২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন ◈ প্রথম ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাত চেয়ারম্যানসহ ২৬ জন নির্বাচিত ◈ বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগ আহ্বান রাষ্ট্রপতির

প্রকাশিত : ০১ জুলাই, ২০১৮, ১২:৪৩ দুপুর
আপডেট : ০১ জুলাই, ২০১৮, ১২:৪৩ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

২২ জনকে অভিযুক্ত করে চুড়ান্ত হয়েছে চার্জশিট

ইসমাঈল হুসাইন ইমু : বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলার ঘটনার ২ বছর পূর্তি আজ। আলোচিত এ মামলার চার্জশিট প্রস্তুত হয়েছে। কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষে চলতি সপ্তাহেই চার্জশিট আদালত দাখিল করার কথা রয়েছে। ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া এমনটাই জানিয়েছেন।

কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের উপ-কমিশনার মহিবুল ইসলাম বলেন, তদন্ত শেষ পর্যায়ে। খুব দ্রুততম সময়ে এই মামলার চার্জশিট দেয়া হবে। চার্জশিটে প্রতক্ষ্য ও পরোক্ষভাবে জড়িত মোট ২২ জনকে আসামী করা হয়েছে। এরমধ্যে অংশগ্রহণকারী ৫ জঙ্গিসহ ১৩ জন নিহত হয়েছে। বাকি নয় জনের মধ্যে সাতজন কারাগারে ও দুইজন পলাতক রয়েছে। কারাগারে থাকা সাত আসামি হলো- রাজীব গান্ধী, মিজানুর রহমান ওরফে ছোট মিজান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাতকাটা সোহেল মাহফুজ, হাদিসুর রহমান সাগর, রাশেদ ইসলাম ওরফে আবু জাররা ওরফে র‌্যাশ ও আবদুস সামাদ ওরফে মামু। পলাতক দুই আসামি হচ্ছে শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন । চার্জশিটে আন্তর্জাতিক কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর প্রমাণ মেলেনি উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এটা একটা ‘হোমগ্রোন’। হামলাকারীরা দেশীয় জঙ্গিগোষ্ঠী। এর প্রধান বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম আহমেদ চৌধুরী।

নিহত ১৩ জনের মধ্যে হলি আর্টিজানে হামলায় অংশ নেয়া পাঁচ জঙ্গি ঘটনাস্থলে আর্মি প্যারাকমান্ডো অভিযানে নিহত হয় এরা হচ্ছে রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, মীর সামেহ মোবাশ্বের, নিবরাস ইসলাম, বগুড়ার শফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল ও খায়রুল ইসলাম ওরফে পায়েল। এ ছাড়া পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন অভিযানে আরও ৮ জন নিহত হয়। এরা হলো- তামীম চৌধুরী, নুরুল ইসলাম মারজান, তানভীর কাদেরী, মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম ওরফে মুরাদ, রায়হান কবির তারেক, সারোয়ান জাহান মানিক, বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট ও মিজানুর রহমান ওরফে ছোট মিজান। তবে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক হাসনাত করিমকে মামলার চার্জশিটে আসামি করা হবে কি না- সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কানাডা প্রবাসী তাহমিদ হাসিব খানকে জিজ্ঞাসাবাদে তার কোন সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় নি। ফলে তার নামও চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয় নি। চার্জশিটে হলি আর্টিজানে হামলার মাস্টারমাইন্ড হিসেবে তামিম আহমেদ চৌধুরী, অর্থ জোগানদাতা হিসেবে ব্যাংকার তানভির কাদেরী, অপারেশনাল কমান্ডার হিসেবে নুরুল ইসলাম মারজান সমন্বয়ক হিসেবে রাজীব গান্ধি ওরফে রিগ্যান ও প্রশিক্ষক হিসেবে মেজর জাহিদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। গাইবান্ধার নিভৃত চরে প্রশিক্ষন ও চাপাই নবাবগঞ্জ ও যশোরের সীমান্ত দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র বিস্ফোরক আনা হয়েছে বলেও চার্জশিটে উল্লেখ থাকছে।

ঘটনার দুই মাস পর ২৭ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় তামিম চৌধুরী, মারজান ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি রাজধানীর মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ, মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম ওরফে মুরাদ জাহিদ গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর রূপনগরে এবং রায়হান ২৬ জুলাই কল্যাণপুরে এবং ২০১৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর আজিমপুরে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। সারোয়ার জাহান ২০১৬ সালের ৮ অক্টোবর আশুলিয়ায় র‌্যাবের অভিযানে নিহত হয়।

মামলায় আলামত হিসাবে জব্দ দেখানো হয়েছে, ১ টি সাদা কাপড়ের রুমাল, ৫টি নাইন এমএম পিস্তল, তিনটি একে ২২ মেশিনগান, ১৩ টি ম্যাগাজিন, নাইন এমএম ক্যালিবারের ৬ টি তাজা গুলি, সেভেন পয়েন্ট সিক্সফাইভ ক্যালিবারের ২৮ টি গুলি, একে-২২ এর ৩৫ টি গুলি, পয়েন্ট টুটু বোরের ৪৪ টি গুলি, ৬ পয়েন্ট ১৬ ক্যালিবারের ১২টি গুলি, সেভেন পয়েন্ট সিক্সটু ক্যালিবারের দুইটি গুলি, একই ক্যালিবারের ১৯৫ টি গুলির খোসা, নাইন এমএম ক্যালিবারের গুলির ১০৫ টি খোসা, নয়টি গ্রেনেড সেফটি পিন, দুটি ছোরা, একটি চাপাতি ও একটি চাকু।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশান ২ নম্বর সার্কেলের ৭৯ নম্বর সড়কে হলি আর্টিজান রেস্তরায় হামলা চালিয়েছিল পাঁচ জঙ্গি। তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিরোধ গড়তে গিয়ে নিহত হন ডিবির সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ওসি সালাউদ্দিন। জঙ্গিদের হামলায় ইতালির ৯ নাগরিক, জাপানের ৭ নাগরিক, ভারতের ১ জন এবং বাংলাদেশের ৩ নাগরিককে হত্যা করে। পরদিন সকালে সেনবাহিনীর প্যারাকমান্ডো অভিযানে নিহত হয় পাঁচ জঙ্গিসহ ছয়জন। অভিযানে এক জাপানি ও দুজন শ্রীলঙ্কানসহ ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় ৪ জুলাই গুলশান থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে পুলিশ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়